বাঙ্গালাবাদ/ বাঙ্গালা

Barisalpedia থেকে

বাঙ্গালাবাদ/ বাঙ্গালা নামটি দক্ষিণবঙ্গের তথা বরিশালের ইতিহাসে বার বার উচ্চারিত একটি স্থান নাম। অবশ্য ঐতিহাসিকগণের ব্যাপক উচ্চারিত এ স্থান নামটির অবস্থান ও সীমানা চিহ্নিত করা কঠিন।


প্রাথমিক পরিচয়

১৩ শতকে কোটালীপাড়ার মদনপুরে প্রাপ্ত বিশ্বরূপ সেনের তা¤্রলিপিতে বাঙ্গালাবাদের উল্লেখ আছে। বাঙ জাতি চন্দ্রদ্বীপ আবাদ করে। তাদের নামানুসারে এ অঞ্চলের নামকরন করা হয় বাঙ্গালাবাদ। বাঙ্গালাবাদ ঐতিহাসিক রামসিদ্ধি ও কসবার নিকটবর্তী গ্রাম। বাঙ্গালাবাদ বর্তমানে বাঙ্গোলা নামে পরিচিত। পাল-সেন আমলে বাংলাবাদে উন্নত বৌদ্ধ সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। সমগ্র চন্দ্রদ্বীপ ও ফরিদপুরের দক্ষিণ অঞ্চলে বাঙ্গালাবাদের অন্তর্গত ছিল। চন্দ্রহার, মাহিলারা, বাটাজোর, গৈলা, ফুল্লশ্রী, বার্থী, কসবা, নলচিড়া প্রভৃতি নিয়ে বাঙ্গালা শহর গড়ে ওঠে। কসবা বাঙ্গালারই আরেক নাম হতে পারে। কসবা ফার্সী শব্দ। কসবার অর্থ শহর।


মুসলমান আমলে বাঙ্গালাবাদ

বৌদ্ধ সভ্যতা বিলুপ্ত হওয়ার পর ১৩ ও ১৪ শতকে সেন রাজকুমাররা এ অঞ্চল শাসন করেন। ১৪ এবং ১৫ শতকে বাঙ্গালাবাদে মুসলমানরা আগমন করেন। ১৫ শতকের মধ্যভাগে হজরত খানজাহান আলী এ অঞ্চলে আগমন করেছেন বলে মনে হয়। তার শিষ্যগণ এ অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন। খুব সম্ভব এ সময় কসবার পত্তন হয় অর্থাৎ বাঙ্গালা ফার্সী শব্দে কসবায় রূপান্তরিত হয়। কসবার ইতিহাস আজ লুপ্ত। কসবা ও পার্শ্ববর্তী গ্রামে প্রাচীন কীর্তিও ধ্বংসাবশেষ দেখে মনে হয় সুলতানী আমলে এটা একটি উন্নত জনপদ ও বন্দর ছিল। আরব-পারস্য থেকে সূফী-দরবেশ ও বণিকগন এখানে আগমন করেন। হয়তো কসবা ও বাঙ্গালা দুটি নামেই এতদঞ্চল তখন পরিচিত ছিল। ১৬ শতকের প্রথমার্ধে বিদেশী বণিকগণ যে বাঙ্গালা বন্দরের কথা বলেছেন, সে বন্দর কসবাও হতে পারে। চন্দ্রদ্বীপের রাজধানী বাকলাও সে বন্দর হতে পারে।

তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (প্রথম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।