রফিকুল ইসলাম,অধ্যাপক ও রাজনীতিবিদ

Barisalpedia থেকে

অধ্যাপক ও রাজনীতিবিদ রফিকুল ইসলামের ১৯২০ সালের ১৬ জুন। মৃত্যু ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই। পিতা মৌলভী আবদুল ওয়াজেদ। তাঁর মা মজিবুননেছা বেগম শেরে বাংলার ফুপাতো বোন ছিলেন। গ্রাম: বলহার কাঠি, থানা- বানারীপাড়া, জেলা- বরিশাল।

শিক্ষাজীবন

রফিকুল ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বানারীপাড়ার খলিসাকোটা স্কুলে। ১৯৩০ সালে তিনি বরিশাল জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৩৫ সালে কমিউনিস্ট পার্টির অঙ্গসংগঠন ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন। কমিউনিস্ট আন্দোলনের কর্মী হিসেবে গ্রেফতার হন। ১৯৩৬ সালে জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৩৮ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করে কোলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। পরে কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশে মেডিকেল কলেজ ছেড়ে বরিশালের আন্দোলনের প্রয়োজনে বিএম কলেজে বিএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৪২ সালে ডিস্টিংশন সহ বিএ পাস করেন। বিএ পাস করে কোলকাতায় গমন করেন এবং ১৯৪৩-৪৫ সময়কাল কোলকাতায় সরকারের খাদ্য বিভাগে চাকুরি করেন। পার্টির নির্দেশে পুনরায় চাকুরি ছেড়ে বানারীপাড়ায় আসেন এবং স্কুলে শিক্ষকতা করেন। এই সময় প্রাইভেটভাবে এমএ ও বিএল পাস করেন।

চাকুরি ও কর্মজীবন

১৯৫১ সালে রফিকুল ইসলাম চাখার ফজলুল হক কলেজে বাংলায় অধ্যপনার চাকুরি গ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে রাজনীতি করার অভিযোগে চাকুরিচ্যূত হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করেন এবং যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে তিনি পুনরায় চাখার কলেজে বহাল হন। ১৯৫৬ সালে তিনি বিএম কলেজে বাংলার শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫৭ সালে ইতিহাস সমিতি গঠন করে বরিশালে সিপাহি বিদ্রোহের শতবর্ষ পালন করেন। এছাড়া বরিশালে সাহিত্য মজলিসের উদ্যোগে সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠান করেন। ১৯৫৭-৬৫ সাল সময়কাল তিনি বরিশাল ন্যাপের জেলা কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৫৭ সালে বরিশাল সমাজ সেবা পরিষদ গঠন করেন। ১৯৬০ সালে বরিশাল খেলাঘরের অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৬০ সালে বরিশাল প্রাদেশিক সাহিত্য সম্মেলনে অভ্যর্থনা কমিটির সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ন্যাপ দ্বিধাবিভক্ত হলে তিনি ভাসানী ন্যাপের বরিশালের সভাপতি হন। ১৯৬৫ সালে বিএম সরকারি হলে তিনি চাকুরি ছেড়ে দিয়ে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৬৬ সালে ঢাকা বারে যোগদান করেন এবং ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।

পারিবারিক জীবন

রফিকুল ইসলামের আরো দুই ভাই ও তিন বোন ছিলেন। ভাইদের নাম: এ কে এম ওয়ালিউল ইসলাম ও এ বি এম জিয়াউল ইসলাম। তাঁর নিজের এক কন্যা ও পাঁচ পুত্র। কন্যা নার্গিস রফিকা বানু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ এবং লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। জ্যেষ্ঠ পুত্র মনিরুল ইসলাম মনি বরিশাল- ২ আসন (উজিরপুর-বানারীপাড়া) থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মৃত্যু

১৯৬৮ সালের ১ জুলাই অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম অকালে মৃত্যু বরণ করেন। বরিশালে পুরাতন মুসলিম গোরস্তান থেকে ধোপাবাড়ির দিকের রাস্তাটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে।


তথ্যসূত্র: সংগ্রামের অপর নাম অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সম্পাদক: সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। ঢাকা: ভাস্কর প্রকাশনী। ২০০৮।