পথিক

Barisalpedia থেকে
Spadmin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১১:২৫, ১৭ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত সংস্করণে ("১৯২৫ সালে (বৈশাখ, ১৩৩২) প্রকাশিত মাসিক ‘পথিক’ পত্রিকাটি ব..." দিয়ে পাতা তৈরি)

(পরিবর্তন) ←পুর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ→ (পরিবর্তন)

১৯২৫ সালে (বৈশাখ, ১৩৩২) প্রকাশিত মাসিক ‘পথিক’ পত্রিকাটি বাকেরগঞ্জ থানাধীন খয়রাবাদ নিবাসী কবি অতীন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সম্পাদনায় বরিশাল থেকে প্রকাশিত হয়। বরিশালের বাসন্তী প্রেস থেকে পত্রিকাটি শ্রী নীলবরণ সরকার কর্তৃক মুদ্রিত হতো। পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে’- গানের এই লাইনটি প্রতিসংখ্যায় ছাপা হতো। পত্রিকাটির প্রায় প্রতিটি সংখ্যায়ই লেখকের নামহীন একটি করে কবিতা ছাপা হতো। ধারণা করা যায় কবিতাগুলো পত্রিকা সম্পাদক ও কবি অতীন্দ্রনাথেরই লেখা। এছাড়া প্রতিসংখ্যায় দক্ষিণবঙ্গের একজন করে কৃতী পুরুষের ছবিসহ সংক্ষিপ্ত জীবনী ছাপা হতো। মাসিক ‘পথিক’- এর ১ম বর্ষ, ১ম সংখ্যায় ‘পরিচালকের আশা’ শীর্ষক কলামে পত্রিকাটির চারিত্রধর্ম প্রকাশ পেয়েছে।

‘শহরে বসিয়া অনেকেই পল্লীসংস্কারের কথা বলেন কিন্তু পৈত্রিক দেহ এবং স্বোপার্জিত অর্থ ও মূল্যবান সময় ব্যয় করিয়া কেহই পল্লী জননীর দুঃখ মোচনে অগ্রসর হইতে চাহেন না। সুতরাং পল্লীবাসীগণকেই পল্লী সংস্কারের ভার গ্রহণ করিতে হইবে। আমরা এই কার্য্যে আংশিকভাবে সাহায্য করিতে পারিব বিবেচনায় ‘পথিক’ প্রচারে ব্রতী হইয়াছি। শুধু শহর বাসীর মুখের দিকে চাহিয়া না থাকিয়া পল্লীবাসী আপন চেষ্টায় কতখানি করিতে পারে, ইহা দেখিবারও ইচ্ছা আমাদের আছে। পূজ্যপাদ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের স্মৃতি সভায় প্রসিদ্ধ নাট্যকার শ্রীযুক্ত অমৃতলাল বসু মহাশয় বলিয়াছিলেন যে, ‘অশক্ত মূর্খ পুত্রই পৈত্রিক ভিটিতে বাতি জ¦ালাইবার জন্য গ্রামে থাকে, পৈত্রিক সম্পত্তির মালিক সব ভাই, কিন্তু শ্রাদ্ধ, তর্পণ ও ঋণ শোধের একমাত্র উত্তরাধিকারী গ্রাম্য দরিদ্র সন্তান।’ এই হিসাবেও আমাদের দায়িত্ব কম নহে। আমরা মায়ের অকৃতী সন্তান, তাঁহার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন মানসে, এই তুচ্ছ অর্ঘ্য লইয়া উপস্থিত হইলাম। মা সন্তানের সামান্যার্ঘ্য গ্রহণ করিলে কৃতার্থ হইব।’

পত্রিকাটির ছাপা ছিল সুন্দর । বিভিন্ন ধরনের টাইপ এতে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন প্রথম দিকের সংখ্যা গুলো ১২ পয়েন্ট, পরবর্তী সংখ্যাগুলো সাড়ে ১০ পয়েন্ট। হেডিং টাইপ কোথাও ১৮ পয়েন্টে। লেখকের নাম থাকত হেডিং-এর নিচেই। পৃষ্ঠা সংখ্যা ধারাবাহিক। এ পত্রিকাটিতে স্থানীয় লেখকদের লেখাকেই সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়া হতো। উল্লেখযোগ্য লেখকদের মধ্যে ছিলেন চারণকবি মুকুন্দ দাস, দুর্গামোহন সেন, সুরেশচন্দ্র গুপ্ত, অনাথবন্ধু সেন, নিবারণচন্দ্র দাশগুপ্ত, শরৎকুমার ঘোষ, চুনীলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, মুকুন্দনাথ ঘোষ, সতীশচন্দ্র দাশগুপপ্ত, সরযূ বালা সেনগুপ্তা, ডাঃ সাইদ উদ্দীন আহমেদ সিদ্দিকী, নরেন্দ্রনাথ দাশ গুপ্ত, নীলকান্ত চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিষ চন্দ্র চক্রবর্তী প্রমুখ।


তথ্যসূত্র: তপংকর চক্রবর্তী। বরিশালের সংবাদ ও সাময়িকপত্র। বাংলা একাডেমি। ২০০১।