সুজয়া গুহ

Barisalpedia থেকে

সুজয়া গুহ বাঙালি নারীদের মধ্যে বিশিষ্ট পর্বতারোহী এবং বাঙালি নারী পর্বতারোহীদের প্রথম সংগঠক। তাঁর আদি নিবাস মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাটে। জন্ম নেপালে ৩০ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে; মৃত্যু তারিখ ২৬ আগস্ট ১৯৭০।

সুজয়া গুহ১.jpg

সুজয়া গুহর পিতা স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রভাসচন্দ্র বসু চাকরি নিয়ে ব্রিটিশ ভারত থেকে নেপালে চলে যান। সুজয়ার বাল্যকাল সেখানেই কাটে। শিক্ষা কলকাতার লেক স্কুল ফর গার্লস-এ, লেডি ব্রাবোর্ন কলেজে ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিছুদিন দমদমে সরোজিনী নাইডু কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপিকা ছিলেন। লেখক ও পর্বত অভিযাত্রী কমলকুমার গুহের সঙ্গে ১৯৫৯ খৃস্টাব্দে বিবাহ হয়। ১৯৬৪ খৃস্টাব্দে স্বামীসহ একটি দলের সঙ্গে অমরনাথে গিয়ে হিমালয়ের দুর্গমতার সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় ঘটে। দার্জিলিংয়ের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে শিক্ষালাভ করেন। ১৯৬৭ খৃস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের প্রথম সংগঠিত পর্বতাভিযানের তিনি ছিলেন ম্যানেজার ও তাঁর বাড়িতেই প্রথম অভিযানের সদর দপ্তর। মহিলা পর্বতারোহিণীদের ক্লাব ‘পথিকৃৎ’ তাঁর প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয়। ১৯৬৯ খৃস্টাব্দে রূপকুন্ড, গোহনাতাল, কুঁয়ারি গিরিপথ ও তপোবন যান। ১৯৭০ খৃস্টাব্দে লাহুলে এক অনামী শৃঙ্গ (পরে ললনাশৃঙ্গ নাম হয়) আরোহণের মহিলা পর্বতাভিযাত্রীদের তিনি ছিলেন দলনেত্রী। ২১ আগস্ট, ২১,১৩১ ফুট উচ্চ শৃঙ্গটি আরোহন করার পর মূল শিবির থেকে বাতাল গ্রামে যাবার পথে খরস্রোতা করচা নালা পার হবার সময় সঙ্গী কমলা সাহাকে ওই নালার জলে ভেসে যেতে দেখে সেই ‘শকে’ তাঁর মৃত্যু হয়। কমলা সাহার দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুম্বাইয়ের ‘ক্লাইম্বার্স ক্লাব’ তাঁর নামে প্রতি বছর ভারতের শ্রেষ্ঠ মহিলা পর্বতাভিযাত্রীকে শিল্ড দিয়ে থাকেন। ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউ›েডশন তাঁর নামে পর্বতারোহণের সাজসরঞ্জামের এক ভান্ডার স্থাপন করেছে। হিমাচল সরকার লাহুলের বাতাল ও স্তিংরিতে তাঁর দাহ করার স্থানে দুটি স্মৃতিস্তম্ভ করে দিয়েছেন।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ছবি: Barisal - 250 Years' History in Photograph শীর্ষক পেইজ।