শামসুল হক চৌধুরী
এক কালের সংগ্রামী ছাত্রনেতা জনাব আলহাজ্জ্ব শামসুল হক চৌধুরী ১৯২৯ সালে পিরোজপুর জেলা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম খান সাহেব মফিজ উদ্দিন আহ্মেদ এবং মাতা মরহুমা শরীফুন্নেছা খাতুন।
পরিচ্ছেদসমূহ
শিক্ষা
১৯৪৫ সালে তিনি পিরোজপুর সরকারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৭ সনে বরিশাল বিএম. কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৫১ সালে ঢাকা জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ, ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এম. এ এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি পাশ করেন।
রাজনীতি
৮ম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন জনাব চৌধুরী নিখিল বংগ মুসলিম ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন। প্রথমে তিনি নিখিল বংগ মুসলিম ছাত্রলীগ পিরোজপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক পরে বাখেরগঞ্জ শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারী ফজলুল হক হলে মরহুম তোয়াহা সাহেবের সভাপতিত্বে জনাব নাঈমুদ্দিনকে আহবায়ক করে মুসলিম ছাত্রলীগ গঠিত হয় এবং তিনি মুসলিম ছাত্রলীগ বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি নিযুক্ত হন। একই সনের ১১ই মার্চ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সর্বদলিয় কমিটিরও সভাপতির দায়িত্ব তার উপরে অর্পিত হয়। ১৯৪৯ সালে তিনি রাজনৈতিক কারণে ছাত্র নেতা হিসাবে কারাবরণ করেন। ১৯৫১ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের অস্থায়ী সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৫২ সালেও তিনি কারাবরণ করেন। কৌশলগত মত পার্থ্যক্যে ১৯৫৩ সালে মুসলিম ছাত্রলীগ ভাগ হয়ে গেলে তিনি একটি গ্রুপের সভাপতি নিযুক্ত হন। ১৯৫৬ সালে তিনি পাকিস্তান ছাত্রলীগ গঠন করেন। এর পূর্বে ১৯৫৪ সালে তাকে সরকার ঢাকা থেকে বহিস্কার করে। ১৯৫৫ সন পর্যন্ত তিনি পিরোজপুর শহরে-ই ছিলেন।
কর্মজীবন
১৯৬২ সালে জনাব চৌধুরী ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এবং ১৯৬৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে যোগদান করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি পর পর একাধারে ৬ বার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা কল্পে ১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসে ১৩ জন আইনজীবী সহ তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৮৩ সালের ১লা ডিসেম্বর, ১৯৮৫ সালের এপ্রিল মাসে, এবং ১৯৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর তিনি পরপর চার বার কারাবরণ করেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আজও তিনি আপোষহীন। জনাব চৌধুরী ১৯৫৬ সালে অনুষ্ঠিত এশিয়া আফ্রিকা স্টুডেন্টস কনফারেন্সে যোগদান করেন। ১৯৮৭ সালে কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত দি ইনডেপেনডেন্স অফ জাজেস এনড ল ইয়ার্স ইন সাউথ এশিয়া এ যোগদান করেন। এ ছাড়াও ১৯৮৮ সালের নভেম্বর মাসে লাহোরে অনুষ্ঠিত সার্ক কান্ট্রিজ মনবাধিকার সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন।
পারিবারিক জীবন
জনাব চৌধুরী ১৯৬৪ সালে ঢাকায় খান বাহাদুর নাসির উদ্দিন আহমেদ এর কনিষ্ঠ কন্যা মিসেস জিনাতুন্নেছা এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি মসিউল হক, আম ইমতিয়াজ, আর জাবমুল হক নামে ৩ পুত্র সন্তানের জনক।
তথ্যসূত্র: রফিকুল ইসলাম স¤্রাট, বরিশাল দর্পণ।