খন্দকার নাজমুল হুদা (কে এন হুদা) বীরবিক্রম, কর্নেল

Barisalpedia থেকে

সাব-সেক্টর কমান্ডার, যশোর। খন্দকার নাজমুল হুদা (কে এন হুদা) ১৯৩৮ সালের ৬ জুলাই বরিশাল শহরে বগুড়া রোডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতা বদরুন্নেসা খাতুন। বন্ধু মহলে তিনি ঘুডু ভাই নামে পরিচিত ছিলেন। কে এন হুদা ১৯৫৭ সালে বিএম কলেজ থেকে বিএ পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ভর্তি হন। তিনি লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনের গঠিত বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সে যোগ দেন। সেনাবাহিনীতে তিনি ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ইতোমধ্যে পাকিস্তান সামরিক সরকার আগরতরা ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে। ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি গোয়েন্দা বাহিনী তাকে পশ্চিম পাকিস্তানের শিয়ালকোট ক্যান্টনমেন্ট থেকে গ্রেফতার করে এবং তার ওপর দীর্ঘদিন নির্যাতন চলে। ঢাকায় কুর্মিটোলা সেনানিবাসে তার বিরুদ্ধে বিচার অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে আইয়ুব সরকার মামলা প্রত্যাহার করলে তিনি মুভিলাভ করেন। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তিনি কুষ্টিয়ায় ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের আহ্বানে তিনিও মেজর ওসমান চৌধুরীর সাথে যোগ দেন। সরকার তাকে ৮ নম্বর সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরে কমান্ডার নিযুক্ত করে। তিনি চৌগাছার বিওপি আক্রমণ করে দখল করেন। এ যুদ্ধে ১৫ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। সীমান্তে তিনি কয়েকটি যুদ্ধ পরিচাালনা করেন। ২০-২১ নভেম্বর তিনি চৌগাছা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। সরকার তাকে ১৯৭৩ সালে বীরবিক্রম পদকে ভূষিত করে। যুদ্ধকালে তিনি মেজর এবং স্বাধীনতার পর তাকে লে. কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। ১৯৭৫ সালে তিনি রংপুর সেনানিবাসে ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করায় তিনি ব্যথিত হন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর খুনি মোশতাক সরকার উৎখাতে তিনি ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ এর সাথে যোগ দেন। ইতোমধ্যে ৭ নভেম্বর তথাকথিত সিপাহী বিদ্রোহ হয়। খালেদ মোশাররফ, কর্নেল এটিএম হায়দার, কর্নেল কেএন হুদা শেরে বাংলানগরে অবস্থিত সৈন্যদের নিকট অবস্থান করেন। উপরের নির্দেশে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ, কর্নেল এটিএম হায়দার বীরবিক্রম ও কর্নেল কেএন হুদা বীরবিক্রমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাদের সেনানিবাসে দাফন করা হয়। কেএন হুদার বিধবা স্ত্রী নিলুফার দীল আফরোজ বানু। তাঁদের এক ছেলে এক মেয়ে। তারা ঢাকায় বাস করেন।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।