মনোরঞ্জন বড়াল

Barisalpedia থেকে

মনোরঞ্জন বড়াল (নভে. ১৯১৯ - ২৬.৯.২০০০) বরিশাল জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে তপশিলি জাতিভুক্ত দরিদ্র দিনমজুরের পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। দারিদ্র্যের মধ্যেই নিজ অধ্যবসায়ে বাংলায় লেটার মার্ক-সহ ম্যাট্রিক পাশ করেন। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে ভরতি হয়েও অর্থসংস্থানের অভাবে পড়া ছেড়ে দিতে হয়। কলেজে পড়ার সময়ই বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের সংস্পর্শে আসেন। জীবিকার সন্ধানে ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এসে গৃহশিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ সময় ফ্যাসিবিরোধী প্রচার আন্দোলনের মাধ্যমে অনেক কমিউনিস্ট বুদ্ধিজীবীর সংস্পর্শে আসেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টির দৈনিক পত্রিকা ‘স্বাধীনতা’য় প্রুফ-রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে পার্টির বেআইনি অবস্থায় ‘স্বাধীনতা’র প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেলে তিনি কিছুদিন পোর্ট কমিশনার্স অফিসে লাইব্রেরিয়ানের কাজ করেন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ‘স্বাধীনতা’ পুনঃপ্রকাশিত হলে তিনি আবার পত্রিকার কাজে ফিরে আসেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত তিনি এই কাজে ছিলেন। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক ‘দেশহিতৈষী’ প্রকাশ হলে তিনি প্রথম থেকেই তার সঙ্গে যুক্ত হন। স্বনামে ছাড়াও তিনি ‘যদুনাথ বসু’, ‘শুক্লা সোম’, ‘ভাসমান’ নামেও নিয়মিত লিখতেন। ‘ভাসমান’ নামে ‘প্রবহমান দুনিয়ায়’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক বিষয়ের লেখাগুলি তাঁকে বিশিষ্টতা দিয়েছিল। ভিয়েতনাম মুক্তিযুদ্ধে ভিয়েতনামী মহিলাদের নানা বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামী গাথা তিনি ‘শুক্লা সোম’ নামে লিখেছেন। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে বিধানসভা কেন্দ্রে সি.পি.আই. (এম.)- এর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। ‘পথ সংকেত’ শীর্ষক একটি মাসিক পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। রচিত গ্রন্থ: ‘দ্বিতীয় বিশ্বের পটভূমিকা’, ‘কমরেড ভীমরাও অম্বেদকর’, ‘কর্মজীবনের কয়েকটি দিক’, ‘বৈষম্যব্যাধি ও বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম’ প্রভৃতি।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।