"মণিকুন্তলা সেন"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
 
অবিভক্ত বাংলার প্রথম সারির মহিলা নেত্রী ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাত্রী মণিকুন্তলার (১১.১২.১৯১০- ১১.৯.১৯৮৭) আদি নিবাস বরিশাল। পিতা বিলাসচন্দ্র সেন।  
 
অবিভক্ত বাংলার প্রথম সারির মহিলা নেত্রী ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাত্রী মণিকুন্তলার (১১.১২.১৯১০- ১১.৯.১৯৮৭) আদি নিবাস বরিশাল। পিতা বিলাসচন্দ্র সেন।  
  
বরিশালে ছাত্রাবস্থাতেই স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। বরিশাল বি.এম. কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করে এম.এ. পড়তে কলকাতায় আসেন। কর্মজীবনে ১৯৩৭/৩৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে দীর্ঘদিন মেট্রোপলিটন গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তিরিশের দশকে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়ে কিছুকালের মধ্যেই কমিউনিস্ট ও মহিলা আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী বলে স্বীকৃতি পান। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে মহাদুর্ভিক্ষের সময় মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির নেতৃত্বে যে ভুখামিছিলটি বিধানসভা অভিযান করে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হকের কাছ থেকে ঘটনাস্থলেই আংশিক দাবি আদায় করে, মণিকুন্তলা ছিলেন সেই মিছিলের প্রাণবন্ত নেত্রী। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত হওয়ার সময় তিনি বিনা বিচারে আটক হন। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই আত্মগোপন করে মহিলাদের মধ্যে কাজ করতে থাকেন। আবার খড়গপুরে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ছাড়া পান। এসময়ে জেলে বন্দিদের ৫১ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক অনশন ধর্মঘটে তিনি অংশ নেন। অনশন চলাকালে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে কিছুদিন পাগলদের সঙ্গে একঘরে আটক রাখা হয। ১৯৫২-৬২ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার কালীঘাট কেন্দ্র থেকে বিধানসভার সদস্য এবং সেখানে বিরোধীপক্ষের সহকারী নেত্রী নির্বাচিত হন। বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা, দরিদ্র মানুষের সংগ্রামের সঙ্গে তাঁর একাত্মতা- পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠা সম্মেলনের তিনি অন্যতম সংগঠক। মহিলা ফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার যুগ্ম সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। এই বছর ঐতিহাসিক শিক্ষক ধর্মঘট উপলক্ষ্যে তিনি গ্রেপ্তারবরণ করেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহিলা আন্দোলনেও তাঁর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে লুসানে অনুষ্ঠিত মাতৃ-সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেত্রী ছিলেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও মহিলা আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। ‘সেদিনের কথা’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। এককালের কমিউনিস্ট পার্টির কলকাতা জেলা সম্পাদক জলি কল তাঁর স্বামী।
+
বরিশালে ছাত্রাবস্থাতেই স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। বরিশাল বি.এম. কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করে এম.এ. পড়তে কলকাতায় আসেন। কর্মজীবনে ১৯৩৭/৩৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে দীর্ঘদিন মেট্রোপলিটন গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তিরিশের দশকে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়ে কিছুকালের মধ্যেই কমিউনিস্ট ও মহিলা আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী বলে স্বীকৃতি পান। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে মহাদুর্ভিক্ষের সময় মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির নেতৃত্বে যে ভুখামিছিলটি বিধানসভা অভিযান করে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হকের কাছ থেকে ঘটনাস্থলেই আংশিক দাবি আদায় করে, মণিকুন্তলা ছিলেন সেই মিছিলের প্রাণবন্ত নেত্রী। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত হওয়ার সময় তিনি বিনা বিচারে আটক হন। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই আত্মগোপন করে মহিলাদের মধ্যে কাজ করতে থাকেন। আবার খড়গপুরে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ছাড়া পান। এসময়ে জেলে বন্দিদের ৫১ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক অনশন ধর্মঘটে তিনি অংশ নেন। অনশন চলাকালে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে কিছুদিন পাগলদের সঙ্গে একঘরে আটক রাখা হয। ১৯৫২-৬২ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার কালীঘাট কেন্দ্র থেকে বিধানসভার সদস্য এবং সেখানে বিরোধীপক্ষের সহকারী নেত্রী নির্বাচিত হন। বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা, দরিদ্র মানুষের সংগ্রামের সঙ্গে তাঁর একাত্মতা- পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠা সম্মেলনের তিনি অন্যতম সংগঠক। মহিলা ফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার যুগ্ম সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। এই বছর ঐতিহাসিক শিক্ষক ধর্মঘট উপলক্ষ্যে তিনি গ্রেপ্তারবরণ করেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহিলা আন্দোলনেও তাঁর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে লুসানে অনুষ্ঠিত মাতৃ-সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেত্রী ছিলেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও মহিলা আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। ‘সেদিনের কথা’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। এককালের কমিউনিস্ট পার্টির কলকাতা জেলা সম্পাদক কাশ্মিরের সন্তান জলি কল (Jolly Kaul) ছিলেন তাঁর স্বামী।
  
 
----
 
----
 
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান
 
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান

১১:২৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ

অবিভক্ত বাংলার প্রথম সারির মহিলা নেত্রী ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাত্রী মণিকুন্তলার (১১.১২.১৯১০- ১১.৯.১৯৮৭) আদি নিবাস বরিশাল। পিতা বিলাসচন্দ্র সেন।

বরিশালে ছাত্রাবস্থাতেই স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। বরিশাল বি.এম. কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করে এম.এ. পড়তে কলকাতায় আসেন। কর্মজীবনে ১৯৩৭/৩৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে দীর্ঘদিন মেট্রোপলিটন গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তিরিশের দশকে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়ে কিছুকালের মধ্যেই কমিউনিস্ট ও মহিলা আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী বলে স্বীকৃতি পান। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে মহাদুর্ভিক্ষের সময় মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির নেতৃত্বে যে ভুখামিছিলটি বিধানসভা অভিযান করে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হকের কাছ থেকে ঘটনাস্থলেই আংশিক দাবি আদায় করে, মণিকুন্তলা ছিলেন সেই মিছিলের প্রাণবন্ত নেত্রী। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত হওয়ার সময় তিনি বিনা বিচারে আটক হন। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই আত্মগোপন করে মহিলাদের মধ্যে কাজ করতে থাকেন। আবার খড়গপুরে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ছাড়া পান। এসময়ে জেলে বন্দিদের ৫১ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক অনশন ধর্মঘটে তিনি অংশ নেন। অনশন চলাকালে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে কিছুদিন পাগলদের সঙ্গে একঘরে আটক রাখা হয। ১৯৫২-৬২ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার কালীঘাট কেন্দ্র থেকে বিধানসভার সদস্য এবং সেখানে বিরোধীপক্ষের সহকারী নেত্রী নির্বাচিত হন। বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা, দরিদ্র মানুষের সংগ্রামের সঙ্গে তাঁর একাত্মতা- পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠা সম্মেলনের তিনি অন্যতম সংগঠক। মহিলা ফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার যুগ্ম সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। এই বছর ঐতিহাসিক শিক্ষক ধর্মঘট উপলক্ষ্যে তিনি গ্রেপ্তারবরণ করেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহিলা আন্দোলনেও তাঁর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে লুসানে অনুষ্ঠিত মাতৃ-সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেত্রী ছিলেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও মহিলা আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। ‘সেদিনের কথা’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। এককালের কমিউনিস্ট পার্টির কলকাতা জেলা সম্পাদক কাশ্মিরের সন্তান জলি কল (Jolly Kaul) ছিলেন তাঁর স্বামী।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান