দোয়ারিকা ও জয়শ্রীর যুদ্ধ, বরিশাল, ১৯৭১

Barisalpedia থেকে

ঢাকা-বরিশালের পথে শিকারপুর খেয়ার গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। খেয়াপথ বন্ধ করতে পারলে পাক-বাহিনীর ঢাকার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই উজিরপুর ও বাবুগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা বার বার শিকারপুরও দোয়ারিকায় অবস্থনরত পাকসেনাদের আক্রমণ করে। জুন মাস হতে আগস্ট পর্যন্ত আবুল কাসেম, মজিদ খাঁ, রত্তন শরীফ, এম এ অদুদ, মজিদ খাঁ প্রমুখের নেতৃত্বে কয়েকবার আক্রমণ রচিত হয় এবং ফেরি ডুবিয়ে দেয়া হয়। ৩ ডিসেম্বর সকার ৯টায় করপোরাল রত্তন শরীফ দোয়ারিকা আক্রমণ করেন এবং দুপুর ১টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা এ সংঘর্ষে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নায়েক আবদুর রব, হাবিলদার আবুল হোসেন, রসিদ, রাজ্জাক, সিপাহী ওহাব প্রমুখ। এ যুদ্ধে হাবিলদার আবুল হোসেন ও রাকুদিয়া কলেজের ছাত্র রশীদ শহীদ হন। যুদ্ধে কৃতিত্বের জন্য রত্তন শরীফ বীরপ্রতীক উপাধি লাভ করেন এবং স্বাধীনতার পর ফ্লাইট সার্জেন্ট পদে উন্নীত হন। চাখার কলেজের ভিপি হাবিবুর রহমান প্রথমে উজিরপুর থানা কমান্ডার ছিলেন। পরে এম এ অদুদ থানার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অদুদের নেতৃত্বে শিকারপুর ফেরি ডুবিয়ে দেয়া হয়। তারপর তিনি উজিরপুর থানা আক্রমণ করে অস্ত্র নিয়ে নেন। জয়শ্রীর পুলটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং সে কারণে পাক-বাহিনী পুলটি পাহারা দিত। ক্যাপ্টেন কাহারের নেতৃত্বে ২৮ নভেম্বর গৌরনদী হতে পাক সেনারা জিপে আটিপাড়া অপারেশনে যায়। তারা জিপগুলো জয়শ্রীর পুলের নিকট রেখে যায়। ফেরার পথে অদুদ, রত্তন শরীফ, নুরু, শাহজাহান, আবদুর রব, মতিন, মোতালেব, আউয়াল প্রমুুখ মুক্তিযোদ্ধা পাক সেনাদের আক্রমণ করেন। যুদ্ধে জিপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেকে নিহত হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান শহীদ হন। আবদুল অদুদ সর্দার ও নুরু কমান্ডার বাটাজোর আক্রমণ করে পশ্চিমা পুলিশ ও রাজাকাদের নিকট হতে অস্ত্র উদ্ধার করেন। আগরপুর, বামরাইল, হাবিবপুর ও কালিজিরায় মুক্তিযোদ্ধদের ক্যাম্প ছিল।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫