ললিতমোহন দাস
কলকাতাস্থ ‘বরিশাল সেবা সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। জন্ম ৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৮। মৃত্যু ২৭ ডিসেম্বর ১৯৩২। জন্মস্থান বর্তমান আগৈলঝারা উপজেলার গৈলা গ্রাম (পূর্বে গৌরনদীর অন্তর্ভুক্ত ছিল)। ১৮৮৪ খৃস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বরিশালের ব্রজমোহন স্কুলের প্রথম দিকের ছাত্র। ওই স্কুল থেকে ১৮৮৮ খৃস্টাব্দে ১৫ টাকা বৃত্তি নিয়ে এন্ট্রান্স পাশ করেন। কলকাতা মেট্রোপলিটান কলেজ থেকে ১৮৯২ খৃস্টাব্দে বি.এ. এবং প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৮৯৩ খৃস্টাব্দে দর্শনশাস্ত্রে এম.এ. পাশ করে কিছুদিন যশোহর জেলার নলদা গ্রামে ও পরে কলকাতায় এসে সিটি স্কুল ও কলেজে শিক্ষকতা করেন। অশ্বিনীকুমার দত্তের ‘সত্য-প্রেম-পবিত্রতা’র আদর্শে উদবুদ্ধ ললিতমোহন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথের শিষ্য হিসাবে কংগ্রেসে যোগ দেন। বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। Risley Circular দ্বারা সরকার শিক্ষকদের রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগদান করা চলবে না বলে ঘোষণা করলে তিনি সিটি কলেজের অধ্যাপকের পদ ছেড়ে জীবিকার্জনের জন্য আজীবন গৃহশিক্ষকতা করেছেন। ১৯২৪ খৃস্টাব্দে বরিশালের পিরোজপুর জেলা কনফারেন্সে তিনি সভাপতিত্ব করেন এবং ১৯৩০ খৃস্টাব্দে আইন অমান্য আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করায় কারারুদ্ধ হন। ১৯০৯ খৃস্টাব্দে ঊষাহরণ গুপ্ত, অনন্তকুমার সেনগুপ্ত প্রভৃতি কয়েকজন যুবক ছাত্র মিলে কলকাতায় ‘বরিশাল সেবা সমিতি’ নামে যে প্রতিষ্ঠান গঠন করেন তিনি তার প্রথম সভাপতি এবং আমরণ এই সমিতির কর্ণধার ও প্রাণস্বরূপ ছিলেন। ৮২/১ হ্যারিসন রোডে ছাত্রদের নিয়ে মেস করে থাকতেন। আচার্য শিবনাথ শাস্ত্রী দ্বারা ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষিত হন। রচিত গ্রন্থ: ‘ধর্ম-সাধন’(১৯০০), ‘নিবেদন’(পূর্বার্ধ), ‘নিবেদন’(উত্তরার্ধ)। ‘করুণার লীলা’ নামে তাঁর রচিত জীবনকাহিনি অপ্রকাশিত।
তথ্যসূত্র: বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা: সাহিত্য সংসদ। ২০১৩।