দিগ্বিজয় ভট্টাচার্য

Barisalpedia থেকে

উজিরপুরের সিদ্ধবংশের প্রসিদ্ধ পণ্ডিত দিগ্বিজয় ভট্টাচার্য ঐতিহাসিকভাবে সুবিদিত। নোয়াখালীতে তাঁদেরআদিম বাসস্থান ছিল। এই বংশের পূর্বপুরুষ ঠাকুরদাস মাধবপাশার রাজাদের গুরু ছিলেন। সাধক প্রবর দিগ্বিজয় ভট্টাচার্য এই ঠাকুরদাসের পাঁচপুরুষ অধস্তন।

তিনি বাল্যকালে খুব তীক্ষ্ণবুদ্ধি ছিলেন না; তাই রাজগুরু হবার অনুপযুক্ত বলে একদিন তার পিতামাতা তাঁকে অত্যন্ত ভর্ৎসনা করলেন। ক্ষোভে ও অভিমানে দিগি¦জয় একাকী কাশীধামে চলে গেলেন এবং স্বীয় অসাধারণ অধ্যবসায়বলে গভীর সাধনায় জগদম্বা কালিকার সিদ্ধিলাভ করেন। সিদ্ধ হয়ে তিনি জগদম্বার যে স্তব করেছিলেন তা আজও লিপিবদ্ধ আছে। তারপর সিদ্ধপুরুষ দিগ্বিজয় দেশে ফিরে সর্বত্র স্বীয় প্রাধান্য স্থাপন করলেন। তাঁর অলৌকিক শক্তিজ্ঞাপনের দুই একটি ঘটনা এখনো এদেশে প্রচলিত আছে। শীঘ্রই তাঁর যশোরাশি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল। রহমতপুর ও উজিরপুরের জমিদারগণ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন। তাঁর শাস্ত্রে সেরূপ জ্ঞান না থাকলেও গভীর জ্ঞান তাঁর আয়ত্ত হইল, এবং অচিরে সর্বত্রই দিগ্বিজয় পণ্ডিত হয়ে উঠলেন। দিগ্বিজয়ের দুই বিবাহ। দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ করার সময়ে উজিরপুরের জমিদার শিষ্য রতেœশ্বর রায় উজিরপুরে গুরুদেেবর জন্য বাড়ি প্রস্তুত করে, তাঁর ও তাঁর সন্তানসন্তুতির বাসোপযোগী সকলপ্রকার বন্দোবস্ত করে দিলেন। নোয়াখালী হতে এসে দিগ্বিজয় জীবনের অবশিষ্ট অংশ উজিরপুরে অতিবাহিত করেন। দিগ্বিজয় ভট্টাচার্যের পৌত্র সৃষ্টিবিজয় তর্কবাগীশ শাস্ত্রচর্চা ও সাধনায় সমভাবে কৃতবিদ্য ছিলেন।


তথ্যসূত্র: সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।