"মুগা খান মসজিদ, চরামদ্দি, বাকেরগঞ্জ"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
("মুগা খান মসজিদ বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি গ্রামে অবস্থি..." দিয়ে পাতা তৈরি)
(কোন পার্থক্য নেই)

০৯:৪১, ২৪ জুন ২০২৩ তারিখের সংস্করণ

মুগা খান মসজিদ বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি গ্রামে অবস্থিত একটি সুদৃশ্য ঐতিহাসিক মসজিদ। এই মসজিদ প্রতিষ্ঠার সাথে বরিশালের বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ইসমাইল চৌধুরীর পরিবারের আদি পুরুষ মুগা খানের নামটি সম্পৃক্ত।

সুগন্ধিয়ার সর্দারদের পূর্ব পুরুষ শ্রাবণ ঠাকুরের পুত্র মুসলমান হয়ে আহম্মদ নাম ধারণ করেন এবং তাঁর কর্তৃক পত্তন গড়া এই গ্রামের নাম হয় চর আহম্মদিয়া, যা বিকৃত হয়ে পরবর্তীতে চরামদ্দি নামের উদ্ভব হয়েছে। তার অধস্তন কারো নিকট থেকে এই তালুক ইঙ্গা খান ও মুঙ্গা খান নামে দুই ভাই ক্রয় করে নেন। তাদের নাম কোথাও ইঙ্গা খান ও মুঙ্গা খান লিখিত আছে, আবার কোথাও আগা খান ও মুগা খান লিখিত আছে। ইঙ্গা ও মুঙ্গা যে দুটি উচ্চারণ-বিকৃত নাম তা সহজেই অনুমেয়, কেননা মুসলমান নাম হিসেবে আরবি বা ফারসি ভাষার কোনো শব্দ এর সাযুজ্য বহন করে না। তাই বর্তমানে মুগা খান নামটিই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। মুগা খানের পরিবার আদিতে উড়িষ্যার কটক থেকে আগত হলেও তারা দুই ভাই চরামদ্দিতে তালুক ক্রয়ের আগে ফরিদপুরে রবিপুর নামক স্থানে বসবাস করছিলেন। পরে তারা ঝালকাঠিতে ব্যবসা উপলক্ষ্যে স্থিত হওয়ার পরে চরামদ্দিতে তালুক ক্রয় করেন। এই তালুক ক্রয়ের পরে তাদের বিত্তবিভবের উন্নতি হতে থাকে। মুগা খানের পুত্র আবদুর রশিদ খান ও পৌত্র আরমান খানের হাতে এই জমিদারির আরো প্রসার ঘটে। আরমান খান তাঁর পিতামহ মুগা খানের নামে ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট। চার কোণে চারটি মিনার সদৃশ স্বল্প উচ্চতার স্তম্ভ রয়েছে। মসজিদের দেয়াল চার ফুট পরিমাণ পুরু। পূর্ব পাশে তিনটি দরজা রয়েছে।

আরমান খানের পুত্র আসমত আলী খানের সময় থেকে এই পরিবার বরিশালে বসবাস শুরু করায় তাঁরা এ অঞ্চলে আর কোনো স্থাপনা বা উন্নয়ন কাজে উদ্যোগী হওয়া থেকে বিরত থাকায় এর পর থেকে এই পরিবারের এ জাতীয় উদ্যোগের বাস্তবায়ন ঘটেছে বেশিরভাগ বরিশাল শহরে। তবে ১৯২৪ সালে আসমত আলী খানের স্ত্রী ওয়াজেদুন্নেসার নামে এখানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। আর অধুনা ১৯৯২ সালে চৌধুরীদের ছেড়ে যাওয়া বাড়িতে ফখরুন্নেসা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শোনা গেছে ফখরুন্নেসা ছিলেন ইসমাইল চৌধুরীর বোন।

মুগা খান মসজিদটির সম্প্রসারণ এবং সংস্কারও হয়েছে অতি সম্প্রতি। ২০১৭ সালে শুরু হয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এর সম্প্রসারণ ও সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। সাথে একটি হেফজ মাদ্রাসা ও একটি কওমি মাদ্রাসা রয়েছে।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দিন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস। প্রথম খন্ড। ভাস্কর প্রকাশনী, ২০১০। ২। স্থানীয় মুরুব্বিদের সাক্ষাৎকার।