মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন

Barisalpedia থেকে

বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ১৯৪৯ সালের ৮ মার্চ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার এবং মাতার নাম সামিয়া খাতুন। তার বয়স যখন তিন বছর তখন তার মামা ফজলুর রহমান লেখাপড়ার জন্য নিজ বাড়ি মুলাদী থানার পাতারচরে তাকে নিয়ে যান। ১৯৫৩ সালে জাহাঙ্গীর পাতারচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি মুলাদী মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ১৯৬৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৫ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে তিনি আইএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টাটিকসিকসে অনার্সে ভর্তি হন। তিনি বিমান বাহিনীতে যোগদানো চেষ্টা করেন। কিন্তু চোখের কারণে ভর্তি হতে পারেননি। ১৯৬৭ সালে ১৫ তম শর্ট সার্ভিস কোর্সে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালের ২ জুন তিনি কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৭০ সালের ৩০ আগস্ট তিনি ক্যাপটেন হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭১ সালের ১৭ জুন তিনি সেনাবাহিনী থেকে পলায়ন করেন। ১৯৭১ সালের ৩ জুলাই শিয়ালকোট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসেন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে ৭ নম্বর সেক্টরে মোহিষপুর সাবসেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। ৭ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন কর্নেল নুরুজ্জামান। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ পরিচানা করছেন। শত্রুর মেশিনগান ধ্বংস করার পর কপালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ১৫ ডিসেম্বর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর তাকে শিবগঞ্জ থানার সোনা মসজিদের পাশে দাফন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব প্রদান করা হয়। তার স্মরণে রহিমগঞ্জ স্মৃতিসৌধ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। সরকার আগরপুর ইউনিয়নের নাম করেছে জাহাঙ্গীরনগর।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫