মোহন মুরালী বাদশার কেচ্ছা

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৪:১৪, ২৩ মার্চ ২০১৬ পর্যন্ত সংস্করণে ("মোহন মুরালী বাদশার কেচ্ছা বরিশালের একটি জনপ্রিয় লোককাহ..." দিয়ে পাতা তৈরি)

(পরিবর্তন) ←পুর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ→ (পরিবর্তন)

মোহন মুরালী বাদশার কেচ্ছা বরিশালের একটি জনপ্রিয় লোককাহিনী। কাহিনী সংক্ষেপ নি¤œরূপ। মোহন মুরালী বাদশার উপরে বৈতাল পরির নজর পড়লে সোনা কণ্যার সাথে তার বিয়ে হয় এবং বিয়ের রাতে বৈতাল পরি তার রুহ নিয়ে চলে যায় । পরের দু‘রাতে বৈতাল এসে, মোহনকে জাগিয়ে, তার সাথে খানাপিনা করে। আবার অজ্ঞান করে রেখে যায়। তৃতীয় রাত্রে সোনা কণ্যার সাথে তার মা, মৃত পুত্রের কন্ঠস্বর শুনে এগিয়ে গেলে, বৈতাল পরি অজ্ঞান মোহন মুরালী বাদশাকে বহুদূরে নিয়ে যায়। সোনা কণ্যা গণনার মাধ্যমে স্বামীর অবস্থান নির্ণয় করে ছ‘মাস পরে এক জঙ্গলে গিয়ে তাকে মৃতবৎ পায়। তারা পরস্পর কথা বলে পালানোর পন্থা স্থির করলে, পরির গণনায় তা ধরা পড়ে এবং মোহন মুরালী বাদশাকে সে কোকাফ শহরে নিয়ে যায়। সোনা কণ্যা সেই কোকাফ শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং পথিমধ্যে তোতাপাখির কায়াধারী এক দেওয়ের সাহায্যে কোকাফ শহরে যায়। সেখানে ঢুলীওয়ালার গায়ে জ্বর চালান দিয়ে ঢোল বাজানোর সুযোগ লাভ করে পরিদের নৃত্য অনুষ্ঠানে সোনা কন্যা যোগ দেয়। তারপর বৈতাল পরির মাতার কাছ থেকে তার স্বামীকে লাভ করে এবং বৈতাল পরিকে ক্ষমা করে দিয়ে তারা তিনজন দেশে চলে আসে। দেশে এসে এক গণনার সাহায্যে সোনা কণ্যা এবং বৈতাল পরি জানতে পারে, মোহন মুরালী বাদশার অদৃষ্টে আরো বার বছরের দুঃখ লেখা আছে। অতঃপর তারা বাসগৃহের মধ্যে আত্মগোপন করে থাকে। মোহন মুরলী বাদশা ঠগ রাজার মেয়ে, দুষ্ট নারীকে বিয়ে করে ঘরে আনে। বাপ মারা গেলে দুষ্ট নারী তার গুপ্তধনের কথা পিতার নিকট থেকে জানতে পেরে তা সকলের অগোচরে রাখে। এরপর দুষ্ট নারীর কথামতো বাদশা, সাতদিন পর্যন্ত দান-খয়রাত দিয়ে শেষতক পাঁচ টাকার জন্য তার বাদশাহী একজনের কাছে দায়বদ্ধ রাখে। স্বামীর অবস্থা খারাপ হয়ে যেতেই দুষ্ট নারী পিত্রালয়ে চলে গিয়ে এক কোতয়ালের সাথে অভিসারে লিপ্ত হয়। তারপর মোহন মুরালী বাদশা আম এবং কলা হাটে বিক্রি করতে নিয়ে গেলে তাও তারা যুক্তি করে খেয়ে ফেলে। তারপর দুষ্ট নারী ভাইয়ের বিয়েতে মোহন মুরালী বাদশা দাওয়াত খেতে গিয়ে দুষ্ট নারীর হাতে অপমানিত হয়। জল্লাদ দয়াপরবশ হয়ে তার প্রাণ ভিক্ষা দেয়। সোনা কন্যা আড়ালে লুকিয়ে থেকে দুষ্ট নারীর নিকট হতে পৈত্রিক ধনের সন্ধান লাভ করে সেগুলো অন্যত্র লুকিয়ে রাখে। দুষ্ট নারী কোতয়ালকে নিয়ে সে ধন আনতে গিয়ে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে এসে কোতয়াল কর্তৃক প্রহৃতা হয় । মোহন মুরালী বাদশার সুখৈশ্বর্য আবার ফিরে আসে। সোনা কণ্যা এবং বৈতাল পরির আবার আবির্ভাব হয়। দুষ্ট নারীকেও আবার স্বগৃহে আনা হয় এবং শূলে চড়ানো হয়। কোতয়াল নদীতে ডুবে মরে।


তথ্যসূত্র: সাইফুল আহসান বুলবুল। বৃহত্তর বরিশালের লোকসংস্কৃতি। গতিধারা, ঢাকা।