মানিক বাহিনী

Barisalpedia থেকে

১৯৭১ সালে ঝালকাঠির বেশাইন খান গ্রামের রোজউল করিম আজাদ মানিক ২৪ জন তরুণকে নিয়ে মুক্তযোদ্ধাদের একটি বাহিনী গঠন করেন। এ দল মানিক বাহিনী নামে পরিচিত ছিল। মানিক ঢাকা কলেজের ছাত্র ও সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার ছোট ভাই কীর্তিপাশা স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র সাইদুল করিম রতন ছিল তার অন্যতম সহকারী। মানিক বাহিনীর সদস্য ছিল ২৪ জন। তারা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সফল অভিযান চালায়। পাকবহিনীর নির্যাতনের ভয়ে হাজার হাজার হিন্দু আটঘর কুড়িয়ানায় আশ্রয় নেয়। মানিক বাহিনী আদের সহায়তা করে এবং তাদের পরিত্যক্ত ঘরবাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পাকবাহিনী পেয়ারা বাগান আক্রমণ করলে মানিক বাহিনী পাকবাহিনীকে আক্রমণ করে কয়েকজনকে হত্যা করে। রাজাকার ও দালালেরা মানিক বাহিনীর গোপন ক্যাম্পের সংবাদ দেয়। পাকসেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে মানিক বাহিনীর গোপন ক্যাম্প ১৯৭১ সালের ১৪ জুন ভোর রাতে আভিযান চালায়। তারা মানিক, রতনসহ ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং ঘটনাস্থলে ১৬ জনকে গুলি করে হত্যা করে। মানিক রতনসহ ৮ জনকে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসে। ঝালকাঠির পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন আজমত তাদের উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে। মানিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ বার জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। মানিকের স্মরণে বেশাইন খানের নামকরণ করা হয় মানিকনগর। স্বাধীনতার পর ঢাকার নতুন পল্টন লাইনে অবস্থিত বালিকা বিদ্যালয়ের নাম করা হয় শহীদ মানিক আর্দশ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫