সাতুরিয়া মিয়া বাড়ি, রাজাপুর

Barisalpedia থেকে

এটি সাতুরিয়ার জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ও ইসলামী সাধু পুরুষ শেখ শাহাবুদ্দিনের প্রতিষ্ঠিত বাড়ি। এই পরিবারের অধস্তন পুরুষ শেখ বাহাউদ্দিন মিয়ার বক্তব্যমতে ৩৫০ বছর আগে বার আউলিয়ার সাথে শেখ শাহাবুদ্দিন এতদঞ্চলে আগমন করেন। শেখ বাহাউদ্দিন মিয়া বলেন যে শেখ শাহাবুদ্দিন আলৌকিকভাবে রায়ের কাঠির রাণী মায়ের জমিদারির সমূহ বিপদ সম্পর্কে জানতে পেরে রাণী মাকে অর্থাৎ শিশুপুত্র মহেন্দ্র নারায়ণের মাকে তিনি এ কথা জানালেন। রাণী মা’র বিশ্বাস অর্জনের জন্য তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কাঁচাকলা পাকিয়ে তাঁর অলৌকিক শক্তির প্রমাণ দিলেন। রাণী মা তাঁকে ছেলে বানিয়ে মুর্শিদাবাদে নওয়াবের কাছে গেলেন। এই ছেলের সুবাদে রাণী মা’র জমিদারি রক্ষা হলো। ফিরে পাওয়া জমিদারির সোয়া এগার আনা ছিল সেলিমাবাদ পরগনায় বাকি পৌনে পাঁচ আনা নড়াইল স্টেটে। রাণী মা এই সোয়া এগার আনা ছেলে হিসেবে শেখ শাহাবুদ্দিনকে দান করেন। ফলশ্রুতিতে শেখ শাহাবুদ্দিনের জমিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ হলো। এই গল্পের ঐতিহাসিক ভিত্তি স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নসাপেক্ষ। ঝালকাঠি জেলার ইতিহাস প্রণেতা সিকদার আবুল বাশারের বক্তব্য মোতাবেক জনাব শেখ শাহাবুদ্দিনের পূর্বপুরুষ ছিলেন হজরত খানজাহান আলীর সহচর হজরত সাজেন্দা। রায়ের কাঠির জমিদার প্রাণ নারায়ণের মৃত্যুর পর শিশু পুত্র মহেন্দ্র নারায়ণ জমিদারি হারান। জনাব শেখ শাহাবুদ্দিন রাণীমাতা এবং শিশুপুত্রকে নিয়ে মুর্শিদাবাদ নবাবের নিকট যান এবং জমিদারি উদ্ধার করতে সমর্থ হন। এই ঘটনায় সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে জনাব শেখ শাহাবুদ্দিন রাণীমাতার নিকট থেকে সেলিমাবাদ পরগণায় একটি লাখেরাজ তালুক লাভ করেন। জনাব শেখ শাহাবুদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রীর বংশধরগণ যাঁরা কাউখালীর পাড় সাতুরিয়ায় বসবাস শুরু করেন তাঁদের অন্যতম হাবিব উল্লাহ সাহেবের অধস্তন পু রুষদের একজন আহমদ আলী মিয়া রাজাপুরের সাতুরিয়ার মিয়া বাড়ির এক মেয়েকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির ছিল এক পুত্র ও দু কন্যা। পুত্র আব্দুল হামিদ এবং কন্যা আমি রুন্নেসা ও সৈয়দুন্নেসা। উক্ত সৈয়দুন্নেসার ছেলে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। ফলত এটি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মামা বাড়িও।



তথ্যসূত্র: সাইফুল আহসান বুলবুল। বৃহত্তর বরিশালের ঐতিহাসিক নিদর্শন। গতিধারা, ঢাকা। ২০১২।