নরনারায়ণ রায়

Barisalpedia থেকে

নরনারায়ণ রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন লেখক অত্যন্ত গুণী লেখক। তাঁর জন্মস্থান পিরোজপুরের রায়েরকাঠি গ্রাম।

তিনিই বরিশালের সর্ব প্রথম গদ্যলেখক মর্মে রোহিনীকুমার সেন দাবী করেছেন। কিন্তু নরনারায়ণ কত সালে তাঁর গ্রন্থ প্রকাশ করেন, তা বলেননি। তবে ড. সৈকত আসগর প্রমাণ করেছেন যে বরিশালের প্রথম গদ্য লেখক আয়েন আলী শিকদার, নরনারায়ণ নন। রোহিনীকুমার সেন লিখেছেন, ‘রায়েরকাঠীতে নরনারায়ণ রায়ই সর্বপ্রথম গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তিনি কাব্যনাটক, প্রহসন প্রভৃতি অনেকগুলি গ্রন্থ প্রণয়ন করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু অর্থ কৃচ্ছতাবশতঃ সকল গ্রন্থ অদ্যপি [১৯১৫-র পূর্বে] প্রকাশিত হয় নাই। তাঁহার গ্রন্থাবলীর মধ্যে ‘চারুপ্রবন্ধ’, ‘কর্তব্যোপদেশ’, ‘গোপাঙ্গনা কাব্য’, ‘সুনীতি নাটক’, ‘শ্রীবৎস চরিত’ প্রভৃতি প্রকাশিত হইয়াছে ; এতদ্ভিন্ন আরও প্রায় দ্বাদশখানি গ্রন্থ পান্ডুলিপি অবস্থায় রহিয়াছে। তাঁহার দর্শন শাস্ত্রেও রীতিমত ব্যুৎপত্তি ছিল ; তদীয় অপ্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘শক্তিবাদ’, অদ্বৈতবাদ’, ‘ভক্তিবাদ’ প্রভৃতি তাহার পরিচায়ক।’ রোহিনীকুমার সেন অন্যত্র বলেছেন যে, বাকেরগঞ্জ জেলায় সর্ব প্রথম প্রতিষ্ঠিত মুদ্রণযন্ত্র থেকে ‘পরিমল বাহিনী’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিলো। ‘পরিমল বাহিনী’র প্রকাশকাল ১৮৭২। তাহলে অনুমান করা চলে নরনারায়ণের গ্রন্থ ১৮৭২ সালের পরে প্রকাশিত হয়েছিলো। রোহিনী কুমার সেন লিখেছেন, ‘শিক্ষিত গ্রন্থকার নরনারায়ণের পতœী বসন্তকুমারী অতীব বিদূষী রমণী ছিলেন। তাঁহারও কবিত্বশক্তি প্রখর ছিল। ‘কবিতা মঞ্জরী’, রোগাতুরা ‘বসন্তকুমারী’,‘বাসন্তিকা’, ‘বালিকা বিনোদ’, ‘যোষিদ্বিজ্ঞান’ প্রভৃতি তাঁহার কবিত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলি বঙ্গভাষার উপাদেয় সামগ্রী ছিল। তাঁহার কন্যা কুসুমকুমারীও বিদ্বান ও বিদূষী পিতামাতার উপযুক্ত শিক্ষায় একজন বিদূষী রমণী হইয়াছিলেন। তিনিও জননীর মতে ‘কুসুমিকা’ নামে একখানি কাব্য রচনা করেছিলেন।’


তথ্যসূত্র: বাকেরগঞ্জ জেলার ইতিহাস (সাইফ উদ্দিন সম্পাদিত)