সুগন্ধা

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৮:৫৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত সংস্করণে (" == সুগন্ধা: == বরিশালের অন্যতম প্রাচীন নদী সুগন্ধা মূলত গঙ্..." দিয়ে পাতা তৈরি)

সুগন্ধা:

বরিশালের অন্যতম প্রাচীন নদী সুগন্ধা মূলত গঙ্গার তিনটি শাখা নদীর সঙ্গমস্থল। রামায়ণে গঙ্গার পূর্বগামী তিনটি শাখার নাম রয়েছে। তারা হলো হলদিনী, পাবনী ও নলিনী। রামায়ণে বর্ণিত হলদিনী হলো টলেমির বর্ণনায় কামবেরিখন যা বর্তমানে পরিচিত কুমার নদী নামে। টলেমির কামবেরিখন বর্তমান কুমার বা কপোতাক্ষ নদ প্রথমে মাথাভাঙ্গা ও পরে গড়াই নামে কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর হয়ে প্রথমে মধুমতি নামে ও পরে বলেশ্বর নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। হলদিনীর শাখা ভৈরব ও কপোতাক্ষ যশোর ও খুলনার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। রামায়ণে যার নাম নলিনী টলেমির বর্ণনায় তার নাম এন্টিবল। সম্ভবত এটি মধ্যযুগের বুড়িগঙ্গা নদীর ভিন্ন নাম। নলিনী বা বুড়িগঙ্গা রাজশাহী, পাবনা, ঢাকা হয়ে নোয়াখালীর পাশ দিয়ে চট্টগ্রামের নিকট সাগরে মিলিত হয়েছে। রামায়ণের পাবনী তথা টলেমীর সিওডোস্টমন র্বতমান আড়িয়ালখাঁর সাথে অভিন্ন বলে মনে হয়। টলেমির মানচিত্রে দেখা যায় সিওডোস্টমন বা শতমুখা ফরিদপুর-বাকেরগঞ্জের মধ্য দিয়ে অগণিত দ্বীপ সৃষ্টি করে শতাধিক শাখায় বিভক্ত হয়ে সাগরে পতিত হয়েছে। পাবনী বা সিওডোস্টমন মধ্যযুগে আন্দাল খাল নামে পরিচিত ছিল। আন্দাল খালই র্বতমানে আড়িয়ালখাঁ হতে পারে। নলিনী বা এন্টিবল বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে, হলদিনী বা কামবেরিখন পশ্চিম পাশ দিয়ে এবং পাবনী বা সিওডোস্টমন বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের ভিতর দিয়ে সাগরে প্রবাহিত হয়েছে। প্রাচীনকালে নলিনী, পাবনী ও হলদিনী চন্দ্রদ্বীপের নিকট একত্রিত হয়ে সাগরে মিলিত হয়। গঙ্গার পূর্বগামী এ তিন ধারার মোহনার নাম ছিল সুগন্ধা। গঙ্গা নদীর প্রধান স্রোত এক সময় তিন শাখা দিয়ে প্রবাহিত হতো। পরে দ্বীপ সৃষ্টি হয়ে নদী তিনটি অনেক শাখায় বিভক্ত হয়। টলেমির মানচিত্রে দেখা যায় চন্দ্রদ্বীপের প্রাচীন নদী সুগন্ধার প্রমত্ত রূপ নেই। তখন সুগন্ধা স্থলভাগ সৃষ্টি করে অনেক শাখার প্রবাহিত। তাহলে দেখা যায় টলেমির ১৫০ খ্রিস্টাব্দে বর্ণিত সিওডোস্টমন বা শতমুখার চেয়ে সুগন্ধা নদী ও চন্দ্রদ্বীপ অনেক প্রাচীন।


তথ্যসূত্র: সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।