বারৈকরণ

Barisalpedia থেকে

বৃহত্তর বরিশাল অর্থাৎ প্রাচীনকালের চন্দ্রদ্বীপ, সেলিমাবাদ, সৈয়দপুর, আওরঙ্গপুর, আজিমপুর প্রভৃতি পরগনা সমন্বয়ে বুজুর্গ উমেদপুর নামে একটি জিলা গঠন করা হয়েছিলো। বাকেরগঞ্জের সহকারী কালেক্টর ও সুন্দরবনের কমিশনার মিঃ লজের এক পত্রে এই জিলার কথা উল্লেখ রয়েছে (সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, বরিশাল বিভাগের ইতিহাস ২৯৩)। বুজুর্গ উমেদপুর জিলার সদর দপ্তর নলছিটির বারৈকরণে অবস্থিত ছিলো। আর সেই কারণে বারৈকরণ নামে এই জিলা পরিচিতি লাভ করে। ব্রিটিশ শাসনামলে বারৈকরন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়। রাজস্ব আদায়ের জন্য ১৭৭২ খৃৃস্টাব্দে বারৈকরণে একজন তহশীলদার নিযুক্ত করা হয়। সতেরশ বিরানব্বই সালে সহকারী কালেক্টর ও সুন্দরবনের কমিশনার স্যামুয়েল মিডলটন বারকৈরন থেকে প্রশাসনিক দপ্তর বাকেরগঞ্জে স্থানান্তরিত করেন। মিডলটন তার প্রশাসনিক দপ্তরের কার্যক্রম সর্বপ্রথম বাকেরগঞ্জের বুজুর্গ উমেদ খান এবং আগা বাকেরের গোলাবাড়িতে শুরু করেন।

জেলা হিসেবে না হলেও ১৭৯৭ সালে যখন বাকেরগঞ্জ জেলা সৃষ্টি হয় তখন বাকরগঞ্জের ১০টি থানার একটি ছিল বারৈকরণ। ১৮২৪ খৃৃস্টাব্দে বারৈকরণ থানা বিভক্ত হয়ে নলছিটি ও ঝালকাঠি থানা গঠন করা হয়। বারৈকরণ হতে থানা ১৮২৪ খৃৃস্টাব্দে নলছিটি বন্দরে স্থানান্তরিত হয়।

বর্তমানে অতীতকালের বুজুর্গ উমেদপুর জিলার সদর দপ্তরের সামান্য চিহ্নমাত্র বারৈকরণে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর । তারপরেও নলছিটির অদূরে বিলুপ্তির শেষপ্রান্তে এসে দাঁড়ানো কয়েকটি মঠ-মন্দির, ধ্বসে পড়া ভবন এবং কুঠিবাড়ি নাম ধারণ করে থাকা এলাকাটি প্রাচীনকালের জিলা সদর দপ্তরের পরিচয় বহন করে আছে।



তথ্যসূত্র: সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী। ২০১০।