নরেন সেন

Barisalpedia থেকে

স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী নরেন সেনের (৩১.৮.১৯০৯ - ১২.৮.২০০০) বাড়ি বরিশালের নারায়ণকাছি গ্রামে মর্মে সংসদ বাঙালি চরিতাভিধানে উল্লিখিত আছে, তবে নারায়ণকাছি নামে কোনো গ্রামের নাম বর্তমান বরিশালে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

স্কুলে পড়ার সময়ই অনুশীলন সমিতির বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটে। নারায়ণকাছির নিকটস্থ ফিরোজপুর স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বরিশালের বি.এম. কলেজে ভর্তি হন। ১৯২৭ থেকে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বরিশালের অনুশীলন সমিতির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কলেজে পড়াকালীন সময়েই ধামুরখাল অস্ত্র অনুসন্ধান মামলায় তাঁকে ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও প্রমাণাভাবে তিনি ছাড়া পান। কিন্তু বরিশাল জেল থেকে ছাড়া পাওয়ামাত্র বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টে তিনি ধৃত হন। মামলায় তাঁর সাত বছর জেল হয়। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রথমে মেদিনীপুর জেল ও পরে আলিপুর জেলে আটক থাকেন। জেলে থাকাকালীন সময়ে তিনি মার্কসবাদের দিকে আকৃষ্ট হন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করে ট্রাম শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজে নিযুক্ত হন। কমিউনিস্ট পার্টি তখন বেআইনি ছিল। তাই আত্মগোপন করে তাঁকে কাজ করতে হত। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে পার্টি আইনি ঘোষিত হবার পর প্রকাশ্যে ট্রাম শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে আসেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে পার্টি আবার বেআইনি হলে আত্মগোপন করে তিনি সংগঠনের কাজ করে যান। বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানার শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কলকাতা জেলার পার্টি গড়ার কাজে তিনি কেন্দ্রীয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে পার্টি বিভাজন হলে তিনি সি.পি.আই. (এম.)- এর সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৯ এবং ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি কিছু সময়ের জন্য পার্টির কলকাতা জেলা সম্পাদক হয়েছিলেন। পরে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু এই পদের দায়িত্বে থেকেছেন।



তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।