সুকুমার দত্ত

Barisalpedia থেকে

সুকুমার দত্ত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও দিল্লি¬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি ১৮৯১ তারিখে বাটাজোরের দত্ত পরিবারে। তাঁর পিতা কামিনীকুমার দত্ত ছিলেন অশ্বিনীকুমার দত্তের ছোট ভাই। তাঁর মৃত্যু ৯ এপ্রিল ১৯৭০ তারিখে।

শিক্ষা ও গবেষণা

বড় কাকা অশ্বিনীকুমার দত্ত কর্তৃক স্থাপিত ব্রজমোহন স্কুলে শিক্ষালাভের পর কলকাতার স্কটিশ চার্চ ও প্রেসিডেন্সি কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স নিয়ে সুকুমার দত্ত পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম.এ. পরীক্ষায় স্বর্ণপদক লাভ করেন এবং এখান থেকেই পিএইচ.ডি. ডিগ্রি ও প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি পান। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ইংরেজি রোমান্টিক কবিতায় ‘সুপারন্যাচারালিজম’-এর প্রভাব। এ ছাড়া বৌদ্ধ ধর্মের সাংগঠনিক শক্তির ভূমিকা সর্ম্পকেও তাঁর যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। প্রাচীন নথিপত্র গবেষণার প্রয়োজন সংস্কৃত ও পালি ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন এবং চব্বিশ বছর বয়সে তাঁর লেখা প্রথম গ্রন্থ ‘আর্লি বুদ্ধিস্ট মনাস্টিসিজম’ পৃথিবীর বহু বিদ্যালয়ে বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ কোর্সের পাঠ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

কর্মজীবন

কর্মজীবনে তিনি কলকাতা রিপন কলেজে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লি¬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অধ্যাপনা করেছেন। এক সময় তিনি দিলি¬র রামযশ কলেজের অধ্যক্ষের পদে নিযুক্ত ছিলেন। ইউ.জি.সি এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস-এর ফেলোশিপ নিয়ে গবেষণার প্রয়োজনে স্বদেশের বিভিন্ন জায়গায় ও ব্রহ্মদেশ, থাইল্যান্ড, জাপান প্রভৃতি দেশে তিনি পরিভ্রমণ করেছেন। ইটালির বিশ্ববিখ্যাত পন্ডিত প্রফেসর তুচির আমন্ত্রণে ইটালির নানা স্থানে বৌদ্ধ বিষয়ক তথ্যসংগ্রহের উদ্দেশ্যে তিনি ভ্রমণ করেন।

গ্রন্থাবলি

তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থ ‘প্রবলেমস অফ ইন্ডিয়ান ন্যাশনালিটি’, ‘বুদ্ধিজম ইন ইস্ট এশিয়া: অ্যান আউটলাইন অফ বুদ্ধিজম ইন দি হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার অফ পিপলস অফ ইস্ট এশিয়া’, ‘বুদ্ধিস্ট মঙ্কস অ্যান্ড মনাসটারিজ ইন ইন্ডিয়া’, ‘হাইলাইটস অফ অ্যাডভেঞ্চার অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজ’, ‘ বুদ্ধ অ্যান্ড ফাইভ আফটার সেঞ্চুরি’, ‘আওয়ার কান্ট্রি’, ‘মহাপরিনির্বাণের কথা’ (পালি ভাষায় রচিত ধর্মীয় পাঠ্যপুস্তকের বাংলা অনুবাদ) প্রভৃতি। ‘সপ্তপুরা’ পালি ভাষা থেকে বাংলায় তাঁর অনূদিত সাতটি গল্পের সংকলন। এছাড়াও তাঁর আরও কিছু অনুবাদকর্ম রয়েছে।

তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী দত্ত বানারীপাড়ার মেয়ে ছিলেন এবং তিনি ভারতীয় পঞ্জিকার প্রথম ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান