"বীরেশচন্দ্র গুহ"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
("বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন ব..." দিয়ে পাতা তৈরি) |
|||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক। আদি নিবাস বানারীপাড়া। জন্ম ৮ জুন ১৯০৪। মৃত্যু ২০ মার্চ ১৯৬২। পিতা রাসবিহারী গুহ। পিতার কর্মস্থল ময়মনসিংহে জন্ম। মাতুল মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত। | বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক। আদি নিবাস বানারীপাড়া। জন্ম ৮ জুন ১৯০৪। মৃত্যু ২০ মার্চ ১৯৬২। পিতা রাসবিহারী গুহ। পিতার কর্মস্থল ময়মনসিংহে জন্ম। মাতুল মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত। | ||
− | বীরেশচন্দ্র গুহ কলকাতা শ্রীকৃষ্ণ পাঠশালা থেকে প্রবেশিকা পাস করেন ১৯১৯ সালে। সিটি কলেজ থেকে আই.এস সি. পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে বি.এসসি. পড়ার সময়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অপরাধে কলেজ থেকে বহিস্কৃত হন ১৯২১ সালে। সেন্ট জেভির্য়াস কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স-সহ প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এসসি পাশ করেন ১৯২৩ সালে। এম.এসসি.তেও প্রথম হন (১৯২৫)। এক বছর বেঙ্গল ক্যামিকেলে কাজ করার পর ‘টাটা স্কলারশিপ’ পেয়ে বিলেত যান (১৯২৬)। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ও ডি.এসসি. ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল | + | বীরেশচন্দ্র গুহ কলকাতা শ্রীকৃষ্ণ পাঠশালা থেকে প্রবেশিকা পাস করেন ১৯১৯ সালে। সিটি কলেজ থেকে আই.এস সি. পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে বি.এসসি. পড়ার সময়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অপরাধে কলেজ থেকে বহিস্কৃত হন ১৯২১ সালে। সেন্ট জেভির্য়াস কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স-সহ প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এসসি পাশ করেন ১৯২৩ সালে। এম.এসসি.তেও প্রথম হন (১৯২৫)। এক বছর বেঙ্গল ক্যামিকেলে কাজ করার পর ‘টাটা স্কলারশিপ’ পেয়ে বিলেত যান (১৯২৬)। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ও ডি.এসসি. ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ষণ্ডের যকৃতের মধ্যে ভিটামিন বি২-র অস্তিত্ব অনুসন্ধান’। এরপর তিনি ক্রেম্ব্রিজের বিখ্যাত প্রাণ-রসায়নবিদ এফ.সি.হপকিন্সের অধীনেও গবেষণা করেন। রাশিয়ার দূতের সাথে প্রবাসী ভারতের ছাত্রদের যে যোগাযোগ ঘটত এবং বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ প্রবাসী ভারতীয়দের যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছিল তাতে তিনি প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন। দেশে ফেরার পর কিছুদিন আবার বেঙ্গল কেমিক্যালে কাজ করেন। ১৯৩৬ খৃস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপকের পদ পান। ১৯৪৪ খৃস্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে খাদ্যদপ্তরে প্রধান টেকনিক্যাল উপদেষ্টাপদে নিযুক্ত করেন। ১৯৪৮ খৃস্টাব্দে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের সভ্য হিসাবে কাজ করেন। ১৯৫৩ খৃস্টাব্দে কলকাতা বিশা¦বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং আমরণ অধ্যাপনা ও গবেষণায় যুক্ত থাকেন। ছাত্রাবস্থায় ঘোষ ট্রাভেলিং বৃত্তি লাভ করে ইউরোপের নানা দেশে ভ্রমণ করে আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি বিভিন্ন সময়ে গমবীজ থেকে ভিটামিন নিষ্কাশন, অ্যাস্করিক এ্যাসিড অথবা ভিটামিন ‘সি’-বিষয়ে গবেষনা করেন। উদ্ভিদবীজ থেকে ‘অ্যাস্করবীজেন’ বিশ্লেষণে তিনি ও তাঁর সহযোগিরা মৌলিক কৃতিত্ব দেখান। বাংলায় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের সময়ে ঘাস-পাতা থেকে প্রোটিন বিশ্লেষণের গবেষণা শুরু করেন এবং মানুষের খাদ্যে এই উদ্ভিজ্জ প্রোটিন মিশ্রণের নানা পদ্ধতি দেখান। সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে উৎসাহী ছিলেন। সংস্কৃত, ইংরেজি ও বাংলায় কবিতা আবৃত্তি করে বন্ধুদের প্রায়ই মুগ্ধ করতেন। বিখ্যাত সমাজসেবিকা ড. ফুলরেণু গুহ তাঁর সহধমির্ণী। তিনি স্বামীর ইচ্ছানুসারে স্বোপার্জিত সমস্ত অর্থ ও বালিগঞ্জে বৃহৎ অট্টালিকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাণ-রসায়ন গবেষণার জন্য দান করেন (১৯৭২)। |
---- | ---- | ||
তথ্যসূত্র: বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা সাহিত্য সংসদ। ২০১৩। | তথ্যসূত্র: বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা সাহিত্য সংসদ। ২০১৩। |
০৫:৫৮, ১৩ জুলাই ২০১৬ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ
বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক। আদি নিবাস বানারীপাড়া। জন্ম ৮ জুন ১৯০৪। মৃত্যু ২০ মার্চ ১৯৬২। পিতা রাসবিহারী গুহ। পিতার কর্মস্থল ময়মনসিংহে জন্ম। মাতুল মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত।
বীরেশচন্দ্র গুহ কলকাতা শ্রীকৃষ্ণ পাঠশালা থেকে প্রবেশিকা পাস করেন ১৯১৯ সালে। সিটি কলেজ থেকে আই.এস সি. পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে বি.এসসি. পড়ার সময়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অপরাধে কলেজ থেকে বহিস্কৃত হন ১৯২১ সালে। সেন্ট জেভির্য়াস কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স-সহ প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এসসি পাশ করেন ১৯২৩ সালে। এম.এসসি.তেও প্রথম হন (১৯২৫)। এক বছর বেঙ্গল ক্যামিকেলে কাজ করার পর ‘টাটা স্কলারশিপ’ পেয়ে বিলেত যান (১৯২৬)। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ও ডি.এসসি. ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ষণ্ডের যকৃতের মধ্যে ভিটামিন বি২-র অস্তিত্ব অনুসন্ধান’। এরপর তিনি ক্রেম্ব্রিজের বিখ্যাত প্রাণ-রসায়নবিদ এফ.সি.হপকিন্সের অধীনেও গবেষণা করেন। রাশিয়ার দূতের সাথে প্রবাসী ভারতের ছাত্রদের যে যোগাযোগ ঘটত এবং বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ প্রবাসী ভারতীয়দের যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছিল তাতে তিনি প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন। দেশে ফেরার পর কিছুদিন আবার বেঙ্গল কেমিক্যালে কাজ করেন। ১৯৩৬ খৃস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপকের পদ পান। ১৯৪৪ খৃস্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে খাদ্যদপ্তরে প্রধান টেকনিক্যাল উপদেষ্টাপদে নিযুক্ত করেন। ১৯৪৮ খৃস্টাব্দে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের সভ্য হিসাবে কাজ করেন। ১৯৫৩ খৃস্টাব্দে কলকাতা বিশা¦বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং আমরণ অধ্যাপনা ও গবেষণায় যুক্ত থাকেন। ছাত্রাবস্থায় ঘোষ ট্রাভেলিং বৃত্তি লাভ করে ইউরোপের নানা দেশে ভ্রমণ করে আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি বিভিন্ন সময়ে গমবীজ থেকে ভিটামিন নিষ্কাশন, অ্যাস্করিক এ্যাসিড অথবা ভিটামিন ‘সি’-বিষয়ে গবেষনা করেন। উদ্ভিদবীজ থেকে ‘অ্যাস্করবীজেন’ বিশ্লেষণে তিনি ও তাঁর সহযোগিরা মৌলিক কৃতিত্ব দেখান। বাংলায় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের সময়ে ঘাস-পাতা থেকে প্রোটিন বিশ্লেষণের গবেষণা শুরু করেন এবং মানুষের খাদ্যে এই উদ্ভিজ্জ প্রোটিন মিশ্রণের নানা পদ্ধতি দেখান। সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে উৎসাহী ছিলেন। সংস্কৃত, ইংরেজি ও বাংলায় কবিতা আবৃত্তি করে বন্ধুদের প্রায়ই মুগ্ধ করতেন। বিখ্যাত সমাজসেবিকা ড. ফুলরেণু গুহ তাঁর সহধমির্ণী। তিনি স্বামীর ইচ্ছানুসারে স্বোপার্জিত সমস্ত অর্থ ও বালিগঞ্জে বৃহৎ অট্টালিকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাণ-রসায়ন গবেষণার জন্য দান করেন (১৯৭২)।
তথ্যসূত্র: বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা সাহিত্য সংসদ। ২০১৩।