সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়

Barisalpedia থেকে

সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায় মূলত স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী নামে সকলের কাছে পরিচিত। তিনি বরিশাল বিপ্লবী দলের প্রতিষ্ঠাতা ও বরিশালের শংকর মঠের প্রতিষ্ঠাতা। তার পৈত্রিক নিবাস উজিরপুর। তার পিতা ষষ্ঠী চরণ মুখোপাধ্যায় গলাচিপা থানার ওসি ছিলেন। সতীশ চন্দ্র ১৮৮৪ সনের ১২ই আগষ্ট গলাচিপায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি উজিরপুর স্কুল হতে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। পরবর্তীতে বিএম স্কুলে শিক্ষকতার কাজে ব্রতী হন এবং অশ্বিনী কুমার দত্তের নিবিড় সান্নিধ্যে আসেন। তিনি বঙ্গভঙ্গ রদ করার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি স্বদেশ বান্ধব সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ১৯০৬ সনে বরিশালের প্রাদেশিক সম্মেলনের সময় গুপ্ত সমিতির পরিচালক বারীন্দ্র কুমার ঘোষ সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়কে একটি রিভলবার উপহার দিলেন। ১৯০৮ সনে নোয়াখালী নিবাসী বিএম স্কুলের ছাত্র নরেন্দ্র মোহন ঘোষ চৌধুরী সহায়তার সতীশ চন্দ্র বরিশালে গুপ্ত সমিতি গঠন করেন। সরকারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বিএম স্কুলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সতীশ চন্দ্র ব্রহ্মাচারী হলেন। ১৯১১ সনে তিনি গয়াধামে স্বামী সংকরানন্দের নিকট দীক্ষা নেন এবং স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী নাম গ্রহণ করেন। ১৯১২ সনে তিনি বরিশালে শংকর মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৫ সনে সরকার তাকে বিপ্লবী তৎপরতার জন্য গ্রেফতার করে এবং মেদিনীপুরের মহিষাদলে স্থানান্তর করে। তার অবর্তমানে মনোরঞ্জন গুপ্ত ও হীরালাল দাস গুপ্ত পার্টির কাজ চালিয়ে যান। শত শত বিপ্লবীরা শংকর মঠে দীক্ষা গ্রহণ করে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ বেদান্ত দর্শন, কর্মতত্ত্ব রচনা করেন। ১৯১৯ সনে তিনি কারাবাস থেকে মুক্তি লাভ করেন। ১৯২১ সনে ৫ই ফেব্রুয়ারী স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী কলকতায় দেহ ত্যাগ করেন। ৭ই ফেব্রুয়ারী তার দেহ বরিশাল শংকর মঠে সমাহিত করা হয়।



তথ্যসূত্র: রফিকুল ইসলাম। বরিশাল দর্পণ। ঢাকা, ১৯৯০।