বরিশাল পার্টি

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১০:২৩, ১১ জুলাই ২০২০ পর্যন্ত সংস্করণে ("ইতালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ম্যাজিনি ও গ্যারিবলডির..." দিয়ে পাতা তৈরি)

(পরিবর্তন) ←পুর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ→ (পরিবর্তন)

ইতালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ম্যাজিনি ও গ্যারিবলডির পরিচালিত গারবোলারি সোসাইটি নামক গুপ্ত সমিতির আদর্শে যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ উত্তর কলকাতায় আখড়া আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে একটি শরাীরচর্চা কেন্দ্র স্থাপন করেন। ১৯০৩ খৃৃস্টাব্দে প্রমথনাথ মিত্র ব্যারিষ্টার কলকাতায় আর একটি শরীরচর্চা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। আখড়ায় শরীর চর্চার নামে বিপ্লবীদের যুদ্ধবিদ্যা শিক্ষা দেয়া হতো। বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়ের অনুশীলন আদর্শে দলের নাম রাখা হয় অনুশীলন সমিতি। ১৯০৬ খৃৃস্টাব্দে অরবিন্দ ঘোষের ভাই বারীন ঘোষ ও পিএন মিত্র আলাদা হয়ে যান। বারীন ঘোষের দল যুগান্তর অফিসে বসে নীতি নির্ধারণ করতেন বলে দলের নাম হয় ‘যুগান্তর দল’। বরিশালে ‘অনুশীলন’ ও ‘যুগান্তর’ উভয় দলের শাখা ছিল। বরিশালের যুগান্তর দল বরিশাল পার্টি নামে পরিচিত ছিল। বরিশাল পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিএম স্কুলের শিক্ষক সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায় বা স্বামী প্রঞ্জানানন্দ।


পার্টির গঠন

১৯০৬ খৃৃস্টাব্দে বরিশালের প্রাদেশিক সম্মেলনের সময় বারীন্দ্র ঘোষ সতীশ মুখোপাধ্যায়কে একটি রিভলবার দিয়ে গুপ্ত সমিতি গঠন করেন। তিনি বি এম স্কুলের ছাত্র নোয়াখালী নিবাসী নরেন্দ্র মোহন ঘোষ চৌধুরীকে নিয়ে গুপ্ত সমিতি গঠন করতে শুরু করেন। ১৯০৮ খৃৃস্টাব্দে পর্যন্ত এ দল বরিশাল পার্টি বলে পরিচিত ছিল। বরিশাল পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিএম স্কুলের শিক্ষক সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায় বা স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ। ১৯০৮ খৃৃস্টাব্দে নরেন্দ্র মোহন ঘোষ বরিশাল আগমন করে এবং সতীশ চন্দ্রের সাথে বরিশাল পার্টি গঠনে কাজ করে। প্রথম স্বদেশ বান্ধব সমিতিতে দলের কাজ শুরু হয়। এ দলের মাধ্যমে ১৯০৮ খৃৃস্টাব্দে বরিশাল শহরে বিপ্লবী আন্দোলনের গোড়া পত্তন হয় এবং ১৯২০ খৃৃস্টাব্দ পর্যন্ত এ দল বরিশাল পার্টি বলে পরিচিত ছিল। সরকারী নির্যাতন শুরু হলে ১৯১৩ খৃৃস্টাব্দে বরিশাল দলের প্রধান কেন্দ্র কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়। যতীন মুখার্জীর (বাঘা যতীন) দলের সাথে বরিশাল দলের মিলনের ফলে একটি শক্তিশালী বিপ্লবী দলে পরিণত হয়। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের পর মিলিত দলের নাম যুগান্তর দল হয়।


পার্টির কার্যক্রম

বরিশাল দল ১৯০৮ খৃৃস্টাব্দে শহরের নায়ার সাহেবের বাড়ি হতে বন্দুক চুরি, দেহেরগতি ডাকাতি, ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ মোহনগঞ্জে ডাকাতি, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ২১ এপ্রিল ল²ণকাঠি ডাকাতি, ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জুলাই প্রতাপপুর ডাকাতি, ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ জুন গাজীপুর ডাকাতির অভিযান চালায়। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর বরিশাল দল নদিয়া জেলার শিবপুর ডাকাতি করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোহন চৌধুরী, হীরা লাল দাশগুপ্ত, সতীন সেন প্রমুখ ধরা পড়ে। বিচারে নরেন্দ্র মোহনের দ্বীপান্তর এবং অনেকের জেল হয়। নরেন্দ্র মোহন চৌধুরীর গ্রেফতারের পর মনোরঞ্জন গুপ্ত দলের ভার গ্রহণ করেন। ১৯২০ খৃৃস্টাব্দে স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ, মনোরঞ্জন গুপ্ত, হীরালাল দাশগুপ্ত প্রমুখ মুক্তি লাভ করে। তারপর তারা গান্ধীর আহবানে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দয়ে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ আগষ্ট কলকাতায় পুলিশ কমিশনার টেগার্ট সাহেবের ওপর যে বোমা নিক্ষেপ করা হয় তাতে বরিশালের অরুণ চন্দ্র গুহ, মনোরঞ্জন গুপ্ত ও ভুপেন্দ্র কুমার দত্ত সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯৩০ খৃৃস্টাব্দে বরিশাল অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পরিকল্পনা ছিল। বরিশাল পার্টিকে সরকার ১৯০৮ খৃৃস্টাব্দে বেআইনী ঘোষণা করে।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।