বাবুগঞ্জ উপজেলা

Barisalpedia থেকে

থানাটি ১৯০৬ সালে গঠিত হয়। ২৪/৩/১৯৮৩ তারিখে থানাটি উপজেলায় উন্নীত হয়। এই উপজেলার বিখ্যাত ব্যক্তি, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঘটনার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নি¤œরূপ। উল্লেখ্য, নি¤œলিখিত প্রত্যেক ব্যক্তি, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঘটনা নিয়ে অত্র বরিশালপিডিয়ায় একটি করে স্বতন্ত্র নিবন্ধ রয়েছে।


জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের [পূর্বনাম আগরপুর] বিখ্যাত ব্যক্তিগণ

১. আলতাফ উদ্দীন (১৯০৭ - ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০), রাজনীতিবিদ ও বৃটিশবিরোধী কর্মী; সাম্প্রদায়িক দাঙ্গারোধের প্রয়াসে জীবন উৎসর্গীকৃত; আগরপুর গ্রাম। ২. মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন (৮ মার্চ ১৯৪৯ - ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১), মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব প্রাপ্ত; গ্রাম: রহিমগঞ্জ।


চাঁদপাশা ইউনিয়নের বিখ্যাত ব্যক্তিগণ

১. আবদুল ওহাব খান (১৯৪৩ - ১৫ আগস্ট ১৯৮৯), মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, গ্রাম: দরিয়াবাদ। ২. আবদুল গফুর মোল্লা, আদর্শ শিক্ষক ও বরিশাল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সায়র।


দেহেরগতি ইউনিয়নের বিখ্যাত ব্যক্তিগণ

১. অনন্তকুমার চক্রবর্তী (১৫ এপ্রিল ১৯০১ - ৫ জুন ১৯৭৯), ওরফে ভোলাদা, আন্দামানে দ্বীপান্তর প্রাপ্ত সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামী; রাকুদিয়া গ্রাম। ২. আবদুল জব্বার খান (১ নভেম্বর ১৯০২ - ২৩ আগস্ট ১৯৮৪), ১৯৬৫ খ্রি. থেকে সামরিক আইন জারির পূর্ব পর্যন্ত (২৫.৩.১৯৬৯) তিনি জাতীয় পরিষদের স্পিকার; গ্রাম: বাহেরচর। ৩. আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ কবি (৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ - ১৯ মার্চ ২০০১), বাংলাদেশ সরকারের ভূতপূর্ব কৃষিমন্ত্রী, স্পিকার আবদুল জব্বার খানের পুত্র; গ্রাম: বাহেরচর। ৪. এনায়েত উল্লাহ খান (২৫ মে ১৯৩৯ - ১০ নভেম্বর ২০০৫), সাংবাদিক, লেখক ও প্রাক্তন মন্ত্রী; স্পিকার আবদুল জব্বার খানের পুত্র; গ্রাম: বাহেরচর।


মাধবপাশা ইউনিয়নের বিখ্যাত ব্যক্তিগণ

ক) মাধবপাশা রাজবাড়ির চন্দ্রদ্বীপের রাজাগণ (যদিও এই রাজবংশের শেষ রাজাগণই ছিলেন মাধবপাশার অধিবাসী, তারপরও এই বংশের সকল রাজা ও রানীর নামই মাধবপাশা গ্রামের অন্তর্ভুক্ত করা হলো)

১. রাজা রামনাথ দনুজমর্দন দেব (চতুর্দশ শতক), ২. রাজা রমাবল্লভ (চতুর্দশ শতক), ৩. রাজা কৃষ্ণ বল্লভ (পঞ্চদশ শতক), ৪. রাজা হরিবল্লভ (পঞ্চদশ শতক), ৫. রাজা জয়দেব (পঞ্চদশ শতক), ৬. রাণী কমলা (স্বামী বলভদ্র বসু) (রাজত্বকাল ১৪৯০ - ??), ৭. রাজা পরমানন্দ বসু (ষোড়শ শতক), ৮. রাজা জগদানন্দ বসু (মৃত্যু ১৫৮৪), ৯. রাজা কন্দর্প নারায়ণ বসু (রাজত্বকাল ১৫৮৪ - ১৫৯৮), ১০. রাজা রামচন্দ্র বসু (রাজত্বকাল ১৫৯৮ - ১৬৬৮ ), ১১. কীর্তি নারায়ণ বসু রাজা, শিব নারায়ণ বসু, বাসুদেব নারায়ণ বসু (রাজত্বকাল ১৬৬৮-১৬৮৮), ১২. রাজা প্রতাপ নারায়ণ বসু (রাজত্বকাল ১৬৮৮-১৭২৩ ), ১৩. রাজা প্রেমনারায়ণ (কয়েক মাসের জন্য) ১৪. রাজা উদয়নারায়ণ মিত্র (রাজত্বকাল ১৭২৩-১৭৬৮), ১৫. রাণী দুর্গাবতী (রাজত্বকাল ১৭৬৯ - ১৭৭৭), ১৬. রাজা লক্ষ্মণনারায়ণ, রাজা জয়নারায়ণ (রাজত্বকাল ১৭৭৮-১৮১৩), ১৭. রাজা নৃসিংহ নারায়ণ (রাজত্বকাল ১৮১৩ -  ??), ১৮. রাজা দেবেন্দ্র নারায়ণ (দত্তক), রাজা নরেন্দ্র নারায়ণ (দত্তক), রাজা বীরসিংহ নারায়ণ (রাজত্বকাল ??) ১৯. উপেন্দ্র নারায়ণ, ভুপাল নারায়ণ (গোপাল রাজা) (রাজত্বকাল ??) ২০. উত্তরাধিকারী সতীন্দ্র নারায়ণ (মাখন রাজা)। (রাজত্বকাল ??)

খ) মাধবপাশা ইউনিয়নের অন্যান্য বিখ্যাত ব্যক্তিগণ ১. গুরিন্দা (পঞ্চদশ শতক) চন্দ্রদ্বীপ রাজসভার মন্ত্রী। ২. নেয়ামত খাঁ (পঞ্চদশ শতক) চন্দ্রদ্বীপের ৭ম রাজা পরমানন্দ বসুর আমলের একজন গুরুত্বপূর্ণ অমাত্য। ৩. রামমানিক মুদি (অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতক), ১৭৯৯ সালে চন্দ্রদ্বীপের জমিদারি নিলামে উঠলে তার ক্রেতা। ৪. সুলতান উদ্দিন আহমেদ (সুলতান মাস্টার) (১৯৩২ সালের ২ মার্চ - ৩ নভেম্বর ১৯৭৩), মুক্তিযুদ্ধকালে ঝালকঠির বেইজ কমান্ডার; গ্রাম: লাফাদি।


রহমতপুর ইউনিয়নের অন্যান্য বিখ্যাত ব্যক্তিগণ

১. আবদুল ওহাব খান (১৮৯৮ - ১৯৭২) পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য ও স্পিকার; গ্রাম: রহমতপুর। ২. আবদুল মজিদ খান (?? - ২০১১), মুক্তিযুদ্ধকালে বাবুগঞ্জের বেইজ কমান্ডার; গ্রাম: ক্ষুদ্রকাঠি।


বাবুগঞ্জ উপজেলার বিখ্যাত পুরাকীর্তি

১. আরজি কালিকাপুর জোড় মসজিদ। ২. কাত্যায়নী মন্দির, মাধবপাশা। ৩. দুর্গাসাগর, মাধবপাশা।


বাবুগঞ্জ উপজেলার সামন্ত পরিবার

১. মাধবপাশার রাজপরিবার। ২. রহমতপুরের দেওয়ান/ চক্রবর্তী পরিবার।


বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক ঘটনা

১. দোয়ারিকা ও জয়শ্রীর যুদ্ধ, ১৯৭১


বাবুগঞ্জ উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগণ:

১. বীরশ্রষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, পিতা আবদুল মোতালেব হাওলাদের, গ্রাম রহিমগঞ্জ, সাবসেক্টর কমান্ডার নওয়াবগঞ্জ, রাজশাহী; ১৪ ডিসেম্বর সম্মুখ যুদ্ধে নওয়াবগঞ্জে শহীদ। ২. অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, সিংহের কাটি রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যাপক; কলেজ হোস্টেল থেকে নিয়ে পাকসেনারা হত্যা করে। ৩. মুহাম্মদ সিরাজুল হক, ভুতেরদিয়া, যশোর জেলা হেলথ এডুকেশন অফিসার ছিলেন; ২৫ মার্চের পর পাকসেনারা তাকে যশোরে হত্যা করে। ৪. শাহজাহান, গ্রাম চর আলগী; বাকেরগঞ্জ থানা দখলের সময় যুদ্ধে শহীদ। ৫. পুলিশ সিপাহী হাসান রফিয়াদী, যশোর পুলিশ লাইনে নিহত। ৬. ইবিআর রাজ্জাক হাওলাদার, দেহেরগতি, কুমিল্লা সীমান্তে যুদ্ধে শহীদ। ৭. নায়েক মোসলেমউদ্দিন, বাহেরচর ক্ষুদ্রকাটি; যশোর সীমান্তে যুদ্ধে শহীদ। ৮. ইপিআর আবদুল, দেহেরগতি। ৯. নায়েক কাজী মকবুল হোসেন,পাংশা; কুমিল্লা সেনানিবাসে নিহত। ১০. ইপিআর আশ্রাব আলী মিয়া, রংপুর সেনানিবাসে নিহত। ১১. হাবিবুর রহমান, রামপট্টি। ১২. শশী কুমার শীল, রামপট্টি। ১৩. হাতেম আলী, রামপট্টি। ১৪. মুনসুর, মুশুরিয়া, চাচৈর যুদ্ধে শহীদ। ১৫. বিহারীলাল দাস, রহমতপুর। ১৬. সৈয়দ আবদুর রব, রাকুদিয়া। ১৭. মানিকলাল দত্ত, চাচৈরপাশা। ১৮. মাজেদ হাওলাদার, রাহুতকাটি। ১৯. নুরুল ইসলাম, পূর্ব রহমতপুর। ২০. সেলিম, ছাতিয়া। ২১. মৃণাল কুমার দাস, রহমতপুর। ২২. রাজ্জাক চৌধুরী, চন্ডিপুর। ২৩. মাজেদ ফকির, বকসির চর। ২৪. মজিদ চৌধুরী, বকসির চর। ২৫. মহম্মদ রাঢ়ি, দেহেরগতি । ২৬. শচীন্দ্র লাল পাল, দেহেরগতি। ২৭. মোসলেম বেপারী, ছাতিয়া। ২৮. হাবিলদার আবু হোসেন, মহিষাদি; ৩ ডিসেম্বর, দোয়ারিকা যুদ্ধে শহীদ। ২৯. রশিদ, রাকুদিয়া, দোয়ারিকা যুদ্ধে শহীদ। ৩০. রতন সিকদার, ক্ষুদ্রকাটি। ৩১. আবদুল করিম, লোহালিয়া। ৩২. আবদুল ওহাব হাওলাদার, চন্ডিপুর, ৪ আশ্বিন। ৩৩. আবদুল করিম কারিকার, কালিকাপুর। ৩৪. সেরাজউদ্দিন হাওলাদার, কালিকাপুর। ৩৫. মোবারক রাঢ়ি, কালিকাপুর। ৩৬. ফজলে আলী নলী, রাজাগুরু।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০। ২। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ৩। রুসেলি রহমান চৌধুরী, বরিশালের প্রয়াত গুণীজন। ৪। বাংলাপিডিয়া।