বিমল সেন

Barisalpedia থেকে

বিখ্যাত লেখক। জন্ম ১৯০৬। মৃত্যু ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪। জন্মস্থান বর্তমান ঝালকাঠি জেলাধীন নলছিটি উপজেলার কুশংগল ইউনিয়নের ফয়রা গ্রাম। পিতা যোগেশচন্দ্র সেন।

অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বদেশি আন্দোলনে যোগ দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরূপে চরকা কাঁধে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন। এভাবে প্রায় দু-বছর কাটে। তা সত্ত্বেও ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ৫বিষয়ে লেটার ও স্টার পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ওই সময়ে স্কুল-কলেজ ইংরেজদের গোলামখানা বলে কুখ্যাত ছিল। তাই কলেজে ভর্তি না হয়ে যাদবপুর বেঙ্গল টেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু অর্থাভাবে পড়াশোনায় ছেদ পড়ে। বেলগাছিয়া পান্নালাল শীল বিদ্যামন্দিরে শিক্ষকতার কাজ গ্রহণ এবং সাহিত্যসাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। ‘লিবার্টি’, ‘বঙ্গবাণী’, ‘বেণু’, ‘বিচিত্র’, ‘মডার্ন রিভিউ’ প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় তাঁর রচনা প্রকাশিত হতে থাকে। বিপ্লবী যুগান্তর পার্টির মুখপত্র ‘স্বাধীনতা’য় প্রকাশিত তাঁর দেশপ্রেমোদ্দীপক বিভিন্ন ছোটোগল্প রচনার অভিনবত্বে ও বিষয়বস্তুও বৈচিত্রে বিশেষ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। এই সময়ে কলকাতার সরস্বতী লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত তাঁর বই-দু-খানি ‘ফুলঝুরি’ ও ‘স্বাধীনতার জয়যাত্রা’ রাজদ্রোহের অভিযোগে সরকার বাজেয়াপ্ত করেন। বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন। গোর্কি রচিত ‘মাদার’Ñএর বাংলা ভাষায় তাঁর প্রথম বঙ্গানুবাদ উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য গ্রন্থ: ‘পারিজাত’, ‘শক্তির জয়’, ‘মরুযাত্রী’, ‘গল্পের ছলে’ ও ‘ছোটদের শিশিরকুমার’। অনুবাদ গ্রন্থ: ‘শোধবোধ’ ও ‘খনির গোলাম’। রাজনৈতিক কারণে পলাতকজীবন যাপন করতে বাধ্য হন। শেষপর্যন্ত রংপুর স্টেশনে ধরা পড়েন। পুলিশ তাঁর ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। মুক্তিলাভের পর তিনি বেড়াচাঁপা গ্রামে শিক্ষকতা নিয়ে থাকেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।


বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা সাহিত্য সংসদ। ২০১৩।