শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল

Barisalpedia থেকে

বরিশাল বিভাগের অন্যতম গৌরবজনক প্রতিষ্ঠান শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ১৯৭০ সালে বরিশাল শহরের সাগরদী এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ.jpg


প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক তাঁর মন্ত্রিত্বকালে (১৯৩৭-৪৩) বরিশালে একটি মেডিকেল স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বরিশাল শহরের আমানতগঞ্জে মেডিকেল স্কুলটিরর ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করা হয়। কিন্তু সে উদ্যোগ তখন সফল হয়নি। শের-এ-বাংলা ১৯৫৪-৫৮ সালে পুনরায় বরিশালে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু তৎকালীন যুক্তফ্রন্টের প্রভাবশালী মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বরিশালের পরিবর্তে চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। শেরে বাংলা তাঁর স্বপ্ন পূরণের পূর্বেই ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। ষাটের দশকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান বিভাগীয় শহর খুলনায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী সবুর খানের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের সুসম্পর্ক ছিল না। এ সুযোগে বরিশালের নেতৃবৃন্দ পাকিস্তানের স্পিকার আবদুল জব্বার খানের নেতৃত্বে খুলনার পরিবর্তে বরিশালে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি করেন। অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো বরিশালে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবে। বরিশালে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় গভর্নর মোনায়েম খান এবং বরিশাল নিবাসী পাকিস্তানের স্পিকার আবদুল জব্বার খানের অবদান রয়েছে। মেডিকেল কলেজের স্থান নির্ধারণ করা হয় দক্ষিণ আলেকান্দার সাগরদি এলাকায়। ১৯৬৮-৬৯ সালে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ১৯৭০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে কলেজ প্রতিষ্ঠিত এবং ছাত্র ভর্তি শুরু হয়। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ হুরমজ আলী। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কলেজের অধ্যক্ষ, ডাক্তার ও ছাত্রগণ অংশগ্রহণ করেন। ডা. শাহজাহান নবম সেক্টরের ডাক্তার ছিলেন। স্বাধীনতার পর বরিশালের মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতের উদ্যোগে বরিশাল মেডিকেল কলেজ আধুনিকীকরণ করা হয়। জনগণের দাবির প্রতি সম্মান রেখে সরকার ১৯৭৭ সালে কলেজের নামকরণ করে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ। কলেজের সাথে রয়েছে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল।

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষগণের কর্মকাল

১. ডা. আনোয়ার সাদিক খাজা (২৮.১১.১৯৬৮ থেকে ০৬.০৩.১৯৭১); ২. অধ্যাপক ছিদ্দিকুল্লাহ (০৭.০৩.১৯৭১ থেকে ০৬.০৬.১৯৭১); ৩. ডা. এম আতাউর রহমান (০৭.০৬.১৯৭১ থেকে ০২.০৫.১৯৭২); ৪. ডা. মোঃ আবদুল রহিম (০৩.০৫.১৯৭২ থেকে ০৭.০৫.১৯৭৩); ৫. অধ্যাপক ছিদ্দিকুল্লাহ (০৮.০৫.১৯৭৩ থেকে ০৩.১০.১৯৭৭); ৬. অধ্যাপক এস এন জামান (০৪.১০.১৯৭৭ থেকে ২৬.১০.১৯৭৭); ৭. ডা মোঃ মমতাজুর রহমান (২৭.১০.১৯৭৭ থেকে ২৯.০৯.১৯৭৮); ৮. ডা. এম আর বি চৌধুরী (৩০.০৯.১৯৭৮ থেকে ০৮.০৭.১৯৮২); ৯. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (০৯.০৭.১৯৮২ থেকে ০১.০৩.১৯৮৩); ১০. অধ্যাপক মোঃ রফিকুল ইসলাম (০৮.০৪.১৯৮৩ থেকে ০৭.০১.১৯৮৪); ১১. অধ্যাপক হাবিবুর রহমান আনছারী (০৮.০১.১৯৮৪ থেকে ১৯.০৮.১৯৮৯); ১২. অধ্যাপক হারুন আর রশীদ (২০.০৮.১৯৮৯ থেকে ২১.১০.১৯৯২); ১৩. অধ্যাপক আজিজুর রহমান (৩১.১০.১৯৯২ থেকে ০৬.১২.১৯৯৩); ১৪. অধ্যাপক মোঃ আবদুল লতিফ (০৭.১২.১৯৯৩ থেকে ১৬.০৫.১৯৯৫); ১৫. অধ্যাপক আবদুল করিম মোল্লা (১৬.০৫.১৯৯৫ থেকে ২৪.০৫.১৯৯৭); ১৬. অধ্যাপক কমলেন্দু বিশ্বাস (২৫.০৫.১৯৯৭ থেকে ৩১.০৮.১৯৯৭); ১৭. অধ্যাপক আবদুল মালেক (০১.০৯.১৯৯৭ থেকে ০১.০৯.১৯৯৮); ১৮. অধ্যাপক কমলেন্দু বিশ্বাস (০২.০৯.১৯৯৮ থেকে ২৯.০৯.১৯৯৮); ১৯. অধ্যাপক মোঃ আবদুল লতিফ (৩০.০৯.১৯৯৮ থেকে ১৩.০৫.২০০০); ২০. অধ্যাপক কমলেন্দু বিশ্বাস (১৪.০৫.২০০০ থেকে ০১.১১.২০০০); ২১. অধ্যাপক রণজিৎ কুমার বিশ্বাস (০২.১১.২০০০ থেকে ২৬.০১.২০০৩); ২২. ডা. আবদুল বাকের খান (২৭.০১.২০০৩ থেকে ২৩.০৩.২০০৫); ২৩. অধ্যাপক ডা. গোলাম মাহমুদ সেলিম (২৫.০৩.২০০৫ থেকে ০১.০৭.২০০৮); ২৪. ডা. সৈয়দ জাহিদ হোসেন (২১.০৫.২০০৮ থেকে ০৩.০২.২০১০); ২৫. ডা. আবরার আহমেদ (০৩.০২.২০১০-?)


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।