Barisalpedia
 


আড্ডা ধানসিড়ির টুকিটাকি

সুফিয়া কামালের ওপর আলোচনা

17-Jun-2016

২৭/৫/২০১৬ তারিখের আড্ডায়  কথা হয় সুফিয়া কামালকে নিয়ে। বিশেষ করে কথা বলেন মানিক মিয়া মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কবি আসমা চৌধুরী। আসমা চৌধুরী তাঁর আলোচনায় তুলে ধরেন সুফিয়া কামাল কীভাবে একটি রক্ষণশীল সমাজ ও পরিবার থেকে কীভাবে বাংলা ইংরেজি বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হন। এ সবের কৃতিত্বের পিছনে বড় ভূমিকা ছিল সুফিয়া কামালের প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের। সৈয়দ নেহাল হোসেনের ঐকান্তিক সমর্থন ছিল বলেই হিন্দু বধূর রূপ ধারণ করে তিনি মহাত্মা গান্ধীর সাথে বরিশালে দেখা করতে পেরেছিলেন এবং চরকায় সুতা কেটে তাঁকে দিতে পেরেছিলেন। এমন চমকপ্রদ অনেক তথ্য সমন্বয়ে আজকের আসমা চৌধুরীর আলোচনাটি ছিল মনোমুগ্ধকর।

 

 

৪০ তম আড্ডা

22-Jul-2016

আজ ২২ জুলাই ২০১৬ তারিখ বিকাল চারটায় জীবনানন্দ অঙ্গনে ‘আড্ডা ধানসিড়ি’র ৪০তম আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। আড্ডায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহম্মদ মুহসিন, বাবুগঞ্জের থানা শিক্ষা কর্মকর্তা  তাছলিমা আক্তার,  কবি শফিক আমিন, শিল্পী সিফাত আরা বাঁধন, আলোকচিত্রশিল্পী কিশোর কর্মকার, আড্ডারু তানিয়া রহমান, কবি ছোটন চক্রবর্তী, কবি মাহমুদ অর্ক্য,  কবি ইয়াসিন হীরা, কবি আবদুর রহমান, কবি জাহিদ আল হাসান,  শিল্পী কুয়াশা সহ বিশের অধিক আড্ডারু উপস্থিত  ছিলেন। আড্ডার শুরুতেই জীবনানন্দ পুরস্কার ২০১৬ এর অনুষ্ঠান বিষয়ে আলোচনা হয় এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নির্ধারণ ও অনুষ্ঠান  ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয় এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সাথে পত্রিকা ধানসিড়ির অগ্রগতি আড্ডায় বিশেষভাবে জানানো হয়। পত্রিকার লেখা প্রাপ্তির অগ্রগতি সকলের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়। 

এরপর আড্ডার মূল বিষয় আড্ডারুদের স্বরচিত লেখা থেকে পাঠ শুরু হয়। কবিতা শোনান কবি শফিক আমিন, কবি ইয়াসিন হীরা, কবি মাহমুদ অর্ক্য, কবি জাহিদ-আল-হাসান, কবি আবদুর  রহমান ও সিফাত আরা বাঁধন। রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা বিখ্যাত গান ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গেয়ে শোনান সিফাত আরা বাঁধন। আরো গান শোনান শিল্পী কুয়াশা । কুয়াশা আগুনমুখার জল আর চাঁদের আবেশ জীবনে এঁকে গান রচনা করেছেন এবং সেই গান নিজের সুরে দোতারা সহযোগে গেয়ে শোনান। গানটি সকলের কাছে অসাধারণ মনে হয়।

আড্ডার সবশেষ পর্যায়ে আলোচনার এ মাসের ব্যক্তিত্ব আহসান হাবীব -এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক মুহম্মদ মুহসিন। উল্লেখ্য কবি আহসান হাবীব ১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর এই মৃত্যু তারিখের কারণেই আড্ডা ধানসিড়ির আড্ডার জুলাই মাসের কবি ব্যক্তিত্ব কবি আহসান হাবীব। সবশেষে কবি আহসান হাবীবের কবিতা ‘দোতলার ল্যান্ডিং’ আবৃত্তি করে শোনানো হয়। এর মধ্য দিয়ে আজকের আড্ডা শেষ হয়।  

 

৪১ তম আড্ডা

12-Aug-2016

বর্ষা-বাদলা উপেক্ষা করে আজও কিছু আড্ডারুর অনিরুদ্ধ উপস্থিতি আমাদেরকে জুগিয়েছে আড্ডার উচ্ছলতা ও প্রাণবন্ততা। উপস্থিত ছিলেন আসমা চৌধুরী, মুহম্মদ মুহসিন, শফিক আমিন, সৈয়দ মেহেদী হাসান, কিশোর কর্মকার, সিফাত আরা বাধন, প্রীতম চৌধুরী, অরুনাভ বিলে, শামসুল আলম, শফিক মুনসী, মাহমুদ অর্ক্য প্রমুখ আড্ডারু। আড্ডার কেন্দ্রিয় বিষয় ছিল আগস্ট মাসে জন্ম নেয়া বরিশালের কবি আবুল হাসান। তাই সভার শুরু হলো বরিশালপিডিয়ায় আবুল হাসানকে নিয়ে লিখিত নিবন্ধের পাঠ দিয়ে এবং আবুল হাসানের নিজেকে নিয়ে লেখা ‘আবুল হাসান’ শীর্ষক কবিতার পাঠ দিয়ে।


আবুল হাসানের বিষয়ে এরপর বিশদ কথা বলেন কবি আসমা চৌধুরীতাঁর স্বভাবসুলভ গোছালো বক্তব্যে তিনি তুলে আনেন আবুল হাসানের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ খুটিনাটিতিনি বলেন আবুল হাসানের প্রথম প্রেমিকার কথা যিনি বরিশালের মেয়ে ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্লাইড কেমিস্ট্রিতে পড়তেন এবং পরবর্তীতে মেডিকেল কলেজে বায়োকেমিস্ট্র পড়াতেনকবিতার প্রয়োজনে এই প্রেম কবি কীভাবে বিসর্জন দিলেন তা নিয়ে তিনি কথা বললেনপরবর্তী প্রেমিকা সুরাইয়া খানম যিনি ছিলেন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক দিলারা হাশেমের বোন তাকে নিয়ে আসমা চৌধুরী অনেক না-জানা কথা বললেনসুরাইয়া খানমের কবিতার বইনাচের শব্দনিয়ে তিনি কথা বললেনএকই সাথে সম্প্রতি জনৈক কবি ও অধ্যাপক সুরাইয়া খানমকে নিয়ে অপবাদমূলক যেসব কথাবার্তা লিখেছেন তার তিনি নিন্দা জানানতিনি আরও বলেন আবুল হাসানের কবিতায় আবেগের দরদী প্রকাশ কীভাবে বরিশালের প্রকৃতির সরল উৎসারণ সে সম্পর্কেতিনি বলেন আবুল হাসানের সাথে সাপে-নেউলে সম্পর্কের হুমায়ুন কবীরের কথা এবং তার হরিহরাত্মা বন্ধু নির্মলেন্দু গুণের কথাএইসব নিয়ে আবুল হাসানের ওপর আসমা চৌধুরীর আলোচনাটি ছিল এক আন্তরিক ও দরদী আলোচনা


আবুল হাসানের ওপর আলোচনা শেষে আড্ডার নিয়মিত অংশ স্বরচিত কবিতার পাঠ শুরু হয়কবিতা পাঠ করেন আসমা চৌধুরী, শফিক আমিন, সৈয়দ মেহেদী হাসান, শাসমুল আলম, প্রীতম চৌধুরী, শফিক মুনসী ও মাহমুদ অর্ক্যসবশেষে আবুল হাসানেরমীরাবাঈনিঃসঙ্গতাকবিতার আবৃত্তির মধ্য দিয়ে আড্ডার সমাপ্তি হয়

 

৪২ তম আড্ডা

26-Aug-2016

আজকের আড্ডায় বেশ কজন অতিথি ছিলেন। তাদের মধ্যে বিশেষ করে যাঁদের নাম বলতেই হয় তাঁরা হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব তানভীর কায়ছার, ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর আলতাফ হোসেন, লিটলম্যাগ ‘মলাট’-এর সম্পাদক আঁখি সিদ্দিকা প্রমুখ। এছাড়া নিয়মিতদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন শ্রদ্ধেয় শিল্পী মুকুল দাস, কবি  আসমা চৌধুরী, কবি শিমুল আজাদ, মুহম্মদ মুহসিন, শফিক আমিন, আবদুর রহমান, সৈয়দ মেহেদী হাসান, কিশোর কর্মকার, সিফাত আরা বাঁধন, শাহেদুজ্জামান সবুজ,, ফাহিমা কেয়া, সুরাইয়া সুমনা, মাহমুদ অর্ক্য সহ আরো বেশ কয়েকজন। প্রতিদিনের মতো মুহম্মদ মুহসিনের সঞ্চালনায় আড্ডা শুরু হয়।

 

৪৩ তম আড্ডা

23-Sep-2016

আজ  আড্ডা ধানসিড়ির ৪৩ তম আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন মুহম্মদ মুহসিন, শফিক আমিন, হাসান মেহেদী, অনিন্দ্য দীপ, ইব্রাহীম খলিল, বাঁধন, ছোটন চক্রবর্তী, মাহমুদ অর্ক্য ও সামসুল আলম।সেপ্টেম্বর মাসে মৃত্যু বিধায় আজকের আড্ডায় আলোচনা হয় বরিশালের ক্লাসিক কবি কামিনী রয়কে নিয়ে। তুলে ধরা হয় তার সংক্ষিপ্ত জীবন পরিচিতি। 

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বিখ্যাত মহিলা কবি কামিনী রায়ের জন্ম ঝালকাঠি থানার বাসন্ডা গ্রামে। তার জন্ম ১২ অক্টোবর ১৮৬৪। মৃত্যু ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩।কামিনী রায়ের পিতা চণ্ডীচরণ সেন ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বী এবং সাহিত্যিক ও সাব-জজ ছিলেন। কামিনী রায়ের স্বামী ছিলেন স্ট্যাটিউটরি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়। কামিনী রায় বেথুন কলেজ থেকে সংস্কৃতে অনার্স-সহ বি.এ. পাশ করেন ১৮৮৬ সালে। এরপর উক্ত কলেজেই অধ্যাপনা করেন। তিনিই ভারতে প্রথম মহিলা অনার্স গ্র্যাজুয়েট। পনেরো বছর বয়সে লেখা তার ‘আলো ও ছায়া’ কাব্যগ্রন্থটি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা-সমেত প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে। এই গ্রন্থ প্রকাশের পর থেকেই তাঁর কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৯৪ সালে তার বিয়ে হয় স্ট্যাটিউটরি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের সাথে। ১৯০১ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। ১৯২২-২৩ পর্যন্ত তিনি নারী শ্রমিক তদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৩২-৩৩ সালে তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত ‘মহাশ্বেতা’ ও ‘পুন্ডরীক’ তাঁর দু-টি প্রসিদ্ধ দীর্ঘ কবিতা। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ: আলো ও ছায়া (১৮৮৯), নির্মাল্য (১৮৯১), প্যেরানিকী (১৮৯৭), গুঞ্জন (১৯০৫) মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩), সনেট সংগ্রহ, অশোক-সঙ্গীত (১৯১৪), নাট্য কাব্য অম্বা (১৯১৫), ঠাকুরমার চিঠি (১৯২৪), দ্বীপ ও ধূপ (১৯২৯) ও জীবন পথে (১৯৩০)। কাব্য সাধনায় তাঁর কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে জগত্তারিনী স্বর্ণপদকে সম্মানিত করেন। তাঁর বোন যামিনী সেন বিশ্বের প্রথম মহিলা এফআরসিএস ডাক্তার।

 

কামিনী রায়ের ওপর আলোচনা শেষে জীবনানন্দ পুরস্কার ২০১৬ এর ২২ অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য আয়োজনে সকলের দায়িত্ব বণ্টিত হয়। এরপর নিজ নিজ কবিতা পাঠ করেন শফিক আমিন, হাসান মেহেদী, অনিন্দ্য দীপ, ইব্রাহীম খলিল, মাহমুদ অর্ক্য ও সামসুল আলম। সবশেষে বাঁধনের কণ্ঠে বাউল শাহ আবদুল করিমের গান ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু’ শোনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো আজকের আড্ডা।

 

৪৪ তম আড্ডা

14-Oct-2016

আজ ১৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ আড্ডা ধানসিড়ির ৪৪তম আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। আজকের আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন ‘সন্ধ্যা’র সম্পাদক ও কবি কিং সউদ, কবি শাহানা সিরাজী, কবি ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ ইমতিয়াজ মাহমুদ, কবি ও ডাক্তার কুশল ইশতিয়াক, কবি ও থানা শিক্ষা অফিসার তাছলিমা বেগম, স্বভাবকবি জয়নাল আবেদীন, কবি শফিক আমিন, হাসান মেহেদী, আবদুর রহমান, অনিন্দ্য দ্বীপ, ছোটন চক্রবর্ত ী, মাহমুদ অর্ক্য, তাহমিনা মুন প্রমুখ সাহিত্যামোদীরা। যথারীতি আজকের আড্ডারও সঞ্চালক ছিলেন মুহম্মদ মুহসিন।

 

আজকের আড্ডায় আলোচনা হয় ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় জীবনানন্দ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান নিয়ে। অনুষ্ঠানে কার কি করণীয় তা নির্ধারণ করা হয়। সবশেষে অতিথি কবি কিং সউদ ও শাহানা সিরাজী সহ কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ, কুশল ইশতিয়াক, তাছলিমা বেগম, শফিক আমিন, আবদুর রহমান, হাসান মেহেদী, অনিন্দ্য দ্বীপ, ছোটন চক্রবর্তী, মাহমুদ অর্ক্য সকলের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে আড্ডার সমাপ্তি ঘোষিত হয়।