হেমচন্দ্র গুহ

Barisalpedia থেকে

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব উপাচার্য হেমচন্দ্র গুহের (১.৬.১৯০৩ - ১৮.১১.১৯৯২) আদি বাসস্থান ঝালকাঠি উপজেলার গাভা-রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কাঁচাবালিয়া গ্রামে। পিতা তারাপ্রসন্নর কর্মস্থল আলোয়া গ্রামে জন্ম। বাল্য ও কৈশোর সেখানে কাটে।

হেমচন্দ্র গুহ ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোগী। বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় জেলার মধ্যে প্রথম হয়ে বৃত্তি ও স্বর্ণপদক লাভ করেন। কৃষ্ণনাথ কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে কলেজের পড়া ছেড়ে কলকাতায় এসে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ পরিচালিত ‘বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট’- এ ভরতি হন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ থেকে অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহৃত না হওয়া পর্যন্ত তাতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ইতিমধ্যে পিতার মৃত্যুতে পরিবারের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য কমে যায়। দেশে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ায় তিনি বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে পড়ার সম্ভাবনার কথা জানতে পেরে ২০০০ টাকা যৌতুক নিয়ে বিবাহ করে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে বিদেশযাত্রা করেন। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। গ্লাসগোতে এক ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানিতে দেড় বছর চাকরি করে দেশে ফেরেন। রাসবিহারী ঘোষের বদান্যতায় তখন যাদবপুরে ন্যাশনাল কাউিিন্সলের কলেজ খোলা হয়েছে। এই কলেজে তিনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপকরূপে যোগ দেন (১.১১.১৯২৭)। এই কলেজ এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতিলাভ করেছিল। হেমচন্দ্র গুহ ও তাঁর সহপাঠী উগ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাক্রমে ১ম ও ২য় স্থান অধিকার করার কারণে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হলে তিনি পরবর্তীকালে তার উপাচার্যপদে বৃত হন (১৯৬৬-৭০)। তিনি রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘ওয়ার্ল্ড এনার্জি কনফারেন্স’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছেন। ‘মন ও মনীষা’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান