সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিয়া)

Barisalpedia থেকে

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রথমে শিক্ষা ও পরে শ্রমমন্ত্রী। পিতা: সৈয়দ মোতাহার হোসেন। জন্ম: ১ অক্টোবর ১৯১২ সাল। গ্রাম: চাখার, থানা: বানারী পাড়া, জেলা: বরিশাল।

শিক্ষাজীবন

কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিয়া) ১৯৩২ সালে স্নাতক এবং কলকাতা আইন মহাবিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রী লাভ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই জনাব নান্না মিঞা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক সাহেবের সান্নিধ্য লাভ করেন এবং তাঁর সাথে সাথে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিচরণ করেন। কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকাকালীন নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্র সমিতির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম এবং উক্ত ছাত্র সমিতির কলেজ শাখার তিনি সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও ছাত্র সংসদের কেবিনেট মেম্বার এবং ক্রীড়া সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনীতি ও কর্মজীবন

১৯৩০ সালে শেরে বাংলা নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি প্রতিষ্ঠা করলে তিনি আজিজুল হন (নান্না মিয়া) সহ-সম্পাদক নিযুক্ত হন। তখন সভাপতি ছিলেন স্যার আব্দুর রহিম এবং সম্পাদক ছিলেন মাওলানা আকরাম খা। ১৯৩৫ সালে ঢাকায় প্রজা সমিতির বিরাট সম্মেলনে নাম বদল করে নিখিল বঙ্গ কৃষক প্রজা সমিতি করা হয় এবং শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখনও আজিজুল হন (নান্না মিয়া) যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ঐ সমিতি কৃষক প্রজা পার্টি নামে প্রকাশ পায়। ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয় এবং ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিঞা) যুক্ত ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ঝালকাঠি-উজিরপুর এলাকার এম. এল. এ. নির্বাচিত হয়ে প্রথমে শিক্ষা, পরে শ্রম, ও শেষ পর্যায়ে রাজস্ব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে তিনি বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ১লা বৈশাখ, ২১শে ফেব্রুয়ারী, ১লা মহররম সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিন সমস্ত প্রতিষ্ঠান ছুটি রাখার ব্যবস্থা করেন। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে তিনি বাবুগঞ্জ-উজিরপুর আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন।

আইয়ুবের সামরিক আইন ভংগ করে যে ৯ নেতা বিবৃতি প্রদান করেন সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিঞা) তার মধ্যে অন্যতম। সর্ব জনাব নুরুল আমিন, আতাউর রহমান, আবু হোসেন সরকার, সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিয়া), হামিদুল হক চৌধুরী, পীর দুদু মিঞা, মোহন মিঞা, শেখ মুজিবুর রহমান, মাহমুদ আলী- এই নয় জনের বিবৃতিকে নয় নেতার বিবৃতি বলা হয়।

আজিজুল হন (নান্না মিয়া) আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম-এর সভাপতি ছিলেন। বালকদের ও বালিকাদের দুটি এতিম খানার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। রহমতে আলম ইসলামিক মিশন, ঢাকা-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এবংবিধ অনেক প্রতিষ্ঠানের তিনি প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন।

মৃত্যু

তিনি ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি দু’পত্র, ৩ কন্যা ও স্ত্রী রেখে যান।


তথ্যসূত্র: তথ্যসূত্র: রুসেলি রহমান চৌধুরী। বরিশালের প্রয়াত গুণীজন। ইউনিভার্সিটি বুক পাবলিশার্স, ঢাকা। ২০০৬।