মসিহুর রহমান, মহম্মদ

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১২:২২, ১৬ জুন ২০১৬ পর্যন্ত সংস্করণে ("এম. এম. রহমান এন্ড কোম্পানী নামক সি.এ. ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা..." দিয়ে পাতা তৈরি)

(পরিবর্তন) ←পুর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ→ (পরিবর্তন)

এম. এম. রহমান এন্ড কোম্পানী নামক সি.এ. ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা ও ১৯৭৩-৭৪ সালে ঢাকার চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট। পিতা: সফিকুর রহমান। জন্ম: ১৯২৫ সাল। মৃত্যু: ৫ জুলাই ২০০১ সাল। জন্মস্থান: গৌরনদী, বরিশাল।


পারিবারিক পরিচিতি

এম. মসিহুর রহমানের জন্ম ১৯২৫ সালে বরিশালের গৌরনদী অঞ্চলে। তাঁর পিতার নাম মফিজুর রহমান এবং মাতার নাম আসমাতুন্নেসা। তাঁর নানার বাড়ি বরিশালের আমানতগঞ্জ ভাটিখানা রোডে। তাঁর নানা আবদুর রহিম খান একজন স্বদেশী বীর ছিলেন। মসিহুর রহমান পিতার পঞ্চম সন্তান হলেও প্রথম চার সন্তান জন্মের পর পরই মারা যায়। তাই তিনি মাতাপিতার অনেক আদরের সন্তান।

লেখাপড়া

তিনি বরিশাল জিলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অংশ নেবার পর পরই তিনি পিতার ইচ্ছায় মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ফাজেল পাশ করেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর তিনি ব্রজমোহন কলেজে আই. কম-এ ভর্তি হন। আই. কম. পরীক্ষায়ও তিনি কৃতিত্বের সাথে পাশ করে কলকাতার কারমাইকাল কলেজে বি. কম-এ ভর্তি হন। বি.কম পরীক্ষার পর পরই ভারত ভাগ হয়ে যায়। তিনি ঢাকা চলে আসেন একাউন্টেসি পড়ার জন্য। এ. সি. রয় নামক সি. এ. ফার্মে আর্টিকেল রূপে যোগ দেন। সে সময় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ছিল না বলা চলে।

১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে অধ্যয়নরতা রওশন আরার সাথে তাঁর বিয়ে হয়। ঐ একই বছর তিনি সি.এ. পড়ার উদ্দেশ্যে লন্ডন গমন করেন। ১৯৫৮ সালে সি.এ. পাশ করে দেশে ফিরেন।

কর্মজীবন

সি.এ. পাশ করে দেশে ফিরে এম. এম. রহমান এন্ড কোম্পানী নামে সি.এ. ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। এপর তিনি বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূল কাজের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫৯ সালে রোটারি ক্লাব অফ ঢাকার সদস্য হন। ১৯৭৩-৭৪ সালে চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৮০-৮১ সালে তিনি রোটারি জেলা ৩২৯-এর গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ছিলেন জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতির সহ-সভাপতি; বাংলাদেশ শিল্পব্যাংক ও জীবন বীমা কর্পোরেশনের ডিরেক্টর; ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডি.আই.টি.)-এর ট্রাস্টি, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের এডভাইজার; ইমপোর্ট এডভাইজার কাউন্সিল অফ বাংলাদেশ, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ব্লাইন্ড ট্যাক্সেশন ইনকোয়ারি কমিশন, ন্যাশনাল কমিশন অফ মানি ব্যাংকিং ক্রেডিট, লন্ডন সোসাইটি ফর রোজেজ-এর সদস্য। তিনি ছিলেন গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং গরীব চক্ষুরোগীদের চিকিৎসার জন্য রেটিনা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।

মসিহুর রহমানের নানাবিধ বিচিত্র শখ ছিল। জীবনের ধাপে ধাপে তিনি শখগুলোকে নিজের হাতে ধরে রেখেছেন। স্ট্যাম্প সংগ্রহ, মুদ্রা সংগ্রহ, ফটোগ্রাফি, হস্তরেখা চর্চা, প্রজাপতির পাখার বিচিত্র রং সংগ্রহ, চলচ্চিত্র নায়ক-নায়িকাদের ছবি সংগ্রহ করা, বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা সংগ্রহ করা ইত্যাদি। তিনি ভারত, পাকিস্তান, ইরান ও নেপাল থেকে বিভিন্ন রঙের গোলাপ ফুলের গাছ সংগ্রহ করেছিলেন। মুদ্রা সংগ্রহের মাধ্যমে তিনি মুসলিম ভারতের বহু ইতিহাস সংগ্রহ করে অনেক তথ্যের উদঘাটন করেন। মুদ্রা সংগ্রহ করে তিনি Numismatic Society of Bangladesh- এর সদস্যপদ লাভ করেন।

মৃত্যু

২০০১ সালের ৫ জুলাই তাঁর সুদীর্ঘ ও সফল কর্মময় জীবনের অবসান ঘটে।



তথ্যসূত্র: রুসেলি রহমান চৌধুরী। বরিশালের প্রয়াত গুণীজন। ইউনিভার্সিটি বুক পাবলিশার্স, ঢাকা। ২০০৬।