যোগেশচন্দ্র বাগল

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১২:৪৩, ১৩ জুলাই ২০১৬ পর্যন্ত সংস্করণে ("বিখ্যাত পণ্ডিত, সাংবাদিক ও সম্পাদক। জন্মস্থান পিরোজপুর..." দিয়ে পাতা তৈরি)

বিখ্যাত পণ্ডিত, সাংবাদিক ও সম্পাদক। জন্মস্থান পিরোজপুর সদর থানার কুমিরমারা গ্রাম। উল্লেখ্য সংসদ বাঙালি চরিতাভিধানে তাঁর জন্মস্থান ‘কুমিরমারা, বরিশাল’ উল্লিখিত আছে। বৃহত্তর বরিশালে একটি কুমিরমারা গ্রাম রয়েছে পিরোজপুর সদর থানায়, একটি রয়েছে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নে এবং আরো একটি কুমিরমারা গ্রাম রয়েছে পটুয়াখালি জেলার কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে। অনুমিত হয় এই তিনটি কুমিরমারা গ্রামের মধ্যে যোগেশচন্দ্র বাগলের গ্রামটি পিরোজপুর সদর থানারটিই হবে। জন্ম ২৭ মে ১৯০৩। মৃত্যু ৭ জানুয়ারি ১৯৭২। পিতা জগবন্ধু বাগল। মাতা তরঙ্গিনী দেবী।

বরিশাল ও কলকাতায় শিক্ষালাভ করে যোগেশচন্দ্র ১৯২৬ খৃস্টাব্দে সিটি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েট হন। ১৯২৯ খৃস্টাব্দে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন। এখানে সহকর্মী ছিলেন ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস, নীরদ চৌধুরী প্রমুখ গবেষক ও সাহিত্যিকবৃন্দ। তাঁদের প্রেরণায় তিনি গবেষণা কার্যে মনোনিবেশ করেন। ১৯৪০ খৃস্টাব্দে তাঁর গবেষণামূলক গ্রন্থ ‘ভারতে মুক্তিসন্ধানী’ প্রকাশ হবার সঙ্গেই তিনি সুপরিচিত হন। ১৯৩৫ খৃস্টাব্দে ‘দেশ’ পত্রিকায় যোগ দেন এবং এখানে আন্তর্জাতিক বিষয়ে লিখতেন। ১৯৪১ খৃস্টাব্দে ‘প্রবাসী’তে ফিরে যান এবং ১৯৬১ খৃস্টাব্দে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলার পূর্ব পর্যন্ত নিয়মিত কাজ করেছেন। অন্ধ অবস্থাতেও তাঁর গবেষণায় বিরাম ছিলনা। এই সময়ে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থ সম্পাদনা, নিজের ‘হিন্দুমেলার ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থ পরিমার্জনা এবং ‘ভারতকোষ’ ও সাহিত্য-সাধক-চরিতমালার কাজ করেছেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে ১৯৩১ খৃস্টাব্দে থেকে নানাভাবে যুক্ত ছিলেন। ইন্ডিয়ান হিস্টরিক্যাল রেকর্ডস কমিশন, রিজিয়োন্যাল রেকর্ডস কমিশন (পশ্চিমবঙ্গ)-এর সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি সাহিত্য সংসদ কর্তৃক তিন খন্ডে প্রকাশিত ‘বঙ্কিম রচনাবলী’ এবং ‘রমেশ রচনাবলী’র সম্পাদনা করেছেন। বাংলা সাহিত্য বিষয়ে ও গবেষণায় তাঁর কাজের স্বীকৃতিতে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ তাঁকে ‘রামপ্রাণ গুপ্ত পুরস্কার’ দেন (১৯৫৬)। এ ছাড়া তিনি ‘সরোজিনী বোস স্মৃতি স্বর্ণপদক’ (১৯৬২) ও ‘শিশিরকুমার পুরস্কার’ (১৯৬৬) লাভ করেন। ১৯৫৮ খৃস্টাব্দে বিদ্যাসাগর স্মৃতি বক্তৃতা এবং ১৯৬৮ খৃস্টাব্দে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মৃতি বতৃতা দেন। স্ত্রী শিক্ষা সম্বন্ধে তাঁর লেখা women’s education in Eastern India এবং ‘স্ত্রীশিক্ষার কথা’ বই দু-খানি বিশেষ তথ্যবহুল। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৫-এরও বেশি। রচিত গ্রন্থ: ‘সাহসীর জয়যাত্রা’, ‘মুক্তির সাধনে ভারত’, ‘ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা’, ‘ভারতের স্বাধীনতা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’, ‘কলিকাতার সংস্কৃতিকেন্দ্র’, ‘বিদ্রোহ ও বৈরিতা’ Peasant Revoiution of Bengal প্রভৃতি।



তথ্যসূত্র: বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা: সাহিত্য সংসদ। ২০১৩।