ক্ষেত্র গুপ্ত

Barisalpedia থেকে

বিশিষ্ট অধ্যাপক, সমালোচক ও প্রাবন্ধিক ক্ষেত্র গুপ্ত ১৭ জানুয়ারি ১৯৩০ তারিখে পিরোজপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৃন্ময় গুপ্ত; মাতা সরযূবালা দেবী। ক্ষেত্র গুপ্তর মৃত্যু তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১০।

শিক্ষা

ক্ষেত্র গুপ্ত বাল্যকাল থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। পিরোজপুর সরকারি বিদ্যালয় থেকে ডিভিশন্যাল বৃত্তি পেয়ে ম্যাট্রিক পাশ করেন। দেশভাগের পর তাঁর পিতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে এসে বারাসতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। প্রায় সব কটি পত্রেই সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ৬টি স্বর্ণপদক ও ১টি রৌপ্যপদক পান। ‘মধুসূদনের কবি-আত্মা ও কাব্যশিল্প’ শীর্ষক প্রবন্ধ লিখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট. উপাধি পান।

কর্মজীবন

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথমে চারুচন্দ্র কলেজে, ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে লেকচারার, পরে রিডার এবং বিদ্যাসাগর অধ্যাপক হিসেবে বাংলা বিভাগের প্রধান হন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেছেন। কিছুদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি অধ্যাপনার কাজেই যুক্ত থাকেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।


সাহিত্যকর্ম ও পুরস্কার

বাংলা সাহিত্য সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি এক নতুন ধারা প্রবর্তন করেছিলেন। সাহিত্যকীর্তিতে তাঁর প্রাপ্ত অনেক পুরস্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে ‘সুকুমার সেন স্বর্ণপদক’, রাজ্য সরকারের ‘বিদ্যাসাগর পুরস্কার’, এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যঅলয়ের ‘আশুতোষ ভট্টাচার্য লোকসাহিত্য পুরস্কার’ প্রভৃতি। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অফ ফোকলোর’-এর সভাপতি ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা শতাধিক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমালোচনা: ৬ খন্ডে প্রকাশিত ‘বাংলা উপন্যাসের ইতিহাস’ (১৯৬৮ - ২০০৬), ‘প্রাচীন কাব্য-সৌন্দর্য জিজ্ঞাসা ও নবমূল্যায়ন’ (১৯৫৮), ‘মধুসূদনের কবি আত্মা ও কাব্যশিল্প’ (১৯৬৩), ‘বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস: শিল্পরীতি’ (১৯৭৪), ‘রবীন্দ্র-গল্প: অন্য রবীন্দ্রনাথ’ (১৯৮০), ‘সংযোগের সন্ধান লোকসংস্কৃতি’ (১৯৮০), ‘বাংলাদেশ: সংস্কৃতি ও সাহিত্য’ (১৪০৮ ব.), ‘কবি মুকুন্দরাম’ প্রভৃতি।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।