লালমোহন থানা দখল যুদ্ধ ১৯৭১
ভোলার দেউলা যুদ্ধে জয়লাভের পর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস বেড়ে যায়। ভোলার দক্ষিণের থানাগুলো দখল করতে পারলে পাকসেনারা ভোলা শহরে আটকে থাকবে। তাই হাইকমান্ড সিদ্দিক লালমোহন থানা দখলের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০ অক্টোবর রাতে খাবার শেষ করে ১শ’ জন মুক্তিযোদ্ধা লালমোহন যাত্রা করে। আজানের সময় তারা শাহবাজপুর কলেজের নিকট পৌঁছে। কমান্ডার সিদ্দিক মুক্তিযোদ্ধাদের ৪টি ভাগে বিভক্ত করেন। ১. থানার পশ্চিম দিক-দলনেতা শামসুল হক ও তার দল; ২. উত্তরে মোহাম্মদ সিদ্দিক; ৩. দক্ষিণে হাবিলদার গিয়াস উদ্দিন; ৪. পূর্ব দিকে হাবিলদার শাহু। ২১ অক্টোবর ভোর ৫টায় আরসিও অফিসের সামনে আমগাছের সাথে রাইফেল ঠেকিয়ে প্রথম গুলি বর্ষণ করার সাথে সাথে চারদিক থেকে গুলি শুরু হয়ে যায়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। পুলিশ-রাজাকার মিলিশিয়াকে মাইকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। রাজাকারের মা ও শান্তি কমিটির দ্বারা অনুরোধ করা হয়। থানার ছালাম দারোগা বলে প্রাণ থাকতে আত্মসমর্পণ করব না। দুপক্ষের গুলিতে ৪ জন পথচারী নিহত হয়। স্থানীয় এমপিএ মোতাহার মাস্টার ও নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করছেন। তিনদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা থানায় প্রবেশ করে। তখন পুলিশ-রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। থানা থেকে ৭২টি রাইফেল উদ্ধার কর হয়। লালমোহন থানার পতন হয়। দক্ষিণ ভোলা সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।