বিজনবালা ঘোষদস্তিদার

Barisalpedia থেকে

বিখ্যাত শিল্পী। জন্ম ১৯ অক্টোবর ১৯২১। মৃত্যু ৯ জুন ১৯৮১। আদি নিবাস বরিশাল জেলার বর্তমান বানারীপাড়া থানাধীন গাভা গ্রাম। পরবর্তীতে দুই পুরুষের বাস ময়মনসিংহের আমলাপাড়ায়। পিতা ধরণীরঞ্জন ঘোষদস্তিদার। মাতা সরযূবালা।

যৌথ পরিবারের বড়ো মেয়ে তিনি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বড়ো হয়েছেন। ছোটো কাকা অবনীরঞ্জন ঘোষদস্তিদার দীর্ঘকাল আন্দামানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। বাবা এবং অন্য কাকারাও কারাদ- ভোগ করেছেন। সংগীত শিক্ষা শুরু ময়মনসিংহের ললিতমোহন সেনের কাছে, পরের গুরু প-িত ওঙ্কারনাথ ঠাকুর। উল্লেখ্য, সারা বাংলায় তিনিই প-িতজির একমাত্র শিষ্যা। কলকাতার কলেজ থেকেই আই.এ. পাশ করেছেন। মাত্র ৬/৭ বছর বয়সে ময়মনসিংহ জেলা রাজনৈতিক সম্মেলনে প্রথম তিনি ‘বন্দে মাতরম’ ও অন্যান্য স্বদেশি গান পরিবেশন করেন। তারপর থেকে কলকাতা ও দেশের নানা প্রান্তে রাজনৈতিক সম্মেলনে শিল্পী হিসাবে তাঁর উপস্থিতি প্রায় অনিবার্য ছিল। প্রথমদিকে তিনি রবীন্দ্রনাথের সুরে ও পরে পণ্ডিত ওঙ্কারনাথের সুরে ‘বন্দে মাতরম’ গাইতেন। ১৯৪৬ খৃস্টাব্দে বেলেঘাটায় গান্ধীজির অবস্থানকালে তিনি সেখানে গিয়ে তাঁকে রামের নানা ভজন শুনিয়ে এসেছেন। গান্ধীজির মৃত্যুর পর তাঁর ‘রামধনু’-গীত বেতারে ও রেকর্ডে দেশের কোণে কোণে প্রচারিত হয়। তাঁর নিজস্ব সুরে গাওয়া কলম্বিয়া কোম্পানিকৃত রেকর্ডের একটি গান অন্য শিল্পীর কণ্ঠে অঞ্জনগড় ছবিতে গাওয়া হলে তিনি সুরের রয়ালটি দাবি করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। ওই মামলার ফলে শিল্পীর সুরের কপিরাইট স্বীকৃত হয় এবং সেই থেকে সুরের রয়ালটি প্রথা চালু হয়। তাঁর গাওয়া গানগুলির মধ্যে ‘বন্ধুজন মিলি কহ’, ‘প্রেম মোদিত মনসে কহ রাম রাম রাম’, ‘যোগী মত যা’, ‘রামধনু’, ‘বন্দে মাতরম’ খুবই বিখ্যাত।


বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খন্ড)। কোলকাতা: সাহিত্য সংসদ। ২০১৩।