তুষখালী খাদ্যগুদাম দখল যুদ্ধ, পিরোজপুর, ১৯৭১

Barisalpedia থেকে

সুন্দরবনে মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্যের অভাব ছিল। মঠবাড়িয়া থানার তুষখালী সরকারি খাদ্য গুদামে ৬ হজার মণ খাদ্য মজুদ আছে। ক্যাপ্টেন জিয়াউদ্দিন ও সহযোদ্ধারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, তুষখালী খাদ্য গুদাম আক্রমণ করে মজুদ খাদ্য নিয়ে আসতে হবে। গুদামের পাহারায় ছিল রাজাকার বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারা তুষখালী ও মঠবাড়িয়া আক্রমণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। জিয়াউদ্দিন, শামসুল আলম তালুকদার, শহিদুল আলম বাদল, আসাদ, হেলাল, আলী, আলতাফ প্রমখ সিনিয়র কমান্ডার এ আক্রমণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। কমান্ডারদের অনুরোধে ক্যাপ্টেন জিয়া আক্রমণের নেতৃত্ব থেকে বিরত থাকেন। সহঅধিনায়ক শামসুল আলম তালুকদারের নেতৃত্বে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। শহীদুল আলম বাদল, আলতাফ, সুবেদার গাফফার প্রমুখকে মঠবাড়িয়া থানা আক্রমণের দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল থানার পুলিশ নিষ্ক্রিয় করে রাখা। ফলে তুষখালীতে থানার পুলিশ যেতে পারেনি। তুষখালীতে সশস্ত্র রাজাকার ছিল ৩শ’, মুক্তিযোদ্ধা ছিল ৮শ’। চারদিক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা রাত ৩টায় আক্রমণ করে প্রচন্ড গুলিবর্ষণের পর ফায়ার বন্ধ করে শামসুল আলম ও আসাদ মেগাফোনে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। সাথে সাথে রাজাকার বাহিনী অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। ভোরে কয়েক মিনিটের মধ্যে তুষখালী দখলে আসে। গ্রামবাসীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানায়। গুদামের খাদ্য তারা নিজেরা ট্রলার ও নৌকায় তুলে দেয়। শহীদুল আলম বাদল মঠবাড়িয়া ও তুষখালীর মাঝে অবস্থান করছিলেন। তার সাথে রাজাকারদের যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর একজন সদস্য শহীদ হন।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।