সত্যেন্দ্রনাথ সেন

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০০:২০, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত সংস্করণে ("সত্যেন্দ্রনাথ সেনের জন্ম বরিশালে ৪ জুন ১৯০২ তারিখে। পিত..." দিয়ে পাতা তৈরি)

সত্যেন্দ্রনাথ সেনের জন্ম বরিশালে ৪ জুন ১৯০২ তারিখে। পিতা উপেন্দ্রনাথ সেন। সত্যেন্দ্রনাথ সেন সতু সেন নামে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি দিল্লি¬তে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা ও এশিয়ান থিয়েটারের ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁর মৃত্যু তারিখ ৭ আগস্ট ১৯৭১।

শিক্ষা

কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ১৯২৫ খৃস্টাব্দে বিদেশে যাত্রা করেন। পথে প্যারিসে হাসান শহিদ সোহরাওয়ার্দির সঙ্গে সাক্ষাতে ও আলোচনায় তিনি নাটক সম্পর্কে উৎসাহিত হন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর বদলে থিয়েটারি বিদ্যা শেখার জন্য নিউইয়র্কের ‘ল্যাবরেটরি থিয়েটারে’ প্রয়োগবিদ্যার শিক্ষার্থী হিসাবে ভর্তি হন। রাতে ডিশ ধোওয়া ইত্যাদি কাজ করে দিন চলত। ৮ মাস পরে থিয়েটারে জুনিয়ার অ্যাপ্রেনটিসের কাজ পান ও নর্ম্যান বেলগেড্ডেসের সহকারী মঞ্চসজ্জাকর নিযুক্ত হন। এইসময় থেকে তাঁকে মাতার ¯েœহে আশ্রয় দেন ল্যাবরেটরি পরিচালক মিরিয়ম স্টকটন।

কর্মজীবন

নিজ কর্মদক্ষতায় ক্রমশ উন্নতি করে সহকারী টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হন। ‘সিকাডো’ নামক মঞ্চসফল নাটক চলচ্চিত্র রূপায়ণে সহযোগী পরিচালক হয়ে হলিউড-জগতের মেরি পিকফোর্ড, চার্লি চ্যাপলিন, ডগলাস ফেয়ার ব্যাঙ্কস প্রমুখের সঙ্গে পরিচিত হন। ১৯২৮ খৃস্টাব্দে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হন ও ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন। তাঁর প্রযোজিত নাটক ৭টি। এরপর ব্রডওয়ে নাট্যজগতে তিনি পরিচিত হন। ক্রমে ক্রিশ্চিয়ান হেগেন নামে বন্ধুর সহযোগিতায় নিজেই ‘ডড়ড়ফ ঝঃড়পশ চষধু ঐড়ঁংব’ নামে এক মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করেন। কিছুদিন পরে ইউরোপে এসে বার্লিনে ম্যাকস রাইনহার্ট, ফ্রান্সে জাক কোপো, বিলেতে গর্ডন ক্রেগ, রাশিয়ায় মেয়ারহোল্ডের সঙ্গে ও তাঁদের কাজের সঙ্গে পরিচিত হন। আবার নিউইয়ার্কে ফিরে ল্যাবরেটরি থিয়েটারে কয়েকটি বিখ্যাত নাটকের প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। এসময়ে যশ ও অর্থলাভের শীর্ষে পৌছান। ‘নিউইয়র্ক টাইমসে’র দুঁদে নাট্যসমালোচক লেখেনÑ‘ঐরহফ যবধফং ধ ঞযবধঃৎব ডড়ৎশংযড়ঢ়ৃ.অং ংঃধমবফ নুৃরিঃয ষরমযঃরহম ধহফ ংবঃং নু ঝধঃঁ ংবহৃঞযবু ধৎব ংড় ফবষরমযঃভঁষ রহ ঃযবরৎ হধরাবঃব ঃযধঃ ইৎড়ধফধিু পড়ঁষফহ’ঃ নবধৎ ঃযবস’

দেশে ফেরা

এরপর এলিজাবেথ মারবারি ও এরিক ইলিয়টের সঙ্গে এক বন্দোবস্তে সদলবলে শিশিরকুমার ভাদুড়ীক নিউইয়ার্কে আনেন। এই প্রচেষ্টায় নানা বিপত্তির ফলে সতু সেন সর্বস্বান্ত ও ঋণগ্রস্ত হন। এরপর তিনি বন্ধু ক্রিশ্চিয়ান হেগেনের সাহায্যে ৬.৬.১৯৩১ খৃস্টাব্দে কোনক্রমে দেশে ফেরেন। এদেশে তাঁর প্রথম মঞ্চনির্দেশনা ‘বিষ্ণুপ্রিয়া’ নাটকেÑ শিশিরকুমারের অধীনে। পরে তিনি নাট্যনিকেতনের পরিচালক ও শিল্প নির্দেশক হয়ে ‘ঝড়ের পরে’ নাটক মঞ্চস্থ করেন। এখানেই মুড লাইটিং ও বিদ্যুৎ ঝড়-জল ব্যবহৃত হয়। পরের গীতিনাট্য নজরুল ইসলামের ‘আলেয়া’। ১৯৩৩ খৃস্টাব্দে রংমহলে যোগ দিয়ে ঘূর্ণায়মান মঞ্চের প্রবর্তন করেন এবং এই ধরনের মঞ্চের নির্মাতারূপে ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে আমন্ত্রণ পান। ভারতে ঘূর্ণায়মান মঞ্চে প্রথম অভিনয় হয় ‘মহানিশা’ নাটক। ক্রমে মঞ্চ ও আলোর জাদুকররূপে তিনি বহু নাটকে তাঁর ভূমিকা পালন করেন। রবীন্দ্রনাথের ‘নষ্টনীড়’ নাট্যভিনয়েও তিনি মঞ্চ নির্দেশ দেন। শেষ-নির্দেশনা মিনার্ভায় (১৯৫৮)। তিনি ৭টি চলচ্চিত্রেও কাজ করেন। পশ্চিম বাংলায় সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠিত হলে অধ্যাপকপদে আমৃত্যু কাজ করেন। তার আগে দিল্লি-তে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা ও এশিয়ান থিয়েটারের ডিরেক্টর ছিলেন। এখানে অ্যাকাডেমির নাট্যপুরস্কারের বিচারকপদে বৃত হন। মঞ্চের কলাকৌশল শেখানোর জন্য কয়েকটি বিভিন্ন ধরনের রঙ্গমঞ্চের অতিকায় মডেল নির্মাণ করেন। ১৯৬৪ খৃস্টাব্দে সারা বাংলা নাট্য সম্মেলনে তাঁকে গুণি-জন সংবর্ধনা জানানো হয়।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান