হীরালাল দাশগুপ্ত, বিপ্লবী ও সুলেখক

Barisalpedia থেকে

বৃটিশ বিরোধী বিপ্লবী ও সুলেখক হীরালাল দাশগুপ্ত গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া গ্রামে ১৮৯০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মধুসূদন দাশগুপ্ত। তাঁর মৃত্যু ৩০ অক্টোবর ১৯৭১।

১৯০৫ খৃস্টাব্দে স্বদেশি আন্দোলনের সময় ছাত্রাবস্থায় তিনি স্বদেশসেবায় উদ্বুদ্ধ হন এবং হাটে-বাজারে বিলেতি বস্ত্র ও বিলেতি লবণ বয়কটের জন্য দোকানে দোকানে পিকেটিং পরিচালনা করেন। ১৯০৬ খৃস্টাব্দে উত্তর-বাখরগঞ্জের দুর্ভিক্ষে তিনি রিলিফের কাজে যোগ দেন ও দুর্গত অঞ্চলে সেবাকার্য করেন। ১৯০৮ খৃস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রাক্কালে বরিশাল অক্সফোর্ড মিশন হোস্টেলে আসেন। এই সময়েই তিনি ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যলাভ করেন এবং তাঁরই প্রভাবে বিপ্লবী দলে যোগ দেন। মাহিলাড়া গ্রামে একটি বিপ্লবী দলও তিনি গড়ে তুলে ছিলেন। ১৯১১ খৃস্টাব্দে কলকাতায় কলেজ-জীবনে সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে তৎকালীন সাহিত্যিকগণের সঙ্গে পরিচিত হন এবং মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতার আনুকূল্যে ‘সুহৃদ’ নামে একটি মাসিক পত্রিকার প্রকাশ ও সম্পাদনা করেন। এই কাজের সূত্রে তিনি কলকাতার বিপ্লবীদের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ রক্ষা করতেন। এপ্রিল ১৯১৬ খৃস্টাব্দে বিপ্লবকর্মের জন্য কলকাতার ওয়াই.এম.সি.এ. হোস্টেল থেকে রিভলবার অপহরণের ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়ে পরে বর্ধমানের কাঁকসা থানায় অন্তরীন থাকেন। ১৯১৮ খৃস্টাব্দে মুক্তি পান। এপ্রিল ১৯২১ খৃস্টাব্দে বিপিনচন্দ্র পালের সভাপতিত্বে বরিশাল কংগ্রেসের যে প্রাদেশিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ওই সম্েমলনে তিনি স্বেচ্ছাসেবকবাহিনীর সহ-সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছরই ২০মে তারিখে চাঁদপুরে আগত ধর্মঘটী চা-বাগিচার শ্রমিকদের উপর সরকারি অত্যাচারের প্রতিবাদে বরিশালে স্টিমার ধর্মঘট পরিচালনায় তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। কংগ্রেস আদর্শ প্রচারের জন্য তিনি বরিশালে ‘অভ্যুদয় প্রেস’ স্থাপন করেন এবং ‘বরিশাল’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ এবং যুব আন্দোলনের মুখপত্ররূপে ‘তরুণ’ নামে একটি মাসিক পত্রের প্রকাশ ও সম্পাদনা করেন। তিনি একজন দক্ষ শিকারিরূপেও সুপরিচিত হয়েছিলেন। শিকার সম্পর্কে তাঁর রচিত দুখানি বিখ্যাত গ্রন্থ: ‘বাঘের জঙ্গল’ ও ‘মায়ামৃগ’। তাঁর অন্যান্য গ্রন্থ: ‘জননায়ক অশ্বিনীকুমার’ ও ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে বরিশাল’।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান