মীর ফজলে আলী

Barisalpedia থেকে

মীর ফজলে আলী লেখক ও আইনজ্ঞ। জন্ম: ১৮৮৯ সাল। মৃত্যু: ১৯৩৯ সাল। গ্রাম: চালিতাবুনিয়া, থানা: বামনা, জেলা: বরগুনা।


লেখাপড়া

কোরান কণিকার কবি মীর ফজলে আলী ১৯১৭ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯১৯ ও ১৯২১ সালে, বরিশাল বি. এম. কলেজ থেকে যথাক্রমে ইন্টারমিডিয়েট ও বি. এ পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯২৬-এ তিনি বরিশাল বারে যোগ দেন।

সাহিত্য ও সম্পাদনা

কিন্তু আইন ব্যবসায় মীর ফজলে আলীর তেমন মনোযোগ ছিল না। আইন ব্যবসার পাশাপাশি তিনি গান ও কবিতা লিখতে শুরু করেন। এগুলো কলকাতা থেকে প্রকাশিত মাসিক মোহাম্মদীতে ছাপা হয়। এরপর তিনি নিজেই একটি পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেন। তাঁকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন বরিশালেই অপর একজন সাহিত্যসেবী নূর আহম্মদ। এরা দু’জনে মিলে ১৯২৭ সালের মার্চ মাসে বের করেন ‘নকীব’ পত্রিকা। পত্রিকাটি প্রথম সংখ্যাই সাহিত্যমোদী সমাজে আলোড়ন তুললেও অর্থাভাবে আর কোন সংখ্যা বের করা সম্ভব হয়নি।

১৯৩০ সালে পবিত্র কোরানের দশটি সুরা এবং পাঁচটি সুরার অংশ বিশেষের কাব্যানুবাদ নিয়ে মীর ফজলে আলীর কোরান কণিকা কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। মীর ফজলে আলী একাধারে লেখক-গায়ক, সঙ্গীতজ্ঞ, সুরকার এবং বক্তা। তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনেও অংশ নিয়েছিলেন। তখনকার দিনের পত্র পত্রিকায় এবং পাঠ্য পুস্তকে কবির বহু কবিতা ও প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে তা সংগৃহীত বা সংকলিত হয়নি। কবি ১৯৩৮ সালের গোড়ার দিকে আইন ব্যবসায় প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি হঠাৎ করেই বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসার জন্য তিনি কলকাতা চলে যান, কিছুটা আরোগ্য লাভের পর তিনি সেখানেই থেকে যান এবং সাহিত্য চর্চার শুরু করেন। এ সময় তিনি ‘তরুণ পাঠ’, ‘মক্তব সাহিত্য’, ‘মক্তব মুকুলিকা’ ও ‘মক্তব সহচর’ নামে চারটি শিশু পাঠ্য পুস্তক রচনা করেন। ১৯৩৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে লেকচারার পদে নিয়োগ পান।

মৃত্যু

চাকরিতে যোগদানের জন্য তিনি কলকাতা থেকে ঢাকার পথে যাত্রার সময় উদরাময় রোগে আক্রান্ত হলে শ্বশুরালয়ে চলে যান এবং সেখানেই ১৯৩৯ সালে ইন্তেকাল করেন।


তথ্যসূত্র: রুসেলি রহমান চৌধুরী। বরিশালের প্রয়াত গুণীজন। ইউনিভার্সিটি বুক পাবলিশার্স, ঢাকা। ২০০৬।