"মোয়াজ্জেম হোসেন, লে. কমান্ডার"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
("আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম প্রধন অভিযুক্ত পিরোজপুর..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম প্রধন অভিযুক্ত পিরোজপুরের লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় নিহত হন। তিনি একদফা বা বাংলার স্বাধীনতার প্রবক্তা ছিলেন। তিনি লাহোর প্রস্তাব কি, কেনো এবং এক দফা কি ইত্যাদি নামে কয়েকটি পুস্তক রচনা করেন। তিনি একজন সৈনিকই ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন বলিষ্ঠ রাজনীতিবিদ, চিন্তাবিদ লেখক।
+
শহীদ লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন (১৯৩২-১৯৭১) ১৯৩২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর জেলার সদর থানায় ডুমুরতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোফাজ্জল হোসেন। মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৪৭ সালে বাগেরহাটের কচুয়া হাইস্কুল হতে মেট্রিক এবং ১৯৪৯ সালে বরিশাল বিএম কলেজ হতে আইএসসি পাস করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। তিনি লন্ডনে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ১৯৬৭ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কমান্ডার পদে উন্নীত হন। তিনি ১৯৬২ সাল হতে সেনাবাহিনেিত বাংঙালি সৈনিকদের নিয়ে বিএলএফ গঠন করেন। তাকে এক নম্বর আসামী করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয় এবং তাঁকে ১৯৬৮ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। তার ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়। পরে এ মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নম্বর আসামী করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে। ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের ফলে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকলে মুক্তি পান। বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন দল গঠন করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধর ভাষণের পর তিনি প্রাক্তন বাঙালি সৈনিকদের সংগঠিত করেন। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নিকট সংবাদ ছিল যে, লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন বাঙালি সৈন্যদের নিয়ে ২৬ মার্চ ঢাকা সেনানিবাস আক্রমণ করবে। তাই একদনি পূর্বে পাকসেনারা বাঙালিদের আক্রমণ করে এবং ২৬ মার্চ প্রত্যূষে লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনকে হত্যা করে। তাঁর লাশ পাওয়া যায়নি। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র রেখে যান। শিশুপুত্র পিতার নির্মম হত্যাকা- দেখে নির্বাক পঙ্গু হয়ে যায়।
 +
 
 +
----
 +
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।

০৮:২১, ২৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ

শহীদ লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন (১৯৩২-১৯৭১) ১৯৩২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর জেলার সদর থানায় ডুমুরতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোফাজ্জল হোসেন। মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৪৭ সালে বাগেরহাটের কচুয়া হাইস্কুল হতে মেট্রিক এবং ১৯৪৯ সালে বরিশাল বিএম কলেজ হতে আইএসসি পাস করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। তিনি লন্ডনে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ১৯৬৭ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কমান্ডার পদে উন্নীত হন। তিনি ১৯৬২ সাল হতে সেনাবাহিনেিত বাংঙালি সৈনিকদের নিয়ে বিএলএফ গঠন করেন। তাকে এক নম্বর আসামী করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয় এবং তাঁকে ১৯৬৮ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। তার ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়। পরে এ মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নম্বর আসামী করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে। ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের ফলে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকলে মুক্তি পান। বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন দল গঠন করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধর ভাষণের পর তিনি প্রাক্তন বাঙালি সৈনিকদের সংগঠিত করেন। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নিকট সংবাদ ছিল যে, লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন বাঙালি সৈন্যদের নিয়ে ২৬ মার্চ ঢাকা সেনানিবাস আক্রমণ করবে। তাই একদনি পূর্বে পাকসেনারা বাঙালিদের আক্রমণ করে এবং ২৬ মার্চ প্রত্যূষে লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনকে হত্যা করে। তাঁর লাশ পাওয়া যায়নি। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র রেখে যান। শিশুপুত্র পিতার নির্মম হত্যাকা- দেখে নির্বাক ও পঙ্গু হয়ে যায়।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।