শাহ আহম্মদ, হজরত

Barisalpedia থেকে

ষোল শতকের শেষভাগে হজরত শাহ আহম্মদ ও তার পুত্র মীর মোশায়েক বাগদাদ হতে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম আসেন। সেখান থেকে পিতা-পুত্র বাকলায় অর্থাৎ বরিশালে পৌঁছেন।

কথিত আছে তাঁরা নৌকায় সুগন্ধা নদী অতিক্রম করছিলেন। শাহ্ আহম্মদ ধ্যানে ছিলেন। হঠাৎ তার তসবিহ সুগন্ধা নদীতে পড়ে যায়। তখন তিনি খোদাকে স্মরণ করলেন। শব্দ হলো, ‘তুমি এখানে বসবাস করবে’। সুগন্ধা নদী শুকিয়ে গেল এবং নৌকা আটকে পড়লো। তসবিহ উদ্ধার হলো। স্থানীয় সওদাগর শাহ আহম্মদের সাথে দেখা করেন এবং তার গ্রামে শাহ আহম্মদকে বাস করতে অনুরোধ করেন। সে মোতাবেক শাহ আহম্মদ ঝালকাঠির উদ্চাড়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন এবং সওদাগরের কন্যাকে বিয়ে করেন। তিনি দুই ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে উদ্চাড়া গ্রামে বাস করতেন।

শাহ আহম্মদের পুত্র মীর মোশায়েক তেরআনা গ্রামে বাস করতেন। পিতা-পুত্র উভয়ে বিখ্যাত সুফী-সাধক ছিলেন। ইসলাম প্রচারে মীর মোশায়েক ও তার পিতার নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মোগল স¤্রাট তাদের বাগপুরে লাখেরাজ সম্পত্তি দিতে চাইলেন। কিন্তু শাহ্ আহম্মদ বিনা খাজনায় ভূমিদান গ্রহণে অস্বীকার করেন। স¤্রাট গ্রামটির রাজস্ব মাত্র তেরআনা ধার্য করেন। তাই গ্রামের নাম তেরআনা। উদ্চাড়া গ্রামে শাহ্ আহম্মদের মাজার আছে। শাহ্ আহম্মদের মাজারে যুগ যুগ ধরে দুটি শেরবাজ পাখি শিমুল গাছে বাস করতো। উঁচু দেয়াল দিয়ে তার মাজার ঘেরা আছে। মাজারের উপরে ছাদ ছিল, তা ভেঙ্গে পড়েছে। তার মাজারের নিকটে তার দুই ছেলের মাজার আছে।



তথ্যসূত্র: সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ২০১০।