সনাতন গোস্বামী

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১২:৫২, ২০ জুলাই ২০১৭ পর্যন্ত সংস্করণে ("সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় কয়েক..." দিয়ে পাতা তৈরি)

সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় কয়েকজন প্রতিভাশালী পন্ডিতকে তার সভায় উচ্চপদ প্রদান করেন। এ পন্ডিতদের মধ্যে চন্দ্রদ্বীপ-বাকলার রূপ গোস্বামী ও সনাতন গোস্বামী অন্যতম ছিলেন।


পূর্ব পুরুষ

সনাতন গোস্বামীর পূর্ব পুরুষ জগতগুরু কর্ণাট প্রদেশের ভরদ্বাজ গোত্রীয় এক ব্রাহ্মণ রাজা ছিলেন। এই রাজার এক অধস্তন পুরুষ কুমারদেব পীরালিদের ভয়ে নৈহাটী ছেড়ে দনুজমর্দন প্রতিষ্ঠিত চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যে চলে আসেন । আনুমানিক ১৪৬০ খ্রিঃ কুমারদেব বাকলায় বসতি স্টথাপন করেন। চন্দ্রদ্বীপ রাজা তাকে ভূমি প্রদান করেন।

জন্ম ও শিক্ষা

বাকলায় কুমার দেবের অমর, সন্তোষ ও বল্লভ নামে তিন পুত্র জন্মগ্রহণ করে। শ্রী চৈতন্যদেব তাদের তিন ভাইয়ের নাম পরিবর্তন করে যথাক্রমে শ্রীসনাতন, শ্রীরূপ ও শ্রীঅনুপম রেখেছিলেন এবং সে নামেই আজও তারা পরিচিত। শ্রীসনাতন বাকলায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে গৌড়ের রামকেলিতে চলে যান। মুকুন্দ দেবের মৃত্যুর পর তিন ভ্রাতা সুলতানদের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন। আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকালে তারা পদোন্নতি লাভ করেন। সনাতন দবিরখাস অর্থৎ প্রধান সচিব পদে বৃত হন।


ধর্ম ও দীক্ষা

১৫১৩ খ্রিঃ গৌড়ে শ্রীচৈতন্য দেবের সাথে রূপ ও সনাতনের সাক্ষাৎ হয়। ১৫১৪ সালে সনাতন এবং ১৫১৫ খ্রিঃ রূপ রাজসভা ত্যাগ করে শ্রীচৈতন্যের নিকট চলে যায়। চৈতন্যের দর্শন লাভের পর সনাতন যখন রাজসভা পরিত্যাগ করতে চাইলেন তখন সুলতান হোসেন শাহ তাকে তিরস্কার করলেন।

রূপ ও সনাতনের শাস্ত্রজ্ঞান ছিল অপরিসীম। উভয় ভ্রাতা ৪০ বছরের বেশি মথুরা, বৃন্দাবন ও কাশীধামে ধর্ম সাধনা ও শাস্ত্র চর্চায় অতিবাহিত করেন। তারা যেমন পন্ডিত তেমনি সর্বত্যাগী বৈষ্ণব ভক্ত সন্যাসী ছিলেন। তারা কাশীধামে শ্রীচৈতন্যদেবের কৃপা লাভ করেন। জ্ঞান ও ভক্তির অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল রুপ-সনাতনের ভক্তি গ্রন্থ রচনায়। বৃন্দাবনের আচার্য পদে রূপ ও সনাতকে বরণ করা হয়েছিল।


গ্রন্থ রচনা

সনাতন শেষ জীবনে বৈষ্ণব তোষণী নামে এক বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন। তাদের ভ্রাতুপুষ্প শ্রীজবি গোস্বামী তাদের নির্দেশে ঐ গ্রন্থের সংক্ষেপ করে নামকরণ করেন ‘লঘু তোষণী’ । লঘু তোষণী হতে রূপ ও সনাতনের বংশ পরিচয় পাওয়া যায়। তারা বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের গৌরব।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০