জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, ড.

Barisalpedia থেকে

পূর্ণ নাম ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ। জন্ম ১০ জুলাই ১৯২০। মৃত্যু ৩০ মার্চ ১৯৭১। পৈতৃক নিবাস বানারীপাড়া, বরিশাল। পিতা কুমুদরঞ্জন গুহঠাকুরতা। মাতা সুমতি গুহঠাকুরতা। পিতামাতা উভয় শিক্ষক ছিলেন।

জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা.jpg

শিক্ষাজীবন

ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্্িরক ১৯৩৬ সালে। কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে থেকে আই,এসসিতে ভর্ হন এবং ১৯৩৭ পর্ন্ত ১ বছর অধ্যয়ন করেন। তবে পরে আবার আনন্দমোহন কলেজে ভর্ হন এবং ১৯৩৯ সালে আনন্দমোহন কলেজ থেকে আই্এ পাশ করেন। ১৯৪২ খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এ. পাশ করেন। এই পরীক্ষায় দর্শনশাস্ত্রে রেকর্ড নম্বর পাওয়ার জন্য ‘পোপস মেমোরিয়েল গোল্ড মেডাল’ প্রাপ্ত হন। ১৯৪৩খ্রি. এম.এ. পরীক্ষায়ও প্রথম স্থান অধিকার করেন। বৃটিশ কাউন্সিলের বৃত্তি নিয়ে ১৯৬৭ সালের ৯ জানুয়ারি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে পিএইচ.ডি. লাভ করেন।

কর্মজীবন ও পারিবারিক জীবন

কর্মজীবনে তিনি ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ, গুরুদয়াল কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি লেকচারার হিসাবে কাজ করেন। ১৮ বছর লেকচারার থাকার পর লন্ডন থেকে পিএইচ. ডি ডিগ্রী নিয়ে দেশে ফিরে ১৯৬৭ সনের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে রীডার নিযুক্ত হন। নিবন্ধকার হিসাবেও খ্যাতিমান হয়েছিলেন। সমন্বয়বাদে বিশ্বাসী ছিলেন। দেশবিভাগেরর পর পূর্ব-পাকিস্তানে থেকে যান। তিনি বলতেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রে শুধু হিন্দুরাই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক নয়, পূর্ব-পাকিস্তানের মুসলমানেরাও তাই। তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল বাসন্তী গুহঠাকুরতা। তিনি গেন্ডারিয়ায় মনিজা রহমান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তাঁর কন্যার নাম মেঘনা গুহঠাকুরতা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের িঅধ্যাপক। জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ১৯৫৮ সনের অক্টোবর থেকে ১৯৬৩ সনের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে আবাসিক শিক্ষক ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সনের ২০ শে এপ্রিল ঐ হলে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। তিনি একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ২৬ শে মার্চ জগন্নাথ হলের প্রভোষ্ট থাকাকালে হল সংলগ্ন তাঁর বাসভবনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে আহত হন এবং ৩০শে মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ জ্যোতির্ম গুহঠাকুরতার সম্ভবনাময় কর্মজীবন এভাবেই শেষ হয়।



তথ্যসূত্র: ১. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ২. রফিকুল ইসলাম। বরিশাল দর্পণ। ঢাকা, ১৯৯০।