"বরিশাল সদর হাসপাতাল"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
(" চিত্র:বরিশাল_সদর_হাসপাতাল.jpg ১৮৪৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত ব..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
 
[[চিত্র:বরিশাল_সদর_হাসপাতাল.jpg]]
 
[[চিত্র:বরিশাল_সদর_হাসপাতাল.jpg]]
  
১৮৪৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত বরিশালে আধুনিক চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। চাদসীর ক্ষত চিকিৎসা ও বালাবাড়ির চিকিৎসাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে এতদঞ্চলের অবলম্বন ছিল। ১৮৪৭ সালে বরিশালে একটি চ্যারিটেবল ডিসপেনসারী প্রতিষ্ঠিত হয়। একজন সাব এ্যাসিস্টান্ট সার্জন এর পরিচালক ছিলেন। এই চ্যারিটেবল ডিসপেনসারি পরবর্তীতে বরিশাল সদর হাসপাতালে রূপ লাভ করে। সদর হাসপাতাল ভবন নির্মিত হয় ১৯১০ সালে । পরবর্তীতে বর্ধমান ও বরিশাল হাসপাতাল অবিভক্ত বাংলায় উন্নত ছিল। হাসপাতাল ভবন নির্মাণে অনেকে চাঁদা ও জমি দিয়েছেন। পূর্ববঙ্গের লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার ল্যান্সলট হেয়ার ১৯১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভবনের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল ১৯১২ সালের ১৩ জুলাই হসপিটাল উদ্বোধন করেন। ১৯২৫ সালে বানারীপাড়ার বাইশারির ইন্দ্রনাথ দত্ত তার মা’র নামে গোলকমণি মহিলা ওয়ার্ড, কালীচন্দ্র ১৯৩৮ সালে শশীমুখী অপারেশন থিয়েটার, ১৯৩৮ সালে ব্যারিস্টার নলিনীগুপ্ত ও তার ভাই বিনয়গুপ্ত তাদের পিতা ও মাতার নামে জগচন্দ্র ও মুক্তাকেশীর নামে দু’টি পেয়িং ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। রাজাপুরের সাতুরিয়ার জমিদার মেহেরুন্নেছা ভবনের জন্য জমি প্রদান করেছিলেন। ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত একটি কমিটি হাসপাতাল পরিচালনা করত। ১৯৪৪ সালে কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার হাসপাতালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করে।
+
 
 +
১৮৪৭ সালে বরিশালে একটি চ্যারিটেবল ডিসপেনসারী প্রতিষ্ঠিত হয়। একজন সাব এ্যাসিস্টান্ট সার্জন এর পরিচালক ছিলেন। বরিশালের সদর হাসপাতালের পূর্বে এটিই ছিল বরিশালের একমাত্র চিকিৎসালয়। বরিশালের সদর হাসপাতাল ভবন ১৯১০ সালে নির্মিত হয়। পূর্ববঙ্গের লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার ল্যান্সলট হেয়ার ১৯১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভবনের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল ১৯১২ সালের ১৩ জুলাই হাসপাতাল ভবন উদ্বোধন করেন।  
 +
 
 +
ভবর নির্মাণের জন্য যারা চাঁদা দিয়েছেন তারা হলেন- নলিনী গুপ্ত এসআইই ৮৫০০০ টাকা, বরিশাল জেলা বোর্ড ৮২০০০ টাকা, বঙ্গীয় সরকার ৬১৩৪৯ টাকা, রাজা প্রফুল্লনাথ ঠাকুর ১৪০০ টাকা, নবাব আহসান উল্লাহ ১২০০০ টাকা, রায় চরণ সাহা ৯৬২৫ টাকা, বরিশাল পৌরসভা ৮২০০০ টাকা, রাজেশ্বর রায় চৌধুরী ৬০০০ টাকা, বরিশাল ঘোড় দৌড় কমিটি ৩০৭১ টাকা, ইন্ডিয়া রেডক্রস সোসাইটি ২১৮৯ টাকা, হাজী ইসমাইল চৌধুরী ১৫০০ টাকা, আর জে. জে.  ব্রাউন ১০০০ টাকা, এবং বরিশাল বার ৫০০ টাকা। রাজাপুরের সাতুরিয়ার জমিদার মেহেরুন্নেছা ভবনের জন্য জমি প্রদান করেছিলেন।
 +
 
 +
১৯৪৩ সাল পর্যন্ত একটি কমিটি হাসপাতাল পরিচালনা করত। ১৯৪৪ সালে কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার হাসপাতালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করে। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় জনস্বাস্থ্য সচিব মিঃ হ্যালন সদর ও সাব-ডিভিশনাল হাসপাতালগুলোকে তৃতীয় শ্রেণীভুক্ত করে এবং এ সময় সরকার বরিশাল সদর হসপিটালের দায়িত্ব গ্রহণ করে। হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি ছিল। সিদ্ধান্ত হয় সরকার হসপিটালের সম্পদ হস্তান্তর করতে পারবে না। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ ম্যানেজিং কমিটি প্রাদেশিক সরকারকে হসপিটালের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে। জেলা বোর্ড ও পৌরসভা হসপিটালে অনুদান প্রদান করবে। এমপি বর্মণ এ সময় হাসপাতাল কমিটির সেক্রেটারি নিযুক্ত হন। বরিশাল হাসপাতাল উন্নায়নের জন্য স্থানীয় সমাজসেবীরা এগিয়ে আসেন। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে বাইসারীর ইন্দ্রনাথ দত্ত তার মা গোলকমনির নামে লেবার ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ঈশ্বরচন্দ্র সেন আলোকমনি মহিলা ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠা করেন। কালী চন্দ্র ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে শশীমুখী অপারেশন থিয়েটার নির্মাণ করেন। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ দস্তিদার কলেরা ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। জমিদার বিনয় গুপ্ত ও ব্যারিষ্টার নলিনী গুপ্ত ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তাদের পিতা জগচ্চন্দ্র ও মাতা মুক্তাকেশীর সামে দু’টি পেয়িং ওয়ার্ড নির্মাণ করেন।
 +
জেলা হাসপাতালগুলোর বরিশালের ও বর্ধমান জেলার হাসপাতাল একসময় সারা বাংলায় বিখ্যাত ছিল।
 +
 
 +
 
 +
----
 +
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।

০৫:২৭, ২৪ জুলাই ২০২০ তারিখের সংস্করণ

বরিশাল সদর হাসপাতাল.jpg


১৮৪৭ সালে বরিশালে একটি চ্যারিটেবল ডিসপেনসারী প্রতিষ্ঠিত হয়। একজন সাব এ্যাসিস্টান্ট সার্জন এর পরিচালক ছিলেন। বরিশালের সদর হাসপাতালের পূর্বে এটিই ছিল বরিশালের একমাত্র চিকিৎসালয়। বরিশালের সদর হাসপাতাল ভবন ১৯১০ সালে নির্মিত হয়। পূর্ববঙ্গের লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার ল্যান্সলট হেয়ার ১৯১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভবনের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল ১৯১২ সালের ১৩ জুলাই হাসপাতাল ভবন উদ্বোধন করেন।

ভবর নির্মাণের জন্য যারা চাঁদা দিয়েছেন তারা হলেন- নলিনী গুপ্ত এসআইই ৮৫০০০ টাকা, বরিশাল জেলা বোর্ড ৮২০০০ টাকা, বঙ্গীয় সরকার ৬১৩৪৯ টাকা, রাজা প্রফুল্লনাথ ঠাকুর ১৪০০ টাকা, নবাব আহসান উল্লাহ ১২০০০ টাকা, রায় চরণ সাহা ৯৬২৫ টাকা, বরিশাল পৌরসভা ৮২০০০ টাকা, রাজেশ্বর রায় চৌধুরী ৬০০০ টাকা, বরিশাল ঘোড় দৌড় কমিটি ৩০৭১ টাকা, ইন্ডিয়া রেডক্রস সোসাইটি ২১৮৯ টাকা, হাজী ইসমাইল চৌধুরী ১৫০০ টাকা, আর জে. জে. ব্রাউন ১০০০ টাকা, এবং বরিশাল বার ৫০০ টাকা। রাজাপুরের সাতুরিয়ার জমিদার মেহেরুন্নেছা ভবনের জন্য জমি প্রদান করেছিলেন।

১৯৪৩ সাল পর্যন্ত একটি কমিটি হাসপাতাল পরিচালনা করত। ১৯৪৪ সালে কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার হাসপাতালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করে। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় জনস্বাস্থ্য সচিব মিঃ হ্যালন সদর ও সাব-ডিভিশনাল হাসপাতালগুলোকে তৃতীয় শ্রেণীভুক্ত করে এবং এ সময় সরকার বরিশাল সদর হসপিটালের দায়িত্ব গ্রহণ করে। হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি ছিল। সিদ্ধান্ত হয় সরকার হসপিটালের সম্পদ হস্তান্তর করতে পারবে না। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ ম্যানেজিং কমিটি প্রাদেশিক সরকারকে হসপিটালের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে। জেলা বোর্ড ও পৌরসভা হসপিটালে অনুদান প্রদান করবে। এমপি বর্মণ এ সময় হাসপাতাল কমিটির সেক্রেটারি নিযুক্ত হন। বরিশাল হাসপাতাল উন্নায়নের জন্য স্থানীয় সমাজসেবীরা এগিয়ে আসেন। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে বাইসারীর ইন্দ্রনাথ দত্ত তার মা গোলকমনির নামে লেবার ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ঈশ্বরচন্দ্র সেন আলোকমনি মহিলা ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠা করেন। কালী চন্দ্র ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে শশীমুখী অপারেশন থিয়েটার নির্মাণ করেন। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ দস্তিদার কলেরা ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। জমিদার বিনয় গুপ্ত ও ব্যারিষ্টার নলিনী গুপ্ত ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তাদের পিতা জগচ্চন্দ্র ও মাতা মুক্তাকেশীর সামে দু’টি পেয়িং ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। জেলা হাসপাতালগুলোর বরিশালের ও বর্ধমান জেলার হাসপাতাল একসময় সারা বাংলায় বিখ্যাত ছিল।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।