রফিকুল ইসলাম, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও অধ্যাপক

Barisalpedia থেকে

শহীদ বুদ্ধিজীবী ও অধ্যাপক। পিতা: আব্দুল ওয়াজেদ মিয়া। জন্ম: ১৯৩৬। মৃত্যু: ২৯ জুলাই ১৯৭১। গ্রাম- শ্রীরামপুর, থানা- দুমকি, জেলা- পটুয়াখালী।

লেখাপড়া

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ১৯৫১ সালে মেট্রিক পাশ করে ঢাকা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। এ সময়ে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার কারণে টেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউটে লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে তিনি বরিশাল চলে আসেন এবং বি এম কলেজে আই.এ.-তে ভর্তি হন। কিন্তু বি এম কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ব্রিটিশ নাগরিক ম্যাক ইনার্নির গৃহীত কিছু চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী রফিকুল ইসলাম সহ আরো কয়েকজন ছাত্র প্রতিবাদ ও আন্দোলন করলে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম সহ পাঁচজন ছাত্রকে কলেজ থেকে বহিস্কার করেন। ফলে তার পড়াশুনা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর ১৯৬৩-তে বি এম কলেজ থেকেই আইএ ১৯৬৫-তে বিএ এবং ১৯৬৭-তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ পাশ করেন।

কর্মজীবন

বিএম কলেজে ছাত্রাবস্থায়ই ১৯৬৪-তে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে সংবাদদাতার চাকুরী নেন। ১৯৬৮ সালে বরিশাল ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। ১৯৬৯-এ তিনি দর্শনা কলেজে বাংলা সাহিত্যে অধ্যাপনা শুরু করেন। কলেজ জীবনে তিনি বরিশাল সাহিত্য পরিষদ ইত্যাদি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং বরিশাল প্রেস ক্লাব-এর সদস্য ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ইকবাল হল (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছাত্র সংসদের নাট্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২-র গণ আন্দোলন এবং ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।

মৃত্যু

১৯৭১-এর ২৯ শে জুলাই পাকবাহিনী রফিকুল ইসলামের বড় ভাইকে রফিক মনে করে দর্শনায় তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তারা ভুল বুঝতে পেরে তাকে ছেড়ে দিয়ে আবারও ঐ বাসায় হানা দিতে যায়। পথিমধ্যে রফিকুল ইসলামকে পেয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁর আত্মীয় স্বজনরা পরে জেনেছিল ঐ দিন বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে পাক বর্বর হানাদাররা রফিকুলকে হত্যা করেছিল। শহীদ বুদ্ধিজীবী রফিকুল ইসলামের নামে দু’টাকা মূল্যের একটি স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশিত হয়।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫। ২। রুসেলি রহমান চৌধুরী। বরিশালের প্রয়াত গুণীজন। ইউনিভার্সিটি বুক পাবলিশার্স, ঢাকা। ২০০৬।