মুহাম্মদ হোসেন (রঃ), নৈকাঠির হুজুর

Barisalpedia থেকে

ঝালকাঠির নৈকাঠির হুজুর হিসেবে বিখ্যাত হযরত মাওলানা মুহাম্মদ হোসেন। বিশেষ করে জৌনপুরী সিলসিলার প্রবীন খলিফা হযরত মাওলানা মুহাম্মদ হোসেন সাহেবের জন্যই নৈকাঠী গ্রামটি প্রসিদ্ধ বলা যায়। তাকে নৈকাঠির হুজুর বললেই এক বাক্যে সবাই চিনতো। তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত আলেমে দ্বীন এবং একজন আল্লাহ ওয়ালা খাঁটি নায়েবে নবীর তালিকাভুক্ত। রংপুরে যার মাজার সেই হযরত মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রঃ) সাহেবের তিনি ছিলেন একজন প্রথম শ্রেণির মুরিদ। মাওলানা মুহাম্মদ হোসেন নৈকাঠীর মুসলিম পরিবার ডাকুয়া বংশে ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ করে। তার পিতার নাম মরহুম আলহাজ্ব মেহরাব আলী ডাকুয়া।

শিক্ষা

মুহাম্মদ হোসেন সাহেবের শিক্ষা জীবন শুরু হয় নলছিটির পাওতা গ্রামের আরজ আলী মুন্সি নামে এক শিক্ষকের কাছে এবং একই সাথে ক্বারী নূর বক্সের নিকট পবিত্র কোরআন শরীফের তালিম গ্রহণ করেন। রাজাপুরের এক মাদ্রাসায়ও তিনি অধ্যয়ন করেছেন শোনা যায়। এরপর তিনি সুদূর সন্দীপে বটতলায় ইসলামী শিক্ষার জন্য গমন করেন। সন্দীপ ছিল তৎকালে ইসলামী শিক্ষার বিশেষ স্থান। পরবর্তীতে তিনি ভারতের দেওবন্দ ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসায় অধ্যয়নের জন্য গমন করেন। দেওবন্দ থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি ইসলাম প্রচারে আত্ম নিয়োগ করেন।

ইসলাম প্রচার

শোনা যায় তিনি একাধারে বেশ কিছু দিন গাছতলা ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাঠিয়েছেন। সেখানেই তিনি ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল ছিলেন। স্থানটি ছিল কোলাহলমুক্ত। তিনি জৌনপুরের পীর হযরত হোসাইন আহমদ সাহেবের কাছে বয়াত গ্রহণ এবং খেলাফত প্রাপ্ত হন। পীরের কথামত তিনি দ্বীন প্রচারের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ফকির বেশে দিন গুজরানই তার পছন্দ ছিল। আমানতদারীতে তিনি ছিলেন এক মূর্ত আদর্শ। তিনি নিজ বাড়িতে মসজিদ তৈরি করেন এবং দীর্ঘকাল মসজিদেই ইবাদত করতেন এবং ইমামতি করতেন। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নামাযের তালীম দিতেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি সুফীবাদকেই মেনে নিয়েছিলেন। হালাল হারাম বিবেচনা করে চলার জন্য সকলকে তিনি তাগিদ দিতেন।

মৃত্যু

হযরত মাওলানা হোসেন সাহেব ১৯৮৮ সালে ইন্তেকাল করেন। বাড়িতে নিজ হাতে গড়া মসজিদের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। প্রথম জীবনে তার একটি পুত্র সন্তান জন্মের কিছুদিন পরই ইন্তেকাল করে।


তথ্যসূত্র: আবদুর রশীদ। এই সেই ঝালকাঠি। আল ইসলাম পাবলিকেশনস, ঝালকাঠি। ২০০১।