জন গেরী

Barisalpedia থেকে

জন গেরী ছিলেন সপ্তদশ শতকের চন্দ্রদ্বীপের রাজা রামচন্দ্রের একজন পর্তুগিজ সেনাপতি।

রামচন্দ্রের দুই দল পর্তুগীজ সৈন্য ছিল। পর্তুগীজরা কামান ,বন্দুক ও গোলাবারুদ তৈরি করতে জানত বলে তখনকার রাজারা পর্তুগিজ সৈন্য ও সেনাপতি রাখতে আগ্রহী ছিলেন। রামচন্দ্রের সেনাপতি জন গেরির অধীনে দেশী ও পর্তুগীজ মিলে ১০ হাজার সৈন্য ছিল। জন ফার্নান্ডেজ নামে তার আর একজন ওলন্দাজ সেনাপতি ছিল। তার সেনাপতি মদন সিংহের তত্ত্বাবধানে দেশীয় কর্মকাররাও কামান, বন্দুক ও গোলাবারুদ তৈরি করত। নারায়ণপুর, হলুদপুর, গুঠিয়া, নথুল্লাবাদ, শায়েস্তাবাদ, কাগাশুরা, কালিজীরা ও ক্ষুদ্রকাঠিতে রাজার সেনানিবাস ছিল।

জন গেরী ভুলুয়ার লক্ষণ মানিক্যের সাথে যুদ্ধে রামচন্দ্রের পক্ষে কঠিন বীরত্বের পরিচয় দেন। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের বাহিনীর বিরুদ্ধে চন্দ্রদ্বীপের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধে জন গেরী ভারী কামান ও বন্দুক নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য ১০ হাজর সৈন্যের নেতৃত্ব দেন।

রামচন্দ্রের পুত্র কীর্তিনারায়ণ সিংহাসনে আরোহণ করে সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নিলে তার পিতার বিশ্বস্ত পর্তুগিজ সেনাপতি জন গেরী ১০ হাজার সৈন্য নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তখন কীর্তিনারায়ণ তার অনুগত সেনাবাহিনী নিয়ে জন গেরীর বিরুদ্ধে মেহেন্দীগঞ্জের বল্লভপুরে তিন দিন ব্যাপী যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে গেরীর বাহিনী পরাজিত হয়, অনেক পর্তুগিজ সৈন্য নিহত হয় এবং গেরী বাকলা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এভাবে বিশ্বাস ঘাতকতার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাংলায় জন গেরীর সৈনাপত্য।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খণ্ড) । ভাস্কর প্রকাশনী, ২০১০।