"বি আই হোস্টেল (বেল ইসলামিয়া ছাত্রাবাস)"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
("তৎকালীন পশ্চাৎপদ মুসলমানদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
তৎকালীন পশ্চাৎপদ মুসলমানদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে গ্রামগঞ্জ থেকে বরিশাল শহরে আসা মুসলমান শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করার প্রয়াসে খান বাহাদুর হেমায়েত উদ্দীন তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিটসন বেল-এর সহায়তায় শহরের গির্জা মহল্লা এলাকায় সড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে নির্মাণ করেন এক বিশালাকার ছাত্রাবাস। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিটসন বেল-এর সহযোগিতার কারনে তার নামানুসারে সেই ছাত্রাবাসের নামকরন করা হয় বেল ইসলামিয়া ছাত্রাবাস।
+
তৎকালীন পশ্চাৎপদ মুসলমানদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে গ্রামগঞ্জ থেকে বরিশাল শহরে আসা মুসলমান শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করার প্রয়াসে খান বাহাদুর হেমায়েত উদ্দীন তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিটসন বেল-এর সহায়তায় শহরের গির্জা মহল্লা এলাকায় সড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে নির্মাণ করেন এক বিশালাকার ছাত্রাবাস। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিটসন বেল-এর সহযোগিতার কারনে তার নামানুসারে সেই ছাত্রাবাসের নামকরন করা হয় বেল ইসলামিয়া ছাত্রাবাস যা সংক্ষেপে বি আই হোস্টেল নামে অধিকতর পরিচিত।
  
 
[[চিত্র:Bel islamia.jpg]]     
 
[[চিত্র:Bel islamia.jpg]]     

০৮:১০, ২৪ মার্চ ২০১৭ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ

তৎকালীন পশ্চাৎপদ মুসলমানদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে গ্রামগঞ্জ থেকে বরিশাল শহরে আসা মুসলমান শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করার প্রয়াসে খান বাহাদুর হেমায়েত উদ্দীন তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিটসন বেল-এর সহায়তায় শহরের গির্জা মহল্লা এলাকায় সড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে নির্মাণ করেন এক বিশালাকার ছাত্রাবাস। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিটসন বেল-এর সহযোগিতার কারনে তার নামানুসারে সেই ছাত্রাবাসের নামকরন করা হয় বেল ইসলামিয়া ছাত্রাবাস যা সংক্ষেপে বি আই হোস্টেল নামে অধিকতর পরিচিত।

Bel islamia.jpg

১৮৯৩ সালের ২০ মে খান বাহাদুর হেমায়েতউদ্দীন বরিশাল আঞ্জুমানে হেমায়েত-এ-ইসলাম নামে একটি ধর্মীয় ও সমাজসেবা মূলক সমিতি স্থাপন করেন। আঞ্জুমানের উদ্দ্যোগে এবং হেমায়েত উদ্দীনের ব্যক্তিগত চেষ্টায় আলীগড় আন্দোলনের আদর্শে বরিশালের বিখ্যাত বেল ইসলামিয়া বোর্ডিং স্থাপনের প্রয়াস ১৮৯৫ সালে শুরু হয়। সেকালে বাংলা-ভারতের অনান্য শহরের ন্যায় বরিশালেও ছাত্রাবাসের অভাবে মুসলমান ছাত্রদের শিক্ষালাভের পথে একটা বড় বাধা ছিল। এই সময় হেমায়েতউদ্দীন ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর কাছ থেকে দু’হাজার টাকা নিয়ে ১৮৯৫ সালের ২৫ জানুয়ারী জামে কশাই মসজিদের পশ্চিম পাশে আট কাঠা জমি ক্রয় করেন। ঐ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারী জেলাপ্রশাসক মিঃ মসুরিয়ারের সভাপতিত্বে স্থানীয় বি.এম. স্কুলে এক সভায় শায়েস্তাবাদের জমিদার সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন (১৮১০-১৯০৯) উক্ত ছাত্রাবাস নির্মানে তাৎক্ষনিক ভাবে ৫০০ টাকা দান করেন। ১৮৯৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক স্যার বিটসন বেলের সভাপতিত্বে বরিশাল জিলা স্কুলের প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় জৌনপুরী পীর মাওলানা হাফেজ আহম্মদ (১৮৩৪-৯৯) এবং কলকাতা হাইকোর্টের নামযাদা উকিল নওয়াব সিরাজুল ইসলাম (১৮৪৮-১৯২৩) অত্র ছাত্রাবাস নির্মাণের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রেরণামূলক বক্তৃতা করেন। নওয়াব সাহেবের প্রস্তাবে সর্বসম্মতিক্রমে বেল সাহেবের নামানুসারে ঐ ছাত্রাবাসের নামকরণ করা হয় বেল ইসলামিয়া ছাত্রাবাস । ১৮৯৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী বিটসন বেল উক্ত ছাত্রাবাসের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন এবং গভর্নর প্রদত্ত পাঁচ হাজার টাকা সহ আরো কিছু সংগৃহীত অর্থে নির্মিত ছাত্রাবাস ১৯০১ সালের জুন মাসে গভর্নর উডবার্ন কর্তৃক উদ্বোধন করা হয়। এই হোষ্টেল প্রথম যুগে বরিশালে মুসলিম যুবকদের মধ্যে শিক্ষায় একটি নতুন প্রবাহের সৃষ্টি করেছিল। দেহ ও চরিত্রগঠন, ভ্রাতৃত্ব বন্ধন, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা ছিল এই হোষ্টেলের বৈশিষ্ট্য। বি.আই. হোষ্টেলের বোর্ডারদের মাধ্যে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ষ্পীকার আবদুল ওহাব খান, বিচারপতি আবদুল জব্বার খান, খান বাহাদুর মুহাম্মাদ আকরাম, বিচারপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম, খান বাহাদুর মাহবুবউদ্দীন আহম্মদ, সাবেক পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আযীজ উদ্দীন আহম্মদ, সাবেক মন্ত্রী খান বাহাদুর হাশেম আলী খান, খান বাহাদুর আবদুর রহমান খান, মেজর আফসার উদ্দীন প্রমুখের নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।



তথ্যসূত্র: ১। সাইফুল আহসান বুলবুল। বৃহত্তর বরিশালের ঐতিহাসিক নিদর্শন। গতিধারা, ঢাকা। ২০১২। ২। মোসলেম উদ্দিন সিকদার এর প্রবন্ধ “খান বাহাদুর হেমায়েত উদ্দীন”।