কোম্পানি আমলে বাকেরগঞ্জের শাসন

Barisalpedia থেকে

১৬১১ খ্রিঃ রাজা রামচন্দ্রের পরাজয়ের পর চন্দ্রদ্বীপ ঢাকা বিভাগের অধীনে চলে যায়। মুর্শিদাবাদের নবাবের অধীনে একজন নায়েব নাজিম ঢাকা বিভাগের শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। আলিবর্দী খানের জামাতা নওয়াজিশ খান ১৭৪০ খ্রিঃ হতে ১৭৫৫ খ্রিঃ পর্যন্ত ঢাকার নায়েব নাজিম ছিলেন। তার মৃত্যুর পর জেসারত খান ঢাকার নায়েব নাজিম নিযুক্ত হন। তিনি এ পদে ১৭৮৫ খ্রিঃ পর্যন্ত ছিলেন। তখন সমগ্র পূর্ব বাংলা ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভূক্ত ছিল। লর্ড ক্লাইভ ১৭৬৫ খ্রিঃ বাংলার দেওয়ানী লাভ করে রেজা খানকে বাংলার নায়েব দেওয়ান নিযুক্ত করেন। রেজা খান মুর্শিদাবাদে থাকতেন। তার সহকারী হিম্মত সিংহ ঢাকায় দেওয়ানীর দায়িত্ব পালন করতেন। জেসারত খান নিজামত বা বেসামারিক শাসন কার্য পরিচালনা করতেন।

লর্ড ক্লাইভের দ্বৈত শাসন ও অর্থনীতি

লর্ড ক্লাইভের দ্বৈত শাসনের ফলে বাংলার শাসন ও অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ে। তাই ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে গভর্নর ভেয়েলষ্ট সুপারভাইজার প্রথা চালু করেন।১ প্রত্যেক বিভাগে একজন সুপারভাইজার বা তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা হয়। ১৭৬৯ খ্রিঃ সেপ্টেম্বর মাসে মিঃ টমাস কেলসন ঢাকা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হয়ে আসেন। এ সময় বরিশাল ঢাকার তত্ত্বাবধায়কের অধীনে ছিল। তখনও মোগল শাসন পদ্ধতি চালু ছিল। মোগল শাসন ব্যবস্থা রাজস্ব হুজুরী ও নিজামত দু’শাখায় বিভক্ত ছিল। টমাস কেলসন হুজুরী ও নিজামত উভয় বিভাগের প্রশাসক ও রাজস্ব বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হন। তার তিন জন ইংরেজ সহকারী ছিল। তারা হলেন জন সামার, হল্যান্ড ও আরচি বলডষ্টাবলস। কেলসন ঢাকা বিভাগের প্রধান বা চীফ ছিলেন। তার মাসিক বেতন ছিল এক হাজার টাকা। তার অধীনে ফার্সী অনুবাদক ও একজন ইংরেজী লেখক কাজ করত। ১৭৭১ খ্রিঃ মিঃ হ্যারিস ঢাকার তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হন। তার মাসিক বেতন ছিল ১৮০০ টাকা। ১৭৭২ খ্রিঃ মিঃ লমবার্ট ঢাকার তত্ত্বাবধায়ক হয়ে আসেন। ১৭৬৯ খ্রিঃ অনাবৃষ্টির ফলে ফসল ভাল হয়নি। অথচ সুপারভাইজাররা উচ্চ হারে রাজস্ব আদায়ের জন্য কর্মচারী, ইজারাদার ও জমিদারদের নির্দেশ দেয়। ছিয়াত্তরের মম্বন্তরের জন্য রেজা খান ও হিম্মত সিংহের সাথে সুপারভাইজাররা সমভাবে দায়ী ছিল।

রিভিনিউ কাউন্সিল গঠন

১৭৬৯ খ্রিঃ মুশির্দাবাদে রিভিনিউ কাউন্সিল গঠন করা হয়। তারা সুপারভাইজার তত্ত্বাবধায়কের কার্যাবলীর নির্দেশ দিতেন। রাজস্ব বিভাগের পরিচালনার জন্য ১৭৬৯ খ্রিঃ ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে কন্ট্রোলিং কমিটি অব রেভিনিউ এবং ১৭৭০ খ্রিঃ প্রাদেশিক কাউন্সিল গঠন করা হয়। ঢাকায় একটি প্রাদেশিক কাউন্সিল ছিল। পরে প্রাদেশিক কাউন্সিল বিলুপ্ত করে বিভাগ নামকরণ করা হয়। বাকেরগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ছিল। কোম্পানির শাসন ও শোষণের ফলে ১৭৭০ খ্রিঃ দুর্ভিক্ষে বাংলার এক কোটি লোক না খেয়ে মারা যায়। এ সময় বাংলার গভর্ণর ছিলেন কার্টিয়ার। ১৭৭২ খ্রিঃ লর্ড ওয়ারেন হেষ্টিংস বাংলার গভর্নর হয়ে আসেন। তিনি দ্বৈত শাসন উঠিয়ে দিয়ে দেওয়ানীর ভার কোম্পানির হাতে নেন। তিনি ১৭৭২ খ্রিঃ সুভারভাইজার প্রথা বিলোপ করে প্রত্যেক জেলায় একজন ইংরেজ কালেক্টর নিয়োগ করেন। ১৭৭২ খ্রিস্টব্দের আগষ্ট মাসে কালেক্টর উপাধি নিয়ে মিঃ গুভারের ঢাকা জেলার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দের ১৪ মে হেষ্টিংসকে সভাপতি করে কমিটি অব সারকুইট গঠন করা হয়। এ কমিটি প্রত্যেক জেলায় ঘুরে জমিদারদের সাথে পাঁচ বছরের জন্য ভূমি বন্দোবস্ত দেয়। কমিটি অব রেভিনিউ বাতিল করে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ অক্টোবর বোর্ড অব রেভিনিউ গঠন করেন। তিনি ১৭৭২ খ্রিঃ প্রত্যেক জেলায় একটি দেওয়ানী ও একটি ফৌজদারী আদালত স্থাপন করেন।

ইংরেজ কালেক্টররা রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। রাজস্ব আদায়ের জন্য ১৭৭৪ খ্রিঃ হেষ্টিংস বাংলা, বিহার, উড়িষ্যাকে ৬টি বিভাগে বিভক্ত করেন এবং প্রত্যেক বিভাগে প্রাদেশিক কাউন্সিল গঠন করা হয়। এ ব্যবস্থা চালু হলে হেষ্টিংস কালেক্টর পদ উঠিয়ে দেন। ১৭৭৪ খ্রিঃ মিঃ বারওয়েল, মিঃ পালং, মিঃ থাকার শেক্সপিয়ার ও হল্যান্ড ঢাকা প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য নিযুক্ত হন। মিঃ বারওয়েল ঢাকা বিভাগের চীফ বা প্রধান ছিলেন।২ প্রত্যেক জোয় একজন দেওয়ান ও একজন সহকারী কালেক্টর ছিল। বাকেরগঞ্জ ঢাকা প্রাদেশিক কাউন্সিলের অন্তর্ভূক্ত ছিল। রাজস্ব আদায়ের জন্য ১৭৭২ খ্রিঃ বারৈকরণে একজন তহশীলদার নিযুক্ত করা হয়। ১৭৭৯ খ্রিঃ শেক্সপিয়ার, হল্যান্ড, হ্যাচ ও মিঃ ডে ঢাকা প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৭৮১ খ্রিঃ প্রাদেশিক কাউন্সিল বাতিল করা হয় এবং পুনরায় কালেক্টর নিয়োগ করা হয়। চির বিদ্রোহের দেশ বরিশাল ঢাকা হতে সমুদ্রোপকূলে অবস্থিত। তাই বিদ্রোহী কৃষকদের দমন করার জন্য ইংরেজ সরকার ১৭৮১ খ্রিঃ বাকেরগঞ্জে সিভিল জজকোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। মিঃ রাফটন প্রথম সিভিল জজ। ক্ষমতা সীমিত থাকায় তিনি সুন্দরবনের বিদ্রোহীদের দমন করতে ব্যর্থ হন। তাই ১৭৮৪ খ্রিঃ সুন্দরবন কমিশনার নিয়োগ করা হয়। সিভিল জজ ও সুন্দরবন কমিশনারের দপ্তর ছিল বারৈকরণে। ১৭৯২ খ্রিঃ তাদের দপ্তর বারৈকরণ হতে বাকেরগঞ্জ বন্দরে স্থানান্তর করা হয়।

পাঁচসালা বন্দোবস্ত ও রাজস্ব আদায়

লর্ড ক্লাইভের দ্বৈত শাসন ও ওয়ারেন হেষ্টিংসের পাঁচসালা বন্দোবস্তের সময় বরিশালের কৃষক সমাজ এক অবর্ণনীয় উৎপীড়নের শিকার হয়। কোম্পানি ১৭৬৫ হতে ১৭৭২ খ্রিঃ পর্যন্ত পরগণাগুলো বার্ষিক ইজারা দিত। জমিদার ও তালুকদাররা উচ্চহারে ইজারা নিত। অনেক সময় উচ্চ হারে জমিদাররা রাজস্ব দিতে ব্যর্থ হলে প্রকাশ্যে নিলাম ডাকা হতো। ইদিলপুরের জমিদার রামবল্লভ চৌধুরী কোম্পানির রাজস্ব দিতে ব্যর্থ হলে ঢাকার সহকারী নায়েব হিম্মত সিংহ ও সুপারভাইজার টমাস ক্যালসনের সুপারিশে মুর্শিদাবাদের নায়েব দেওয়ান রেজা খান ও ইংরেজ রেসিডেন্ট রিচার্ড বেকার ইদিলপুরকে কোম্পানির খাসভূমি হিসেবে দখল করে। কোম্পানির কর্মচারী সাজ্জাল ও পাইক-পেয়াদাদের নিষ্ঠুর উৎপীড়নে কৃষকরা তাদের যা কিছু ছিল তা বিক্রি করে রাজস্ব পরিশোধ করে। ইংরেজ কালেক্টর আর্মষ্টংয়ের বিবরণে এ অত্যাচারের কাহিনী ফুটে উঠেছে। তিনি লিখেছেন “ফল হলো এক পরগণা সমৃদ্ধিশালী হওয়ার পরিবর্তে ১৭৭০ খ্রি. যখন সাজ্জালরা পরগণা থেকে ১১৬০০ টাকা রাজস্ব আদায় করে, তখন কৃষি ভূমিকে উপেক্ষা করা হয়। কৃষকরা অন্যত্র পালিয়ে যায়। পরগণার অনেক ভূমি গভীর জঙ্গলে পরিণত হয় এবং চাষাবাদ এক অষ্টমাংশে নেমে আসে।৩

ফৌজদার নিয়োগ

হেষ্টিংস বরিশালের বিদ্রোহী কৃষকদের দমন করার জন্য কয়েকজন ফৌজদার নিয়োগ করেন। ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ জুলাই বাকেরগঞ্জে একজন ফৌজদার নিয়োগ করা হয় এবং তখন বাকেরগঞ্জ থানার সীমানা দেখানো হয়েছে, উত্তরে সুন্দরকুল, পূর্বে জালালুর, পশ্চিমে সৈয়দপুর এবঙ দক্ষিণে আওরঙ্গপুর।৪ বর্তমান বাকেরগঞ্জের কাঁঠালিয়া, বেতাগী, বামনা, মঠবাড়িয়া, নলছিটি প্রভৃতি বাকেরগঞ্জ থানাধীন ছিল। বরিশাল, নলচিড়া, বাকেরগঞ্জ, ভোলা, কাউখালী, টেগরা, বাউফল প্রভৃতি স্থানে ফৌজদার ছিল।

মিঃ পিটের অত্যাচার

ঢাকার কোম্পানির এ্যাটর্নি মিঃ পিট সুপ্রীমকোর্টের আদেশের অপপ্রয়োগ করে বাকেরগঞ্জের অনেক জমিদার তালুকদারকে সর্বস্বান্ত করে। পিট ঢাকায় বাস করতেন। তিনি হেষ্টিংসের বিশেষ বন্ধু ছিলেন। তিনি একাধারে এ্যাটর্নি, বিচারক, মিঃ হাইটসের ক্লার্ক ও ডেপুটি শেরিফ হিসেবে কাজ করতেন। তিনি একদিকে অভিযোগ করতেন এবং অন্যদিকে বিচারকের ভূমিকাও পালন করতেন। সুতরাং ঢাকার প্রাদেশিক কাউন্সিলের নিকট বিচার পেতে হলে পিটের শুভদৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন ছিল। প্রাদেশিক কাউন্সিল পিটের সীমাহীন ক্ষমতা প্রতিরোধ করতে পারেনি। মিঃ পিট রাজস্ব পরিশোধ না করার অভিযোগে উত্তর শাহবাজপুর, ও নাজিরপুর পরগণার জমিদারদের বন্দী করে। ঢাকার প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য মিঃ রোজ ও অন্য সদস্যরা ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ সেপ্টেম্বর ওয়ারেন হেষ্টিংসের নিকট এক পত্র লেখেন:৫

“উদাহরণস্বরূপ নাজিরপুরের জমিদার বছরে ৪০ হাজার টাকা রাজস্ব দেন। তাকে এক গ্রেফতারী পরোয়ানার বলে কলিকাতায় নিয়ে গিয়ে বন্দী করা হয়। তিনি তখন নির্ধারিত রাজস্ব পরিশোধের জন্য ভূমি জরিপ করার জন্য যাচ্ছিলেন। গ্রেফতারের ফলে তিনি কয়েক মাস অনুপস্থিত থাকবেন। মালিকের অবর্তমানে রাজস্ব আদায় খুবই নি¤œমানে পরিচালিত হবে, সরকারী রাজস্ব বাকি পড়বে এবং ঘাটতি পূরণের জন্য পরগণা নিলামে বিক্রি হবে। এর ফলে জমিদার সামান্য ক্ষতিপূরণ পাবে। পরিশেষে আপনাকে জ্ঞাত করানো যাচ্ছে যে, তাকে অন্যায়ভাবে বন্দী করা হয়েছে।”

বাকেরগঞ্জের ইতিহাস লেখক মিঃ বেভারিজ বলেছেন, “যারা বিচারক হাইডের ক্লাক পিটের আক্রমণে নিপীড়িত হয়েছেন উত্তর শাহবাজপুরের জমিদার তাদের মধ্যে অন্যতম। লালরাম প্রাদেশিক কাউন্সিলের নিকট প্রতিকার না পেয়ে গভর্নর জেনারেল হেষ্টিংয়ের নিকট আবেদন করেন। তার উকিলের দরখাস্ত নি¤েœ উদ্ধৃত হল:৬

আপনার দরখাস্তকারী আনন্দরাম উত্তর শাহবাজপুরের জমিদার লালরাম চৌধুরীর উকিল। আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, তার মক্কেলের অংশীদার বাঙ্গেশ চৌধুরী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে যে তিনি মিঃ পিটের সুপ্রীমকোর্টের কাছারি ধ্বংস ও লুট করেছে। দরখাস্তকারীর মক্কেল এবং তার গোমস্তাকে গ্রেফতার করে জেলখানায় রাখা হয়েছে। আপনার দরখাস্তকারীর মক্কেল কখনও ইংরেজের কোম্পানি বা কোন ইংরেজের অধীনে চাকরি করেননি। তিনি বিচার প্রার্থী। পিটের অত্যাচারে ক্ষিপ্ত হয়ে লালরাম জমিদারের কাছারি আক্রমণ করেন। হয়ত বিদ্রোহীরা পিটকে হত্যা করতে চেয়েছিল। খুব সম্ভব লালরাম পিটের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বরিশালের বিদ্রোহী কৃষকদের নিয়ে পিটের কাছারি আক্রমণ করেছিল।

দক্ষিণ শাহবাজপুরের (ভোলা) জমিদার মির্যাজান পিটের অত্যাচারের আর একজন শিকার। মির্যাজান ঢাকায় থাকতেন। জনৈক ইলিয়াসা আব্রাহাব মির্যাজানের বিরুদ্ধে কোর্টে অভিযোগ করে। পিটের আদেশে একদল সিপাহী ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে ১ ফেব্রুয়ারি মির্যাজানকে গ্রেফতার করতে যায়। উভয় দলে সংঘর্ষের ফলে মির্যাজানের একজন দায়ী নিহত হয়। পিটের আক্রোশ হতে তিনি রেহাই পেলেন না। ১৭৮০ ও ১৭৮৬ খ্রিঃ দক্ষিণ শাহবাজপুর নিলামে বিক্রি হয় এবং খাজা মাইকেল নিলাম ক্রয় করে। এমনিভাবে ক্লাইভের দ্বৈত শাসন, হেষ্টিংসের পাঁচসালা-একসালা বন্দোবস্ত ও পিটের ষড়যন্ত্রে বরিশালের অনেক ভূম্যাধিকার নিঃশেষ হয়ে যায়।

তথ্য নির্দেশ

1. Early Land Revenue System in Bengal and Bihar Vol-1 1765-1772. Calcutta 1936-Page 24-94. 2. James Tailor, Topography of Dacca-Gi e½vbyev`, †Kv¤úvbx Avg‡j XvKv, †gvnv¤§` Avmv`y¾vgvb Ab~w`Z, evsjv GKv‡Wwg, XvKv-1978-c„ôv-160-169| 3. The District of Bakerganj-Its History and Statistics-H. Beveridge B. C. S. Magistrate and Collector, Bakerganj, London, 1876-Reprinted by

       Bakerganj District Council, 1970, Page-286.

4. The District of Bakerganj, Page 114 5. Ibidi, Page 119 6. Ibidi, Page 112.