শামসুদ্দীন আবুল কালাম

Barisalpedia থেকে

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সার্থকভাবে উপন্যাসে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে শামসুদ্দীন আবুল কালামের সাথে তুলনীয় আর কোনো ঔপন্যাসিক বিরল। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও চলচ্চিত্রনির্মাতা ।

শামসুদ্দীন আবুল কালাম.jpg


জন্ম, নামকরণ, পূর্বপুরুষ ও শৈশব

শামসুদ্দীন আবুল কালাম ১৯২৬ সালের ১ এপ্রিল বৃহত্তর বরিশালের অন্তর্গত বর্তমান ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কামদেবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল কাঞ্চন যা আদরে উচ্চারিত হতো কাঞ্চু রূপে (জামান ১৩০)। ১৯৫৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত তাঁর নাম ছিল আবুল কালাম শামসুদ্দীন। সমসাময়িক কালের বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন-এর সাথে তাঁর নাম মিলে যাওয়ায় পাঠকের বিভ্রান্তি দূরীকরণার্থে ১৯৫৫ সালে তাঁর প্রকাশিত ‘দুই হৃদয়ের তীর’ শীর্ষক গল্পগ্রন্থে প্রথম তিনি নিজের নাম পরিবর্তিত বিন্যাসে শামসুদ্দীন আবুল কালাম লিখতে শুরু করেন (মতিন ১৬২)।

শামসুদ্দীন আবুল কালামের পিতার নাম জনাব আকরাম মুন্সী বা মতান্তরে আকরাম আলী এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা ওরফে ফুলমেহের (জামান ২০০)। পিতা জনাব আকরাম মুন্সী একজন সমাজসেবী লোক ছিলেন। তাঁরই প্রচেষ্টায় নলছিটি হাট থেকে চামটা হাট পর্যন্ত জেলা বোর্ড কর্তৃক ১৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছিল (জামান ১২৮)। শামসুদ্দীন আবুল কালামের কোনো ভাই ছিল না। তাঁর চার জন বোন ছিলেন। বিষখালি নদীর পারে ভবানীপুর লঞ্চ স্টেশন থেকে এক মাইল দূরে অবস্থিত কামদেবপুর গ্রামে দুই প্রতিপত্তিশালী ভাই ছিলেন জহির ও জব্বর। জহিরের পুত্র জিকিরউল্লা আর জব্বরের পুত্র রাজাউল্লা। জিকিরউল্লার দুই ছেলে আকরাম ও একরাম। আকরাম আলীর একমাত্র পুত্র কাঞ্চন অর্থাৎ শামসুদ্দীন আবুল কালাম (জামান ১৩০)। আকরাম আলী বরিশাল কোর্টে নিম্নপদের কর্মচারী ছিলেন (জামান ১৩১)। তখন মুসলমানরা খুব একটা দাপ্তরিক কোনো পদে ছিল না বলেই এই ছোট পদে চাকুরি করেও শেরে বাংলার সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। সে সুবাদে জনাব আকরাম আলী তাঁর ইউনিয়নে ঋণশালিসী বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন (জামান ১৩১)।

সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে তাঁর বাবা আকরাম আলী বরিশালের গোরাচাঁদ দাস রোডে টিনের একটি বাসা তৈরি করেছিলেন (জামান ১৩০)। এই বাড়িতে থেকেই তিনি বরিশাল জিলা স্কুলে লেখাপড়া করেন এবং বরিশাল জিলা স্কুল থেকেই ম্যাট্রিক পাস করে ১৯৪১ সালে তিনি বিএম কলেজে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে ভর্তি হন। কলেজে থাকতে তিনি রিভোলুশনিস্ট সোশালিস্ট পার্টির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৪৫ সালে আজাদ হিন্দ ফৌজের বন্দী সৈন্যদের মুক্তির দাবিতে বরিশালে যে মিছিল হয় তাতে তিনি সাংবাদিক আবদুল খালেক খান, দৈনিক পাকিস্তানের প্রথম বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রমুখের সাথে মিছিলের প্রথম সারিতে ছিলেন।

শিক্ষা ও সাহিত্যে হাতেখড়ি

স্কুল জীবনেই তাঁর সাহিত্যে হাতেখড়ি। বিএ ক্লাসের ছাত্র হওয়ার আগেই লিখেছেন তাঁর বিখ্যাত গল্প ‘শাহেরবানু’। পটুয়াখালির তৎকালীন মুন্সেফ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত গল্পটির অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র দৈনিক ‘স্বাধীনতা’র সম্পাদক ও বিখ্যাত গল্পলেখক সোমনাথ লাহিড়ী গল্পটির প্রশংসাসূচক সমালোচনা লিখেছিলেন। ১৯৪৬ সালে বিএ পরীক্ষার পর তিনি সাহিত্যকর্মে আরো নিবিষ্ট হন। তখন বরিশাল থেকে ‘সাত সতেরো’ নামে একটি একটি কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়। বিএম কলেজের বাংলার অধ্যাপক সুধাংশু চৌধুরী এবং শামসুদ্দীন আবুল কালাম যথাক্রমে সংকলনটির সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। এই সংকলনে অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, জীবনানন্দ দাশ, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের পাশাপাশি শামসুদ্দীন আবুল কালামেরও তিনটি কবিতা ছিল।

দাম্পত্য ও কর্মজীবন

১৯৪৬ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ- তে ভর্তি হওয়ার পর কোলকাতায়ই শামসুদ্দীন আবুল কালামের সাথে পরিচয় ঘটে হোসনে আরা ওরফে বিজুর সাথে। ‘সাত সতেরো’ নামক কবিতা পত্রিকায় হোসনে আরাকে নিয়ে তাঁর লিখিত কবিতা প্রকাশিত হয়। দেশবিভাগোত্তর ১৯৫০ এর পরে বাবা-মা এবং বড় দুলাভাই প্রফেসর মকসুদ আলীর অমতে তিনি ঢাকায় হোসনে আরার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন এবং স্ত্রী ও স্ত্রীর এক ছোট ভাইকে নিয়ে আজিমপুর কলোনির একটি বাসায় সংসার রচনা করেন (জামান ১৩২)।

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পরেও তিনি কলকাতায় ছিলেন। কোলকাতায় গিয়ে জুনিয়র বন্ধু নির্মল সেন তাঁকে বরিশালে আসার কথা বললে তিনি নির্মল সেনকে বলেছিলেন- ‘নির্মল ওটা কাঠমোল্লাদের দেশ হবে। আমি যাব না। তুই ফিরে যা’ (জামান ৩২)। ১৯৫০ সালে অবশ্য তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় তিনি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকারের প্রচার ও তথ্য দপ্তরে অর্থাৎ রেডিও পাকিস্তানে প্রথমে স্টাফ আর্টিস্ট ও পরে এ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদে যোগ দেন। এখানে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, ফররুখ আহমদ ও সৈয়দ আলী আহসানের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব হয় (জামান ৩৫)। শিঘ্রই তিনি ঢাকায় কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের প্রচার ও তথ্য দপ্তরের আঞ্চলিক অফিসে যোগ দিয়ে ‘মাহে নও’ পত্রিকা সম্পাদনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন (মতিন ১৬১)। এ সময় তিনি আজিমপুর কলোনিতে থাকতেন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, কবি গোলাম মোস্তফা, আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ তখন তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন। এ সময়কালে তিনি পাকিস্তানের প্রথম মাসিক ‘সিনেমা’ পত্রিকায় উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করতেন। এই পত্রিকার উপদেষ্টা হিসেবে তিনি ব্যবহার করতেন ছদ্মনাম ‘আল-বেরুনী’। এই ছদ্মনামে তিনি ধারাবাহিক নাটক লিখতেন ‘সিনেমা’ পত্রিকায়।

সাঈদা আখতার খুকুর বর্ণনামতে তিনি সরকারি কাজে করাচিতে থাকাকালীন তাঁর মাতা ফুলমেহের মারা যান। করাচী থেকে দেশে ফিরে শামসুদ্দীন আবুল কালাম মায়ের শোকে ভেঙ্গে পড়েন। তখন তাঁর বাবাও অসুস্থ। তিনি বরিশাল থেকে তাঁর ছোট দুই বোনকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। কিন্তু স্ত্রী হোসনে আরার সাথে বনিবনা না হওয়ার কারণে বোনদেরকে নিজের বাসায় রাখতে পারলেন না। এসব থেকেই স্ত্রীর সাথে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে। এক পর্যায়ে স্ত্রী হোসনে আরা বিজু শামসুদ্দীন আবুল কালামকে পরিত্যাগ করে উদীয়মান অভিনেতা গোলাম মুস্তাফার সাথে পরিণয়াবদ্ধ হন। সাথে নিয়ে যান শামসুদ্দীন আবুল কালামের একমাত্র কন্যা ক্যামেলিয়াকে। ক্যামেলিয়া পরবর্তীতে গোলাম মুস্তাফার নামেই পরিচিত হর ক্যামেলিয়া মুস্তাফা রূপে। দুঃখজনকভাবে আমাদের কাছে এ মর্মে কোনো তথ্য নেই যে হোসনে আরা বিজুর সাথে শামসুদ্দীন আবুল কালামের কত তারিখে বিয়ে হয়েছিল এবং কত তারিখে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছিল।

১৯৫৬-৫৭ সালে তিনি জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান ইউনেসকোর ফেলোশিপ লাভ করে ছ’মাসেরও অধিককাল পশ্চিম ইউরোপের কয়েকটি দেশ সফর করেন। ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ ইতালীর সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘সিনে সিত্তা’য় (ঈরহব ঈরঃঃধ) ফটোগ্রাফি, সেট ডিজাইনিং, পাশ্চাত্য সংগীত এবং চলচ্চিত্র সম্পাদনা সম্পর্কে শিক্ষালাভের জন্য তিনি রোমে ফিরে যান। আশ্চর্যজনক যে তিনি সেবার রোম যান বিমানে নয় বরং জাহাজে। ঢাকা থেকে বিমানে করাচী গিয়ে সেখান থেকে সমুদ্রপথে ভূমধ্যসাগর হয়ে প্রায় মাসখানেক বসে তিনি ইতালী ফৌঁছেছিলেন (জামান ১৪৩)। ১৯৬১ সালে তিনি রোম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট. উপাধি লাভ করেন এবং রোমের ‘এক্সপেরিমেন্টাল সেন্টার অব সিনেমাটোগ্রাফি’ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে একটি ডিপ্লোমা লাভ করেন। ইতালিতে তিনি বিখ্যাত পরিচালক ভিতোরিয়ো ডি সিকা’র সহযোগী হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তাছাড়া ‘লা স্ত্রাদা’ নামের বিখ্যাত চলচ্চিত্রের পরিচালক ফ্রেডারিকো ফেলিনি’র পরবর্তী ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবেও তিনি আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন (মতিন ১০)। জাতিংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার আওতায় প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ শাখায় কাজ করতেন চাকুরি হিসেবে। ১৯৬৪ সালে শামসুদ্দীন আবুল কালাম সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।

অসুস্থতা ও মৃত্যু

১৯৯০ সালে তিনি ফুসফুস ও হৃদরোগে বেশ ভুগেছেন। ৩ অক্টোবর ১৯৯০ তারিখের চিঠিতে জানা যায় ভেরোনায় তাঁর ফুসফুসে ও হৃদপিন্ডে সার্জারি হয়েছে। ১৯৯৩ সালের পর থেকে চোখের গ্লকোমা তীব্র হতে থাকে। ১৯৯৪ সালের পরে পুরো সুস্থ তিনি আর কখনো হননি। ১৯৯৭ সালের ১০ জানুয়ারি রোমে তাঁর এ্যাপার্টমেন্টে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃত্যুর সঠিক তারিখ আজও অজানা। তবে সেলিনা বাহার জামানের বক্তৃতা থেকে জানা যায় যে এই খবরটি বাংলাদেশে এসেছে মার্চের ১২ তারিখের পরে।

গ্রন্থাবলি

১) শাহের বানু: এটি শামসুদ্দীন আবুল কালামের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। ১৯৪৫ সালে এটি কলকাতা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় প্রকাশ কোলকাতার নবযুগ প্রকাশনী কর্তৃক ১৯৫৭ সালে। উৎসর্গ: অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত। ২) অনেক দিনের আশা। ওয়াসী বুক সেন্টার, ঢাকা। সেপ্টেম্বর ১৯৫২। ৩) পথ জানা নাই: এটি ১৯৫৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। ৪) ঢেউ। ওয়াসী বুক সেন্টার। মার্চ ১৯৫৩। প্রচ্ছদ: আমিনুল ইসলাম। উৎসর্গ: নেই। মূল্য: ২ টাকা। ৫) দুই হৃদয়ের তীর। কোহিনুর লাইব্রেরী, ঢাকা। ১৯৫৫। প্রচ্ছদ: আখতারুজ্জামান। উৎসর্গ: সৈয়দ আজিজুল হক। ৬) পুঁই ডালিমের কাব্য। মুক্তধারা। ১৯৮৭। প্রচ্ছদ: হাশেম খান। উৎসর্গ: ডক্টর শিশির কুমার বরাট। মূল্য: ৩২টাকা। ৭) মজাগাঙের গান। মুক্তধারা। মার্চ ১৯৮৭। প্রচ্ছদ: সিরাজুল হক। উৎসর্গ: বেগম আনোয়ারা বাহার চৌধুরী। মূল্য: ৩০ টাকা।


উপন্যাস

১। কাশবনের কন্যা। এটি শামসুদদীন আবুল কালামের প্রথম উপন্যাস এবং এটি ১৯৫৪ সালে (বাংলা ১৩৬১) ওসমানিয়া বুক ডিপো থেকে প্রকাশিত হয়। অবশ্য এটি লেখা হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। ১৯৮৩-৮৪ (বাংলা ১৩৯০-৯১) সালে এটি পুনর্লিখিত হয় এবং এর পুনর্লিখিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে মুক্তধারা বইটির রজত জয়ন্তী সংস্করণ প্রকাশ করে। এই গ্রন্থের সুবাদেই তিনি ১৯৬৪ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। ২। আলমনগরের উপকথা। কোহিনুর লাইব্রেরী, ঢাকা। ১৯৫৪। মূল্য চার টাকা। উৎসর্গ: মোসাম্মৎ নগিনা খাতুন ও মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। রচনাকাল ১৯৫২। এর পূর্বনাম ছিল ‘দুই মহল’। ৩। আশিয়ানা। জাহাঙ্গীরনগর পাবলিসিং হাউস। জুলাই ১৯৫৫। প্রচ্ছদ: হাবিবুল্লা খান। উৎসর্গ: জয়নুল আবেদীন। মূল্য: এক টাকা চারি আনা। ৪। জীবনকাব্য। দি প্যারাডাইজ লাইব্রেরী। ১৯৫৬। প্রচ্ছদ: মোস্তফা শওকত কামাল। উৎসর্গ: জনাব আবু হোসেন সরকার। মূল্য: ৩ টাকা। রচনাকাল: ১৯৪৭-১৯৫৩। ৫। কাঞ্চনমালা। ওসমানিয়া বুক ডিপো। ১৯৬২। দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৯৭৪। মূল্য ৯.৫০টাকা। বেদে সম্প্রদায়ের জীবনালেখ্য। ৬। জায়জঙ্গল। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ঢাকা। ১৯৭৮। প্রকাশক পাওয়া না যাওয়ায় এ উপন্যাসটি লেখককে নিজ অর্থে প্রকাশ করতে হয়েছিল। ৭। মনের মতো ঠাঁই। মুক্তধারা, ঢাকা। ১৯৮৫। ৮। সমুদ্রবাসর। মুক্তধারা, ঢাকা। ১৯৮৬। ৯। যার সাথে যার। মুক্তধারা, ঢাকা। ১৯৮৬। ১০। নবান্ন। মুক্তধারা, ঢাকা। ১৯৮৭। ১১। কাঞ্চনগ্রাম। সাহিত্য প্রকাশ, ঢাকা। ১৯৯৮। ১৯৭২ সালের জুন ও জুলাই মাসে ঢাকায় অবস্থান কালে এবং রোমে ফিরে আসার পরে ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসে শামসুদ্দীন আবুল কালাম এ উপন্যাসের খসড়া প্রস্তুত করেন। একই সাথে উপন্যাসটির বাংলা ও ইংরেজি চিত্রনাট্যও প্রস্তুত করেন। ১৯৮৬ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৮৭ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে রোম ও মিলান শহরের সান রাফায়েল হাসপাতালে উপন্যাসটি পুনর্লিখন করেন। ১৯৮৭ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে ঢাকায় অবস্থান কালে লেখার কাজ শেষ করেন (মতিন ৩০)।


কিশোর উপন্যাস

১। রাতের অতিথি। দেবসাহিত্য কুটীর, কোলকাতা। প্রকাশ সন বাংলা ১৩৫১ মোতাবেক ১৯৪৫ খৃস্টাব্দ। ২। কাকলী মুখর। বেঙ্গল পাবলিশার্স, কোলকাতা। প্রকাশকাল ১৯৪৮এর পূর্বে কোনো সময়। ৩। সবাই যাকে করলো হেলা। ওসমানিয়া বুক ডিপো, ঢাকা। দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৯৬৫।

পত্রসংকলন

১। কুসুমেষু। ম্যাগনামওপাস, ঢাকা। মার্চ ২০০৬। গ্রন্থনা: ফখরুজ্জামান চৌধুরী। ২। শামসুদ্দীন আবুল কালাম ও তাঁর পত্রাবলী। র‌্যাডিক্যাল এশিয়া পাবলিকেশনস, ঢাকা। ২০০৬। সম্পাদনা: আবদুল মতিন। এটি ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত লন্ডন নিবাসী জনাব আবদুল মতিনকে লেখা শামসুদ্দীন আবুল কালামের ৪৭টি চিঠির একটি সংকলন। এই ৪৭টি চিঠি ছাড়াও বইয়ে রয়েছে অন্নদাশঙ্করের কাছে লেখা একখানা চিঠি এবং দিল্লি নিবাসী দেবীপ্রসাদ দাসের কাছে লেখা একটি চিঠি।


অপ্রকাশিত গ্রন্থ

১. সনারগাঁও।

২. দুমুড়ি সময়।

৩. কল্যাণীয়াসু / ক্যামেলিয়ার চিঠি। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]। ৪. সিরতাকী। ৫. ক্ষীর সাগর। ৬. পালতোলা নাও। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]। ৭. ঢেউ ভরা নদী। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]। ৮. সাগর ঠিকানা। ৯. কূলউপকূল। ১০. জীবনবহতা। ১১. ঈষদাভাস । জনাব আবদুল মতিন ১৯৯৬ সালে রোমে জনাব শামসুদ্দীন আবুল কালামের সাথে দেখা করেন। সেখানে তিনি জানতে পারেন যে শামসুদ্দীন আবুল কালাম তাঁর আত্মজীবনীর প্রথম খণ্ড প্রায় পাঁচশো পৃষ্ঠা পর্যন্ত লিখে ফেলেছেন এবং এই প্রথম খণ্ডের নাম দিয়েছেন ‘ঈষদাভাস’। ১২. জনৈক লেখকের জন্ম। ১৩. বয়ঃসন্ধিকাল। ১৪. দি গার্ডেন অব কেইন ফ্রুটস। এটি তাঁর ‘নবান্ন’ উপন্যাসের ইংরেজি ট্রান্সক্রিয়েশন। বইটি ব্রিটেনের খ্যাতনামা পুস্তক প্রকাশক হাইনেম্যান থেকে প্রকাশের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি (মতিন ২৫)। ১৫. দি ব্যাটেল অব বাংলাদেশ। এটি পরবর্তীতে বাংলায় ‘কাঞ্চনগ্রাম’ নামে লিখিত হয় (মতিন ২৯)। ১৬. শরৎ চন্দ্রের ‘মহেশ’ অবলম্বনে একটি নাটক। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]। ১৭. শেলীর জীবনী অবলম্বনে লিখিত একটি নাটক। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর লশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]। ১৮. দুঃখমোচন। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]। ১৯. পলিমাটির দেশ। [২৫/১১/১৯৯৪ তারিখে ভাগ্নে অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কাছে লেখা চিঠি থেকে জ্ঞাত]।



উদ্ধৃত গ্রন্থাবলি: ১. জামান, সেলিনা বাহার (সম্পা.)। শামসুদ্দীন আবুল কালাম স্মারক গ্রন্থ। বুলবুল পাবলিশিং হাউস, ঢাকা। ১৯৯৮। ২. মতিন, আবদুল। শামসুদ্দীন আবুল কালাম ও তাঁর পত্রাবলী। র‌্যাডিকাল এশিয়া পাবলিকেশনস, ঢাকা। ২০০৬।